ঢাকা | মে ১, ২০২৫ - ৬:০৮ অপরাহ্ন

বারবার লিটনই কেন বিতর্কের কেন্দ্রে

  • আপডেট: Sunday, June 30, 2024 - 3:00 am

বাংলা ইনসাইডারের প্রতিবেদন 

সোনালী ডেস্ক: খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র। তার চেয়েও বড় পরিচয় হলো তিনি জাতীয় ৪ নেতার অন্যতম এ এইচ এম কামরুজ্জামানের সন্তান। জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগের যাদেরকে হত্যা করা হয়েছিল, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য; সেই শহীদের সন্তান তিনি।

এই জাতীয় চার নেতা বাংলাদেশে অত্যন্ত শ্রদ্ধার আসনে আসীন। আ’লীগের রাজনীতিতে তাদেরকে বিশেষ সম্মান ও শ্রদ্ধা করা হয়। ৩ নভেম্বর জেল হত্যা দিবসকে আওয়ামী লীগ পালন করে অত্যন্ত আবেগ ঘন পরিবেশে। ১৫ আগস্টে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করার পর শেষ ৩ নভেম্বরের জেলহত্যা ছিল আওয়ামী লীগের জন্য আরেকটি বড় বিপর্যয়।

এ এইচ এম কামরুজ্জামান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একজন বিশ্বস্ত সহযোদ্ধা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আর এ কারণেই জাতীয় চার নেতার সন্তানদেরকে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ গুরুত্ব দেন। তাদেরকে সবসময় পাদপ্রদীপের রাখার চেষ্টা করেন।

জাতীয় চার নেতার উত্তরাধিকারদের মধ্যে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, মোহাম্মদ নাসিম আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেই শুধু নয়, জাতীয় রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং শ্রদ্ধার আসনে আসীন ছিলেন। তাদের চির বিদায়ের পর এ এইচ এম কামরুজ্জামানের পুত্র খায়রুজ্জামান পাদপ্রদীপে আসেন।

তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য হিসেবেও জায়গা পেয়েছেন। কিন্তু খায়রুজ্জামান যেন কোন ভাবে রাজশাহীর গন্ডি ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারছেন না। জাতীয় চার নেতার সন্তান তিনি। আওয়ামী লীগের মতো বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য। কিন্তু তারপরেও রাজশাহীর রাজনীতির কাদা ছোড়াছুড়িতে তাকে সবসময় দেখা যায়। আর এই কারণে তিনি রাজশাহীতে বিতর্কিত হচ্ছেন।

গত ১১ জানুয়ারির নির্বাচনের পর একের পর এক বিভিন্ন রকম বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছেন রাজশাহীর জনপ্রিয় এই মেয়র। তিনি জাতীয় চার নেতার অন্যতম এ এইচ এম কামরুজ্জামানের সন্তান।

কাজেই সকলে প্রত্যাশা করেছিল আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়ার পর তিনি জাতীয় রাজনীতিতে অবদান রাখবেন। যেভাবে সৈয়দ আশরাফ বা মোহাম্মদ নাসিম রেখেছিলেন। কিন্তু এখনও তিনি রাজশাহী কেন্দ্রিক রাজনীতিতে জড়িয়ে আছেন এবং সেখানে নানা বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে অস্বস্তি সৃষ্টি হয়েছে।

সর্বশেষ রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংর্ঘষে আবার আলোচনায় এসেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য। ইতোমধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম, যিনি আগের মেয়াদে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন, তিনি ঘোষণা দিয়েছেন যে খায়রুজ্জামান লিটনের বিরুদ্ধে তিনি হত্যা মামলা দায়ের করবেন। এটি আওয়ামী লীগের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।

এই প্রথম বিতর্ক নয়, ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ে অভিযোগ উঠেছে যে সেখানে নৌকা প্রতীক প্রাপ্ত ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা ফজলে হোসেন বাদশাকে হারানোর ক্ষেত্রেও খায়রুজ্জামান ভূমিকা রেখেছেন।

অভিযোগ আছে, রাজশাহী থেকে নির্বাচিত এমপি আব্দুল ওয়াদুদকে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেয়ার ঘটনায় অসন্তুষ্ট হয়েছেন খায়রুজ্জামান এবং তার অসন্তুষটি তিনি গোপন রাখেননি। আব্দুল ওয়াদুদকে যখন সংবর্ধনা দেওয়া হয়, সেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি যাননি। পরবর্তীতে তিনি একটি সমাবেশ করে বলেছেন, সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করতে হবে।

রাজশাহীতে তিনি একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন। যেখানে অন্য গ্রুপকে তিনি কোণঠাসা করার চেষ্টা করেন সার্বক্ষণিক ভাবে।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, স্থানীয় সংকীর্ণ রাজনীতিতে তিনি আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করেছেন এবং এই কারণেই আওয়ামী লীগ রাজশাহীতে শক্তিশালী হতে পারছে না। এসব অভিযোগের সত্য-মিথ্যা জবাব তিনিই ভালো দিতে পারবেন।

কিন্তু একটি বিষয় সত্যি যে, এ এইচ এম কামরুজ্জামানের সন্তানের কাছে সকলের প্রত্যাশা তিনি দলমতের ঊর্ধ্বে থেকে জাতীয় নেতার সন্তান হিসেবে জাতীয় রাজনীতিতে মনোযোগী হবেন। কিন্তু জাতীয় রাজনীতির চেয়ে তাকে রাজশাহীর রাজনীতির কোন্দল এবং কাদা ছোড়াছুড়িতেই বেশি ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা যাচ্ছে। এটি আওয়ামী লীগের অনেকের কাছেই হতাশার কারণ। সুত্র: বাংলা ইনসাইডার

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS