যমুনায় পানি বৃদ্ধি, ১ সপ্তাহে দেড় শতাধিক বাড়িঘর বিলীন
অনলাইন ডেস্ক: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার যমুনা নদীসহ সবগুলো নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত ১ সপ্তাহে দেড় শতাধিক বাড়িঘর যমুনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সহায় সম্বল হারিয়ে মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
এদিকে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার চর ও নিচু এলাকা ও চরাঞ্চলের ফসলী জমি তলিয়ে যাচ্ছে। ফলে কৃষকরা চরম আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার সকালে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ২৬ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৯ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জালালপুর ইউনিয়নের মোতাবেল ও আব্দুস সালাম বলেন, জরুরি ভিত্তিতে ভাঙণরোধে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এ এলাকার অন্তত ৭টি গ্রাম মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।
কৈজুরী ইউনিয়নের পাঁচিল গ্রামের কৃষক ফরহাদ হোসেন বলেন, চরের জমিতে চাষাবাদ করে সারা বছর চলতে হয়। প্রত্যেক বছর বন্যায় সেই চরের ফসলের ক্ষতি হয়। ফলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে এখন বেঁচে থাকা দায় হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ বছর চরের ১ বিঘা জমিতে তিলের আবাদ করছি। পানি বৃদ্ধির ফলে সে তিল ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। পানি এ ভাবে বাড়তে থাকলে ৪-৫ দিনের মধ্যে তা তলিয়ে যাবে। তখন পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
শাহজাদপুর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের কৃষক আলমাস হোসেন বলেন, বন্যার পানি দেখলেই ভয় করে। চরের নিচু জমিতে পানি উঠতে শুরু করছে। দুই বিঘা জমিতে তিলের আবাদ করেছি। যেভাবে পানি বাড়ছে, তাতে ফসল ঘরে তুলতে পারব কি না জানি না। এছাড়া পাট নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছি।
শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি অফিসার বেনজির আহমেদ বলেন, এই মুহূর্তে চরের জমিতে তিল ও পাট চাষ করা হচ্ছে। যমুনা নদীর পানি এ ভাবে বাড়তে থাকলে অনেক ফসল তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা এ বিষয়ে সব সময় খোঁজ খবর রাখছি। কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, শাহজাদপুর উপজেলার যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণের জন্য সাড়ে ছয় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ৪৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণ কাজ চলছে। কাজের মেয়াদ চলতি বছরের জুন পর্যন্ত। তবে কাজ শেষ না হওয়ায় আরও এক বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এ কাজ শেষ হলে এখানে আর ভাঙন থাকবে না।
সোনালী/ সা