ঢাকা | জুলাই ২, ২০২৪ - ৫:২০ অপরাহ্ন

সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা

  • আপডেট: Sunday, June 30, 2024 - 7:20 pm

অনলাইন ডেস্ক: নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে সোমবার (১ জুলাই) থেকে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন (বাবিশিসফে)। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করবেন শিক্ষকরা। শিক্ষকদের কর্মবিরতির ফলে কোনো ক্লাস ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না।


বিবৃতিতে বলা হয়, পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন তিন মাসেরও অধিক সময় ধরে বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছে। গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে বিবৃতি প্রদান, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, মানববন্ধন, প্রতীকী কর্মবিরতি, স্মারকলিপি প্রদান এবং অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময়ে সরকারের তরফ থেকে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় গত ২৫, ২৬ ও ২৭ জুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালিত হয় এবং আজ ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে।

শিক্ষকরা বলছেন, প্রস্তাবিত ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাস্তবায়ন করা হলে বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী যারা আগামী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় আসতে আগ্রহী, তারাও এর ভুক্তভোগী হবেন। কাজেই আমাদের এ আন্দোলন আগামী দিনের তরুণ সমাজের স্বার্থরক্ষার পক্ষে এবং উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে। সরকার দাবি মেনে নিলে শিক্ষকরা আবারও ক্লাসে ফিরে যাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
এদিকে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহারের দাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলন কর্মসূচি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। বৈষম্যমূলক প্রত্যয় স্কিম থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার, শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন, প্রতিশ্রুত সুপারগ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মবিরতি পালন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদার যৌথ স্বাক্ষর করা অন্য এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ঘোষিত এ সর্বাত্মক আন্দোলনে আপনারা সবাই আমাদের সারথি। আপনাদের বিপুল সমর্থন ও ম্যানডেট নিয়ে শিক্ষক সমিতি এ সর্বাত্মক আন্দোলনের রূপরেখা প্রণয়ন করেছে। আমাদের এ আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে আন্দোলন। বৈষম্যমূলক ও মর্যাদাহানিকর প্রত্যয় স্কিম থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার, শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন এবং প্রতিশ্রুত সুপারগ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করা হবে।

বিবৃতিতে শিক্ষক নেতারা বিভিন্ন কর্মসূচির ঘোষণা করেন, যা নিম্নরূপঃ
১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে।
২. অনলাইন, সান্ধ্যকালীন ক্লাস, শুক্র ও শনিবারের প্রফেশনাল কোর্সের ক্লাস বন্ধ থাকবে।
৩. সব পরীক্ষা বর্জন করা হবে। মিডটার্ম, ফাইনাল ও ভর্তি পরীক্ষাসহ কোনও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না।
৪. বিভাগীয় চেয়ারম্যান, বিভাগীয় অফিস, সেমিনার, কম্পিউটার ল্যাব ও গবেষণাগার বন্ধ থাকবে। অ্যাকাডেমিক কমিটি, সমন্বয় ও উন্নয়ন কমিটি এবং প্রশ্নপত্র সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হবে না।
৫. অনুষদের ডিনরা ডিন অফিস ও ভর্তি পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বন্ধ রাখবেন। নবীনবরণ অনুষ্ঠানের কর্মসূচি গ্রহণ করা যাবে না। কোনো সিলেকশন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে না।
৬. বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালকগণ ইনস্টিটিউটের অফিস, ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখবেন। সান্ধ্যকালীন, শুক্রবার ও শনিবারের ক্লাস বন্ধ থাকবে।
৭. বিভিন্ন গবেষণাধর্মী সেন্টারের পরিচালকগণ কোনও সেমিনার, কনফারেন্স ও ওয়ার্কশপের কর্মসূচি গ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন।
৮. বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষগণ প্রাধ্যক্ষ অফিস বন্ধ রাখবেন।
৯. প্রধান গ্রন্থাগারিক কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি বন্ধ রাখবেন।
সোনালী/ সা