ঢাকা | নভেম্বর ২৫, ২০২৪ - ৭:৪৫ পূর্বাহ্ন

গরুর ট্রাকে বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে নেতা-পুলিশ

  • আপডেট: Thursday, June 13, 2024 - 1:01 pm

অনলাইন ডেস্ক: কোরবানির ঈদ এলেই দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছুটে চলে পশুবাহী ট্রাক। এসময় পথে পথে ট্রাকের গতিরোধ করে চলে চাঁদাবাজি। গণমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে এমন চিত্র। এসময় টাকা দিয়ে চলে ম্যানেজের চেষ্টা। চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর দাবি ব্যবসায়ীদের।

সিটি হাট, রাজশাহী। ঈদকে কেন্দ্র করে উত্তরের অন্যতম এই হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের দৌড়ঝাপ। হাট শেষ হলেই গরু ভর্তি ট্রাক ছুটতে শুরু করবে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে।

রাস্তায় গরু পরিবহনের অবস্থা কি, জানতে ক্রেতা সেজে মিশে যাওয়ার চেষ্টা ট্রাক চালক ও হাট সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে। তাতেই পাওয়া গেল মহাসড়কে চাঁদাবাজির তথ্য! জানা গেল, বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা শুরু হতেই বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বের হওয়া ট্রাকগুলো বিভিন্ন পয়েন্টে আটকে চাঁদা নেন স্থানীয় নেতা ও পুলিশের কিছু সদস্যা।

কোরবানির ঈদ এলেই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার হাট থেকে গরুভর্তি ট্রাকগুলো ছুটে চলে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

এরমধ্যে যেসব ট্রাক ঢাকা পর্যন্ত যাবে ওই ট্রাকগুলোকে এক হাজার থেকে ১২শ টাকা, আর যেসব ট্রাক চট্টগ্রাম পর্যন্ত যাবে ওই ট্রাকগুলোকে ১০ থেকে ১৫-২০ জায়গায়ও ধরতে পারে, যেখানে টাকা দিলেই কেবল মিলবে মুক্তি।

কিন্তু তাদের মুখের কথায় সব বিশ্বাস না করে এসব অভিযোগের সত্যতা জানতে পরিচয় গোপন করে চট্টগ্রামগামী একটি গরুর ট্রাকে উঠে গন্তব্য এবার রাজশাহী থেকে ঢাকা।

ঘটনার দিন রাত সাড়ে ১১টা। হাট থেকে বের হওয়ার পরই থমকে যায় ট্রাকের গতি। দাবি করা হয় চাঁদা। কিসের চাঁদা জিজ্ঞাসা করতেই করা হয় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ। পরে টাকা দিয়েই রেহাই মেলে সেখান থেকে।

রাজশাহীর সিটি হাট থেকে ট্রাক বের হয়ে কিছুদূর এগিয়ে আসার পরই চাঁদাবাজদের কবলে। শেষ পর্যন্ত চাঁদা দিয়েই মিলে মুক্তি।

আবারও চলা শুরু । বঙ্গবন্ধু সেতুর আগে পর্যন্ত আর কোথাও দিতে হয়নি চাঁদা। ট্রাকের চালক ও তার সহকারীর আশঙ্কা ফাঁস হয়ে গেছে গণমাধ্যমের উপস্থিতির তথ্য। না হলে এরমধ্যে আরও কয়েক জায়গায় আটকে টাকা নেয় স্থানীয় নেতাদের নিয়োগকরা লোকজন।

এরপর পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন। ট্রাক ছেড়ে গাড়িতে উঠে অনুসরণের চেষ্টা গরুর ট্রাকগুলোকে। রাজধানীতে প্রবেশের মুখে উত্তরা এলাকায় আবারো গতিরোধ করা হয় একটি ট্রাকের। গণমাধ্যমের উপস্থিতি টের পেয়ে চলে যেতে বলা হয় আমাদের।

উত্তরা এলাকায় গতিরোধ, সময় সংবাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।

পূর্বাচলের ৩০০ ফুট এলাকায় আরেকটি পশুবাহী ট্রাক অনুসরণ করা হয়। পথে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের একটি চেকপোস্টে থামানো হয় সেটিকে। কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দেয়া হয় টাকা নিয়ে।

কিসের টাকা নিলেন প্রশ্ন করতেই শুরু হয় দৌড়ঝাপ। ছবি নিতে বাধা দেয়া হয় চিত্র সাংবাদিককেও। পরে টাকার বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন তারা।

চালকরা বলছেন, এমন চাঁদাবাজি নিত্যদিনের ঘটনা। কিন্তু কোনো উদ্যোগেই তা বন্ধ হচ্ছে না। তাই অসাধু পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি সংশ্লিষ্টদের।

 

সোনালী/ সা