রাজশাহী অঞ্চলে বজ্রপাতে ৭ জন নিহত
অনলাইন ডেস্ক: চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও নাটোর জেলায় বজ্রপাতে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে ঝড় ও বৃষ্টির সময় ওই বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।
নওগাঁর পত্নীতলা ও মান্দা উপজেলায় বজ্রপাতে দুই কৃষক ও এক নারীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন পত্নীতলা উপজেলার পাটিচড়া ইউনিয়নের নাগরগোলা গ্রামের বিশা মণ্ডলের ছেলে খাদেমুল ইসলাম (৫০) ও গাহন গ্রামের আব্দুল হামিদের স্ত্রী মনিকা (৩৫) এবং মান্দা উপজেলার ভোলাম গ্রামের ফইমদ্দিন মণ্ডলের ছেলে শামসুল আলম (৩৪)।
পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, বিকেলে বৃষ্টির মধ্যে কৃষক খাদেমুল ইসলাম মাঠ থেকে ধান নিয়ে বাড়িতে আনেন। তিনি উঠানে থাকা অবস্থায় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। অন্যদিকে গৃহবধূ মনিকা বাড়ির সামনে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে স্বজনরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মান্দা থানার ওসি মোজাম্মেল হক কাজী জানান, বিকেলে হঠাৎ করেই আকাশ কালো মেঘে ঢেকে যায়। কৃষক শামসুল মেঘ দেখে বাড়ির পাশের মাঠে কেটে রাখা ধানের আঁটি এক জায়গায় জড়ো করতে যান। স্ত্রী লালবানুও তার সঙ্গে ছিলেন। এসময় বজ্রপাতে আহত হন শামসুল। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মৃত্যু হয়। বজ্রপাতের ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলার পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। শিবগঞ্জ ও ভোলাহাট উপজেলার হঠাৎপাড়া এলাকা এ ঘটনা ঘটে। মৃতরা হলেন, শিবগঞ্জ পৌর এলাকার আলীডাঙ্গা মহল্লার সুভাস ভকতের স্ত্রী ববি ভকত (৩২), উপজেলার পাকা ইউনিয়নের দক্ষিণপাঁকা নিশিপাড়ার এরশাদ আলী রাকিবুলের মেয়ে কবিতা খাতুন (৮) ও ভোলাহাট উপজেলার হঠাৎপাড়া এলাকার এসলাম আলীর মেয়ে আমেনা খাতুন (১০)।
শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, দুপুরে ববি ভকত বাড়ির সামনের একটি আম বাগানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় বজ্রপাতে তিনি মারা যান। অন্যদিকে একই সময়ে টিউবওয়েলের পানি আনতে গিয়ে পাকা ইউনিয়নের দক্ষিণ নিশিপাড়া এলাকায় কবিতা খাতুন নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
ভোলাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার বলেন, উপজেলার বড়গাছি গ্রামের হঠাৎপাড়া এলাকার একটি আমবাগানে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে হঠাৎ মাটিতে পড়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে আমেনা খাতুন। স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে,নাটোরের নলডাঙ্গায় বারনই নদীতে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে কামরুল হোসেন (৩৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এসময় মজনু (৪০) নামে আরেকজন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (৭ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার কোমরপুর এলাকায় এ বজ্রপাতের ঘটে। নিহত কামরুল হোসেন উপজেলার কোমরপুর গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে। আহত মজনু একই গ্রামের আহমদ আলীর ছেলে।
ব্রহ্মপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আশরাফুজ্জামান জানান, দুপুরে মজনু ও কামরুল হোসেন কোমরপুর গ্রামের গোরস্থান সংলগ্ন বারনই নদীতে জাল দিয়ে মাছ ধরছিলেন। হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই কামরুলের মৃত্যু হয়। আহত হন মজনু। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা কামরুলের মরদেহ উদ্ধার করেন। নলডাঙ্গা থানার কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনোয়ারুজ্জামান বজ্রপাতে নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সোনালী/ সা