গভীর রাতে সিটি করপোরেশনের গাড়ি দিয়ে পুকুর ভরাট
স্টাফ রিপোর্টার: গভীর রাতে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের হুইললোডার গাড়ি ব্যবহার করে মহানগরীর তেরখাদিয়া এলাকার একটি পুকুর ভরাট করা হচ্ছে।
ঈদুল আযহার আগে থেকে মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের পাশ্ববর্তী পুকুরটি ভরাটের কাজ শুরু হলেও গত বুধবার রাতে স্থানীয়রা ভিডিও এবং ছবিসহ ফেসবুকে তুলে ধরলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সিটি করপোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল হোসেন স্বয়ং পুকুরটি ভরাটের সঙ্গে জড়িত।
স্থানীয়রা জানান, তেরোখাদিয়া এলাকার এই পুকুরটি একসময় বিশাল আয়তনের ছিলো। তবে মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণের সময় পুকুরের একাংশ ভরাট করে ফেলা হয়। অবশিষ্ট অংশটি দীর্ঘদিন যাবৎ পুকুর হিসেবেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। গত ১৪ জুন থেকে হঠাৎ করে রাতের অন্ধকারে পুকুরটি বালু দিয়ে ভরাটের কাজ শুরু হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক এলাকাবাসী জানান, এই কাজে সিটি করপোরেশনের গাড়ি ব্যবহার করতে দেখে তারা প্রথমে বিস্মিত হন। প্রথম দিন থেকে স্বয়ং ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও তার লোকজন এই ভরাটের কাজ তদারকি করে আসছেন।
পরে তাদেরকে জানানো হয়, এই পুকুর ‘উচ্চ মহলের’ নির্দেশেই ভরাট করা হচ্ছে। সে কারণে ভয়ে অনেকেই মুখ খুলতে পারছেন না।
এ বিষয়ে ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল হোসেন দাবি করেন, রেকর্ড অনুযায়ী পুকুরটি ভিটা শ্রেণির হওয়ায় তা ভরাট করতে কোনো অসুবিধা নেই।
তিনি জানান, সিটি করপোরেশন থেকে হুইললোডার গাড়িটি ভাড়া নিয়ে তারা পুকুর ভরাট করছেন। এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের অনুমতিও আছে বলে তার দাবি।
এর আগে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানিতে রাজশাহী শহরে থাকা ৯৫২টি পুকুর সংরক্ষণ করতে রাজশাহী সিটি মেয়র, পরিবেশ অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট পরিচালক, র্যাব ও জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। শুনানিতে শহরের আর যাতে কোনো পুকুর ভরাট, দখল না হয় তাও নিশ্চিত করতে বলা হয়।
এর পাশাপাশি প্রতিনিয়তই পুকুর-জলাশয় সংরক্ষণের দাবিতে নানা কর্মসূচি করতে দেখা যায় পরিবেশবাদীদের। এমন পরিস্থিতিতে রাজশাহী শহরে অনাবৃষ্টি, অতিরিক্ত গরম ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে যেখানে পুকুর-জলাশয় রক্ষার দাবি তোলা হচ্ছে; সেখানে খোদ সিটি করপোরেশনের গাড়ি ব্যবহার করে পুকুর ভরাটের দৃশ্য অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে শহরের আপামর জনগণের ওপর।