যে কারণে ১ যুগের ট্রেন ভাড়া পরিশোধ করলেন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
অনলাইন ডেস্ক: এলজিইডির অবসরপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী বেলাল উদ্দিন (৬৪) ছাত্রাবস্থায় প্রায় ১২ বছর টিকিট ছাড়াই ট্রেনে সোনাতলার বাড়ি থেকে বগুড়া শহরে যাতায়াত করেছেন। বগুড়া শহরের জহুরুলনগর এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাসকারী ওই ব্যক্তি বিবেকের তাড়নায় মঙ্গলবার বিকালে স্টেশনমাস্টার সাজেদুর রহমান সাজুর কাছে হিসাব করে সাত হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন।
৩৭ বছর কর্মজীবন শেষে করে গত ২০২০ সালে বগুড়ার কাহালু এলজিইডি থেকে উপসহকারী প্রকৌশলী হিসেবে অবসরে যান। ২০১০ সালে সপরিবারে হজব্রত পালন করেন। বর্তমানে স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে বগুড়া শহরের জহুরুলনগর এলাকার বাড়িতে বসবাস করেন।
বেলাল উদ্দিন জানান, তিনি ছাত্রাবস্থায় ১৯৭০ সালে ১০ বছর বয়স থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত ২২ বছর বয়স পর্যন্ত ১২ বছর সোনাতলা স্টেশন থেকে ট্রেনে বগুড়া শহরে যাতায়াত করেছেন। এ সময় তিনি অধিকাংশ সময় বিনা টিকিটে যাতায়াত করেছেন। ট্রেন জাতীয় সম্পদ; টিকিট ফাঁকি দেওয়ায় তিনি এখন অনুশোচনা করতে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে আলেমদের সাথে আলোচনা করেন। সে হিসাবে তার ট্রেনের টিকিট না কেটে রেল বিভাগ বা সরকারকে ছয় হাজার ২০০ টাকা ফাঁকি দিয়েছেন। তাই তিনি সাত হাজার টাকা পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত নেন।
তিনি জানান, মঙ্গলবার বিকালে তিনি বগুড়া রেলস্টেশনে মাস্টার সাজেদুর রহমান সাজুর কাছে এসে তার কষ্টের কথা প্রকাশ করেন। এরপর সরকারি কোষাগারে সাত হাজার টাকা জমা দেন।
তিনি আরও বলেন, এখন তিনি ঋণমুক্ত। এ টাকা পরিশোধ না করায় তিনি অনেক অনুশোচনায় ভোগেন। শেষে স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে ঋণ পরিশোধর সিদ্ধান্ত নেন। বেলাল উদ্দিন দেশের সব জনগণকে ট্রেনে বিনা টিকিটে যাতায়াত না করতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
বগুড়ার স্টেশনমাস্টার সাজেদুর রহমান সাজু জানান, এলজিইডির অবসরপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী বেলাল উদ্দিনের এ মানবতার বিষয়টি অনেক স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তার ওই সাত হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অনেকে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করে থাকেন; যা কখনও উচিত নয়। বিবেকের তাড়নায় এর আগেও এক নারী ১০ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন।
সোনালী/ সা