ঢাকা | এপ্রিল ৩০, ২০২৫ - ৭:১১ অপরাহ্ন

শিরোনাম

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন পর্যবেক্ষণের পর সিদ্ধান্ত: শিক্ষামন্ত্রী

  • আপডেট: Sunday, June 30, 2024 - 7:09 pm

অনলাইন ডেস্ক: সারাদেশে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা তৈরি হলে আন্দোলন পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তীতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যেহেতু সর্বজনীন পেনশনের সিদ্ধান্তটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নয়, সেহেতু এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন কিংবা এর পক্ষে-বিপক্ষে আপাতত কোনো মন্তব্য করা সম্ভব নয়।

আজ রবিবার (৩০ জুন) বিকেলে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিটিউটে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা-২০২৪ সংক্রান্ত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, সর্বজনীন পেনশনে যেতে কেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা অনীহা প্রকাশ করেছেন সেট নিয়ে (শিক্ষক) নেতারা আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে তুলনামূলক একটি চিত্র দেখিয়েছিন। সেখানে আমরা আমাদের পক্ষ থেকে নানার ধরনের পর্যবেক্ষণ তাদের জানিয়েছি। সেগুলো আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হওয়া নিয়ে আমি এই মুহূর্তে কিছু বলছি না। তারা যেহেতু একটি কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এই দেশ গণতান্ত্রিক দেশ সেখানে সবারই রাজনৈতিক ও বাকস্বাধীনতার অধিকার আছে। এই অচলাবস্থা যদি আগামীকাল থেকে শুরু হয়ে থাকে তাহলে আমরা পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যবস্থা নেব। আমার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেই পরবর্তী সিদ্ধান্তে আমরা যাবে।

জানা গেছে, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাতিল না হওয়ায় সারাদেশে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। আজ রবিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, পেনশন সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক’ প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছে।

“১৩ মার্চ ২০২৪ অর্থ মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে বিবৃতি প্রদান, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, মানববন্ধন, প্রতীকী কর্মবিরতি, স্মারকলিপি প্রদান এবং অবস্থান কর্মসূচি মতো শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময়ে সরকারের তরফ থেকে কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় গত ২৫, ২৬ ও ২৭ জুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালিত হয় এবং শনিবার ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে। সোমবার থেকে আমরা সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাব।”

সরকার শিগগিরই এই দাবি মেনে নেবে বলে আশা করছেন শিক্ষক সমিতির এই নেতা। তিনি বলেন, না হলে ১ জুলাই থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সারাদেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে।

গত মার্চ মাসে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে আগের চারটি স্কিমের সঙ্গে ‘প্রত্যয় স্কিম’ নামের একটি প্যাকেজ চালু করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে অন্তর্ভুক্ত থাকবেন সব ধরনের স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীনস্থ অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোতে ২০২৪ সালের ১ জুলাই পরবর্তী সময়ে যোগ দেওয়া কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা।

শিক্ষক সমিতির দাবি, এ স্কিম ‘বৈষম্যমূলক’। এতে আগামী ১ জুলাই এবং এর পরে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

‘প্রত্যয়’ স্কিমে যা বলা হয়েছে
সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আগের চারটি স্কিমের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে সরকারি চাকরিজীবীদের। গত ২০ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রত্যয় ঘোষণা করে তার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে।

এর আগে গত ১৩ মার্চ ‘প্রত্যয় স্কিম’কে যুক্ত করে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন ২০২৩ এর ২৯ ধারার ক্ষমতাবলে প্রয়োজনীয় সংশোধনী এসআরও আকারে প্রকাশ করা হয়।

সংশোধনী অনুযায়ী, সব ধরনের স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীন অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোতে ২০২৪ সালের ১ জুলাই পরবর্তী সময়ে যোগদানকারী কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্ত হবেন। এই স্কিমের নাম হবে ‘প্রত্যয়’ ।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রত্যয় স্কিম চালুর ফলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর বিদ্যমান কর্মকর্তা/কর্মচারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে না এবং তাদের বিদ্যমান পেনশন বা আনুতোষিক সুবিধা অক্ষুণ্ন থাকবে।

তবে, যাদের ন্যূনতম ১০ বছর চাকরি অবশিষ্ট আছে তারা আগ্রহ প্রকাশ করলে প্রত্যয় স্কিমে অংশ নিতে পারবেন।

প্রত্যয় স্কিমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে অবসর জীবনে মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন বিধায় ২০২৪ সালের ১ জুলাই এর পরবর্তী সময়ে নতুন যোগদান করা কর্মকর্তা/কর্মচারীদের ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

 

সোনালী/ সা

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS