ঢাকা | অক্টোবর ২, ২০২৪ - ১০:১৯ পূর্বাহ্ন

রাজশাহীতে শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় শহিদ জামিলকে স্মরণ 

  • আপডেট: Friday, May 31, 2024 - 7:00 pm

৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী

স্টাফ রিপোর্টার: জামায়াত-শিবিরের হাতে নিহত বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখার তৎকালীন সভাপতি শহিদ ডা. জামিল আক্তার রতনকে তার মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে ফুলে ফুলে ভরে যায় শহিদ জামিলের সমাধি।

এদিন বেলা ১১টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) প্রাঙ্গনে শহিদ জামিল আক্তার রতনের সমাধিতে প্রথমে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশার পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

এসময় জামিলের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।

এরপর শহিদ জামিলের সমাধিতে ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী মহানগর কমিটি, মহানগর যুবমৈত্রী, মহানগর ছাত্রমৈত্রী, আমরা মৈত্রী পরিবার, শহিদ জামিল আক্তার রতন ফাউন্ডেশন, শহিদ ডা. জামিল আক্তার রতন স্মৃতি সংসদ, শহিদ জামিল ব্রিগেডসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। এতে ফুলে ফুলে ভরে যায় শহিদ জামিলের সমাধি।

শ্রদ্ধা নিবেদনকালে বক্তারা বলেন, শহিদ ডা. জামিল আক্তার রতন ছিলেন অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার একজন সৈনিক। তার নাম কখনও ইতিহাস থেকে মুছে যাবে না। তার আদর্শ যেন বাংলাদেশে পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয় তার জন্য আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। তাহলেই শহিদ জামিলের আত্মা শান্তি পাবে।

মহানগর ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি ওহিদুর রহমানের পরিচালনায় এসময় শপথ বাক্য পাঠ করান মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামাণিক দেবু। বক্তব্য রাখেন, ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগরের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য সাদরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল মতিন, মনির উদ্দিন পান্না, নাজমুল করিম অপু, রাজশাহী মহানগর যুবমৈত্রীর সভাপতি ও রাসিকের ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি, সাবেক ছাত্রনেতা সেলিম মনোয়ার, মঞ্জুর মোর্শেদ হাসান চুন্না, সালাউদ্দিন জেম, মহানগর যুবমৈত্রীর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমতিয়াজ।

উপস্থিত ছিলেন, ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মনিরুজ্জামান মনির, মহানগর সদস্য সীতানাথ বনিক, আলমগীর হোসেন আলম, মাসুম আক্তার অনিক, আব্দুল খালেক বকুল, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা কমিটির সদস্য কামরুল হাসান সুমন, সাবেক ছাত্রনেতা মোখলেছুর রহমান মুকুল, মহানগর যুবমৈত্রীর সহ-সভাপতি রায়হান হালিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহায়মিনুল হক রানা, কাশিয়াডাঙা থানার আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান সাগর, যুবনেতা দিদারুল আলম ইস্তো, যুবনেতা আরিফুল ইসলাম আরিফ, কাওসার আলী, ছাত্রমৈত্রীর মহানগর সহ-সভাপতি সাকিব আল হাসান, অমিত সরকার, জানে আলম আরিয়ান প্রমুখ।

এদিকে শহিদ জামিল আক্তার রতনের সমাধীতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে জামিলের স্মৃতিস্তম্ভ অযত্ন ও অবহেলার অভিযোগ করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টি ও তার বন্ধু সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিষয়টি নিয়ে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে তারা নিজস্ব উদ্যোগে জামিলের সমাধি ও এর আশ পাশের স্থানটি পরিস্কার করিয়ে কর্মসূচি শুরু করেন।

প্রসঙ্গত, সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী লড়াই-সংগ্রামের অন্যতম যোদ্ধা ছিলেন ছাত্রমৈত্রীর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ শাখার তৎকালীন সভাপতি ডা. জামিল আক্তার রতন। তখন রাষ্ট্রক্ষমতায় সামরিক শাসক এরশাদ। আর ক্যাম্পাসে তখন সক্রিয় সাম্প্রদায়িক অপশক্তি জামায়াত-শিবির। ১৯৮৮ সালের ১১ মে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী বিল উত্থাপন করা হলে দেশব্যাপী এর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বিরোধীতা শুরু করে।

৩১ মে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে ছিলো তুমুল উত্তেজনা। শহীদ জামিল সেদিন শিবিরের নৃশংসতার নির্মম শিকার হন। জামিলকে পাওয়ামাত্রই শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা হুইসেল বাজিয়ে উপর্যুপরি কোপায়। ইট দিয়ে তার মাথা থেঁতলে দেয়া হয়। এতেও তারা থামেনি। তলোয়ার ঢুকিয়ে দিয়ে তার পেট এফোঁড়-ওফোঁড় করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

সোনালী/জগদীশ রবিদাস