ঈদের বাকি একদিন, তবুও দাপট দেখাচ্ছে ব্রয়লার-গরুর মাংস
অনলাইন ডেস্ক: একদিন পরেই উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। এই ঈদে সবাই কোরবানি করার পাশাপাশি অন্যদের মধ্যে মাংস বিতরণ করে থাকেন। এসময়ে বাজারে মাংসের চাহিদা খুব বেশি না থাকলেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে গরু ও খাসির মাংস। পাশাপাশি ব্রয়লার থেকে শুরু করে সব ধরনের মুরগি বাড়তি দাম বিক্রি হচ্ছে। ফলে ঈদের সময়ে এসেও বাজারে দাপট দেখাচ্ছে মাংসসহ ব্রয়লার ও অন্য মুরগি।
শনিবার (১৫ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি মাংসের দোকানেই দু’একটি করে গরু-খাসি জবাই হয়েছে। ব্যবসায়ীরা ৭৮০ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রি করছেন। পাশাপাশি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়। অন্যদিকে প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকায়। পাশাপাশি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৮০ টাকায়, কক প্রতি কেজি ৩৭০ থেকে ৩৮০ টাকায়, ছোট সাইজের পাকিস্তানি মুরগি প্রতি কেজি ৩৮০ টাকায় এবং দেশি মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, কোরবানির ঈদের সময় হলেও এসময়ে প্রচুর পরিমাণে গরু-খাসির মাংস বিক্রি হয়। মূলত যারা ছুটি পাননি বা কাজের কারণে ঢাকায় থাকছেন তারা ঈদের সময় গরু-খাসির মাংসের ক্রেতা। কোরবানির সময় গরু-খাসির মাংসের পাশাপাশি অনেকে বাসায় ব্রয়লারসহ অন্য মুরগির মাংস রান্না করেন। তাই কিছুটা বাড়তি দাম হলেও বেচা-বিক্রি ভালোই চলছে।
রাজধানীর রামপুরা বাজার থেকে ২ কেজি গরুর মাংস কিনেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী এহসানুল বারি। তিনি বলেন, আমি একটি বেসরকারি আইটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। আমাদের ডিউটি হয় রোস্টার অনুযায়ী, সে কারণে এবার ঈদের ছুটি পাইনি। যেহেতু ঈদে বাড়ি যাওয়া হচ্ছে না, তাই ঢাকাতেই ঈদ করতে হবে। সে কারণে ঈদের দিন বাসায় রান্না করার জন্য ২ কেজি গরুর মাংস কিনলাম। অন্য সময় ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি করলেও এখন ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। যেহেতু কিনতেই হবে, তাই বাধ্য হয়ে বেশি দামে কিনলাম। প্রথমে ভেবেছি যেহেতু কোরবানির ঈদ, তাই বাজারে গরুর মাংস হয়ত পাব না। কিন্তু এসে দেখছি আমার মতো অনেক ক্রেতা আছেন, যারা কোরবানির ঈদের সময়ও গরুর মাংস কিনছেন।
একই বাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা মনসুর আলী বলেন, অনেকে ভাবে কোরবানির ঈদের সময় বাজারে গরুর মাংস পাওয়া যায় না, কিন্তু এ ধারণা ভুল। বরং অন্যদিনের চেয়ে এসময় বেশি পরিমাণে গরুর মাংস বিক্রি হয়। অনেকে আছে কোরবানি দিতে পারেননি, আবার অনেকে ছুটি না পাওয়ার কারণে, কাজের কারণে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যেতে পারছেন না। তারাই কোরবানির সময়ে বাজারে গরুর মাংস কেনার ক্রেতা।
তিনি আরও বলেন, এসময়ের যেহেতু গরুর দাম বেশি সে কারণে মাংসের দাম বেশি পড়ছে। ৭৫০ টাকা প্রতি কেজি অন্য সময় বিক্রি করলেও এখন অনেকেই প্রতি কেজি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি করছে।
এদিকে রাজধানীর মহাখালী বাজার থেকে ২১০ টাকা কেজি দরে একটি ব্রয়লার মুরগি কিনেছেন রবিউল ইসলাম নামের একজন ক্রেতা। তিনি বলেন, সত্যি কথা বলতে এ বছর কোরবানি দিতে পারছি না। এ ছাড়া একটি মুদি দোকানে কাজ করার কারণে ঈদে নিজ গ্রামের বাড়িতেও যাওয়া হচ্ছে না। যেহেতু ঈদে পরিবার নিয়ে ঢাকাতেই থাকতে হবে, আর গরু-খাসির মাংসের দাম অনেক বেশি, তাই ঈদের দিন রান্না করার জন্য ব্রয়লার মুরগি কিনেছি। বাজারে ব্রয়লার মুরগির দামও বেশি, প্রতি কেজি ব্রয়লার ২১০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর গুলশান সংলগ্ন লেকপাড় বাজারের মুরগির বিক্রেতা হায়দার আলী বলেন, কোরবানি ঈদের সময়ও প্রচুর পরিমাণে মুরগিও বিক্রি হয় কিন্তু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যানজটের কারণে, পরিবহন সংকটের কারণে ঢাকার বাজারে মুরগি সরবরাহ কম। সে কারণে মুরগির দাম কিছুটা বাড়তি যাচ্ছে।
সোনালী/ সা