অবশেষে সরানো হলো বিএমডিএর ইডি রশীদকে
স্টাফ রিপোর্টার: বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) বহুল আলোচিত ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক (ইডি) আব্দুর রশীদকে অবশেষে পদ থেকে সরানো হয়েছে। পিডি নিয়োগে সুপারিশ, প্রকৌশলী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে অর্থগ্রহণ এবং বিভিন্ন কাজে কমিশন নেওয়াসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে আব্দুর রশীদকে সরিয়ে জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) শফিকুল ইসলাম মুকুলকে বিএমডিএ’র ইডি হিসাবে পদায়ন করা হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নতুন ইডি যোগদান করেননি। আব্দুর রশীদ এখনও ইডি পদে থাকতে নানাভাবে তদবির করে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
বিএমডিএর কর্মকর্তারা জানান, ২০২০ সালে ইডি আব্দুর রশীদের নামে দুদক একটি মামলা করে। এ সময় ইডি ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবও তলব করা হয়েছিল। পরে মামলাটি ধামাচাপা দেওয়া হয়। সম্প্রতি বিএমডিএর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রশীদের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদক রাজশাহী কার্যালয়ে অভিযোগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা ইডি আব্দুর রশীদের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের কপিটি ঢাকায় প্রধান কার্যালয়ে পাঠাতে হয়। প্রধান কার্যালয় অনুসন্ধানের অনুমোদন দিলে সে অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু করা হবে।
আগের মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেই মামলার বিষয়ে আগের কর্মকর্তারা বলতে পারবেন। আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।
বিএমডিএ সূত্র জানায়, গভীর নলকূপের অপারেটর নিয়োগ, বদলি ও কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ছাড়া অন্য কোনো কাজের ফাইল বিএমডিএর চেয়ারম্যানের কাছে যায় না। সব কাজই করে থাকেন ইডি। বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) নিয়োগের সুপারিশ মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে প্রকৌশলীদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন ইডি আব্দুর রশীদ। ঠিকাদারদের কাজ দিয়ে ১০ শতাংশ অর্থ নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
দুদকে দেওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, ৩ বছর ধরে ইডি তার আত্মীয়সহ কয়েকজন পছন্দের লোকের কাছ থেকে কোটেশনে নিম্নমানের মালামাল কিনেছেন। কখনও কখনও কাগজে-কলমে কেনাকাটা দেখিয়ে টাকা তুলে নিয়েছেন। প্রকৌশলীর পদোন্নতির ক্ষেত্রে দেড় থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত এবং কর্মচারীদের পদোন্নতির জন্য ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুস নিয়েছেন। ইডি রশীদের পক্ষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে ঘুস আদায়ের কাজটি করেছেন সহকারী প্রকৌশলী থেকে চলতি দায়িত্বে নির্বাহী প্রকৌশলী হওয়া সানজিদা খানম মলি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইডি আব্দুর রশীদ যুগান্তরকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে বদনাম ছড়ানো হচ্ছে। যারা বদনাম ছড়াচ্ছেন, তারাই দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমি কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নই। এমনকি পিডি নিয়োগে সুপারিশ এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে ঘুস নেওয়ার যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেটিও ভিত্তিহীন।
ইডির পক্ষে পদোন্নতির জন্য ঘুসের টাকা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে চলতি দায়িত্বে থাকা নির্বাহী প্রকৌশলী সানজিদা খানম মলি বলেন, এগুলো সত্য নয়। আমার বিরুদ্ধে কারও কাছে প্রমাণ থাকলে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করতে পারেন।
সোনালী/সা