ঢাকা | জুলাই ২৭, ২০২৪ - ৫:৩৮ পূর্বাহ্ন

রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে হল থেকে অপসারণের দাবি

  • আপডেট: Thursday, June 6, 2024 - 11:55 am

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবকে হল থেকে অপসারণের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ ছাত্র সংগঠন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষা, গবেষণার মানোন্নয়নের বদলে ছাত্রলীগ নামক নিপীড়ক সংগঠনের অপকর্মে পৃষ্ঠপোষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তারা।

বুধবার (৫ মে) এক যৌথ বিবৃতিতে সাত সংগঠনের সদস্যরা তিনটি দাবি জানান।

দাবিগুলো হলো- অছাত্র ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী ও সাধারণ সম্পাদককে হল থেকে অপসারণ করতে হবে। বহিরাগত ও অছাত্র মুক্ত হল নিশ্চিত করতে হবে এবং অবৈধ ভাবে হলে অবস্থান ও ভর্তি জালিয়াতির দায়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বিবৃতি দেওয়া সাত সংগঠন ও নেতারা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন, নাগরিক ছাত্র ঐক্যের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মেহেদী হাসান মুন্না, ছাত্র ইউনিয়নের আহ্বায়ক জান্নাতুল নাঈম, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের আহ্বায়ক তারেক আশরাফ, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শামীন ত্রিপুরা এবং ছাত্র গণমঞ্চের আহ্বায়ক নাসিম সরকার।

যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, গত ৪ জুন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হোসেন বকুল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বিভাগের শিক্ষার্থী নন বলে জানানো হয়।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দীর্ঘসূত্রতা উল্লেখ করে তারা বলেন, অছাত্র গালিব জাল সনদে জুলাই ২০২১ সেশনে সান্ধ্য মাস্টার্স কোর্সে ভর্তির আবেদন করে এবং ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে তা বাতিল করা হয়।

অর্থাৎ জালিয়াতি সনাক্ত করতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ সময় নিয়েছে প্রায় ২ বছর ২ মাস। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের তথ্য যাচাইয়ের এই দীর্ঘসূত্রতা স্বাভাবিকভাবে নেয়ার অবকাশ নেই। এছাড়া সাংবাদিকতা বিভাগ ভর্তি বাতিলের বিষয়টি জনসমক্ষে স্পষ্ট করেছে আরো ৯ মাস পর।

অছাত্রদের দিয়ে কমিটি দেয়া ছাত্রলীগেকে সংগঠন করার সুযোগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংকট তৈরি করে রেখেছে উল্লেখ করে তারা আরো বলেন, উক্ত অছাত্র ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয় এবং নিপীড়ক সংগঠনটির যাবতীয় অপকর্মে নেতৃত্ব দিতে থাকে।

প্রকৃতপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষা, গবেষণার মানোন্নয়নের বদলে ছাত্রলীগ নামক নিপীড়ক সংগঠনের অপকর্মে পৃষ্ঠপোষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। কর্তাব্যক্তিরা ছাত্র সংসদ নির্বাচন না দিয়ে, অছাত্র দিয়ে হলগুলো দখল করিয়ে এবং অছাত্রদের দিয়ে কমিটি দেয়া ছাত্রলীগেকে সংগঠন করার সুযোগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংকট তৈরি করে রেখেছে।

এতে প্রকান্তরে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানটি আওয়ামী ফ্যাসিবাদ টিকিয়ে রাখার একটি যন্ত্রে পরিণত হয়েছে। যা এই প্রতিষ্ঠানকে গৌরবান্বিত করা শহীদ শামসুজ্জোহা, শহীদ হবিবুর রহমান, শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার, শহীদ মীর আব্দুল কাইয়ুম সহ অন্যান্য অসংখ্য সৎ ও শিক্ষানুরাগী শিক্ষকের কীর্তির প্রতি অবমাননা।

বক্তারা আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে ড্রপ আউট গালিবের দীর্ঘ ৬ বছর যাবত ছাত্রত্ব না থাকলেও সে অবলীলায় মাদর বখশ হলের ২১৫ নাম্বার কক্ষ (চার আসন বিশিষ্ট) এবং বর্তমানে বঙ্গবন্ধু হলের ২২৮ নাম্বার কক্ষ (চার আসন বিশিষ্ট) একাই দখল করে আছেন।

অবৈধভাবে হলে অবস্থানরত অবস্থায় গালিব হলে দখলদারিত্ব, শিক্ষার্থীদের মারধর, ক্যাম্পাসে চাঁদাবাজি সহ বহুবিধ অপরাধের নেতৃত্ব দিয়েছে এবং তা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন সমূহ অভিযুক্ত ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।

সোনালী/ সা