মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান: পবার ভোটে নতুন সমীকরণ
স্টাফ রিপোর্টার: ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে পবায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৯ মে। গেল ১৩ মে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে পুরোদমে প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা।
পবার ভোটে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পাশাপাশি পুরুষ ভাইস- চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থী নিয়েও আছে নানা সমীকরণ। রাজশাহী জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত এই উপজেলায় কে হতে যাচ্ছে চেয়ারম্যান ও ভাইস- চেয়ারম্যান; তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ!
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, পবা উপজেলায় এবার চেয়ারম্যান পদে ৮ জন, পুরুষ ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ৮ জন ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে এবার প্রার্থী হয়েছেন- আরজিয়া বেগম, চেন বানু, পপি খাতুন ও হাসিনা খাতুন।
এই চারজন ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে এবার নতুন ও তরুণ প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে পা ফেলেছেন পপি খাতুন। পপি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী। নির্বাচনে তিনি প্রতীক পেয়েছেন বৈদ্যুতিক পাখা।
প্রচারণার শুরুর দিকে ছাত্রলীগ নেত্রী পপি নানা কারণে ভোটের মাঠে তেমন প্রভাব বিস্তার করতে না পারলেও সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে বদলাতে শুরু করেছে মাঠের দৃশ্যপট।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের দলীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয় সামাজিক নেতৃবৃন্দ পপির পক্ষে প্রচারণায় নামায় তৈরি হয়েছে নতুন সমীকরণ। এতে মাঠের জরিপে বেশ পিছিয়ে পড়েছেন অন্যান্য মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।
পবার বিভিন্ন ইউনিয়নের ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজনৈতিক কৌশলের কারণে শুরুর দিকে যারা মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে কারও পক্ষে ছিলেন না; তাদের অনেকেই মাঠে নেমেছেন পপির বৈদ্যুতিক পাখার পক্ষে। তাদের যুক্তি, আগামীর বাংলাদেশ যেহেতু তরুণ ও প্রযুক্তি প্রযুক্তি নির্ভর; সেহেতু উক্ত মাইলফলক স্পর্শ করতে তরুণ নেতৃত্বের কোন বিকল্প নেই।
জানা গেছে, পপি খাতুন ছাত্রলীগের রাজনীতির পাশাপাশি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত। তিনি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিন পবা উপজেলার সমন্বয়ক। এছাড়া আরেক সেচ্ছাসেবী সংগঠন দুঃস্থ্য মানবসেবা সংস্থার কোষাধ্যক্ষ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
পপি লেখাপড়ার পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই এসব কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত আছেন। সেবামূলক নানা কার্যক্রমের কারণে উপজেলাজুড়ে তার ইতিবাচক পরিচিতি রয়েছে। সক্রিয় যোগাযোগ আছে সাধারণ মানুষের সঙ্গেও। ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা এবং স্থানীয়ভাবে নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডের কারণে ভোটের মাঠে তিনি বড় ব্যবধানে জয়ী হয়ে যেতে পারেন বলে ধারণা করছেন পবাবাসী।
জানতে চাইলে মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থী পপি খাতুন বলেন, ‘মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তৃণমূলের একজন নারী হিসেবে আমাকে মূল্যায়ন করা হবে বলে আমি শতভাগ আশাবাদী।’
তিনি বলেন, ‘উপজেলা পর্যায় থেকে জনপ্রতিনিধি হলে সাধারণ মানুষের সেবার সুযোগ পাওয়া যায় অনেক বেশি। প্রচারণা করতে গিয়ে পাড়া মহল্লায় দেখলাম, সাধারণ মানুষ পরিবর্তন প্রত্যাশা করছেন। সামাজিক কর্মকাণ্ডের কারণে আমাকে পবার প্রতিটি ইউনিয়নের মানুষ কমবেশি চেনে ও জানে। ফলে নিজেকে যোগ্য ভেবেই এবারের উপজেলা নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
স্মার্ট উপজেলা নির্মাণের প্রত্যয় ব্যক্ত করে পপি খাতুন আরও বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তির এই সময়ে সরকারের উন্নয়ন ও মানুষের সেবা দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন প্রার্থী দরকার। নিজেকে প্রস্তুত করেছি দীর্ঘ সময় ধরে। ভোট করতে গিয়ে মানুষের অগাধ সমর্থন পাচ্ছি। ভাবতে পারিনি; মানুষ আমাকে এতো আপন করে বুকে টেনে নেবে। নির্বাচনে জয়ী হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন কর্মী হিসেবে আধুনিক ও স্মার্ট উপজেলা নির্মাণে আমি কাজ করতে চাই।’
সোনালী/জেআর