রাবি ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জনের ছাত্রত্ব বাতিলের সুপারিশ
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ ও এক নিরাপত্তা প্রহরীকে মারধরের ঘটনায় প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি। মঙ্গলবার হল প্রাধ্যক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে ঘটনায় জড়িত এক ছাত্রলীগ নেতা ও দুই কর্মীর ছাত্রত্ব বাতিল ও তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন ও তদন্ত কমিটি।
এর আগে ১১ মে হলের অতিথিকক্ষে বসাকে কেন্দ্র করে রাত ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত ছাত্রলীগের দুপক্ষের পালটাপালটি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ছয়টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় দফায় দফায় রামদা ও লাঠিসোঁটা হাতে একে অপরকে ধাওয়া দেয়। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল গেট ও মাদার বখ্শ হলের মধ্যবর্তী স্থানে দুপক্ষ অবস্থান নিয়ে এ হামলা চালায়। পরদিন সকালে তথ্য পাচারের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা আতিকের নেতৃত্বে সানি ও আকাশসহ কয়েকজন সোহরাওয়ার্দী হলের নিরাপত্তাপ্রহরী মনিরুল ইসলামকে মারধর করেন।
১৪ মে সন্ধ্যায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে হল প্রশাসন। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে হলের আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. অনুপম হীরা মণ্ডলকে। বাকি দুজন সদস্য হলেন আবাসিক শিক্ষক ড. ফারুক হোসেন ও তানজিল ভূঞা। তদন্ত কমিটিকে দুই কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলেও দুই সপ্তাহ পর প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে ৮টি সুপারিশ করে কমিটি।
প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, প্রহরী মনিরুলকে বেধড়ক পেটানোর সত্যতা প্রমাণিত হওয়া, সবুজ বিশ্বাসের ওপর নির্যাতন, হল ক্যান্টিনে ৪৬ হাজার ৮২০ টাকা বাকি পরিশোধ না করা, হল প্রশাসনকে হুমকি প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ছাত্রলীগ নেতা আতিকুরের আবাসিকতা বাতিল ও হল ত্যাগের সুপারিশ করা হয়। এছাড়া আতিকের নেতৃত্বে সানি ও আকাশসহ অজ্ঞাত কয়েকজন নিরাপত্তাপ্রহরী মনিরুলকে পেটানোর জন্য তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব বাতিল ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশও করা হয়।
এছাড়া হলে সংঘর্ষের ঘটনা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে অনুসন্ধান করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, সংঘর্ষের ঘটনায় হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা, হলে অবস্থানরত অনাবাসিক ও বহিরাগতদের পুলিশি তল্লাশির মাধ্যমে হল থেকে বের করা, কেউ অবৈধভাবে শিক্ষার্থীকে হলে ওঠালে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, হলে ছাত্রলীগের ‘রুমওয়ার্ক’ বন্ধের জন্য কড়াকড়ি নির্দেশ এবং হলের অতিথি কক্ষে দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা বন্ধের সুপারিশ করা হয়। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক অনুপম হীরা মণ্ডল বলেন, আমরা সবার সঙ্গে কথা বলে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছি। এতে ঘটনার কিছুটা সত্যতা পাওয়ায় আমরা কিছু সুপারিশ হল প্রশাসনের কাছে করেছি।