ঢাকা | নভেম্বর ২৫, ২০২৪ - ১২:৪৭ অপরাহ্ন

সহিংসতামুক্ত নির্বাচন চায় আওয়ামী লীগ

  • আপডেট: Tuesday, May 21, 2024 - 12:06 pm

অনলাইন ডেস্ক: উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে মুখোমুখি অবস্থানে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ‘নৌকা’ না থাকায় সংঘাত ও সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ছেন অনেকেই। দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে সংঘাত সৃষ্টিতে কলকাঠি নাড়ছে স্থানীয় কিছু সংসদ সদস্য। স্বজন ও নিজ বলয়ের প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন কেউ কেউ। ভোট কারচুপি, কেন্দ্র দখল ও ফলাফল ঘোষণাসহ নানা বিষয়ে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

এ অবস্থায় দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন সংঘাত-সহিংসতামুক্ত দেখতে চায় শাসক দল। দলের কেউ যেন সংঘাতে জড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য ভোটের সার্বিক পরিবেশ মনিটর করবেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। ইতোমধ্যে দল থেকে বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্যকে দেওয়া হয়েছে সতর্ক বার্তা। নেতারা বলছেন, দলের কেউ প্রভাব বিস্তার করলে এবং সংঘাত-সহিংসতায় জড়িয়ে দলীয় ঐক্য নষ্ট করলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনেক বড়। এই নির্বাচনে প্রার্থীর সংখ্যাও অনেক বেশি । ফলে নির্বাচনের মাঠে বিচ্ছিন্ন কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটে। তবে এগুলো যেন আর না হয়-এ নিয়ে দল কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পরিবেশ এখন পর্যন্ত ভালো ও সুন্দর আছে। প্রথম ধাপে ভোটার উপস্থিতিও অনেক ভালো ছিল। আমরা বিশ্বাস করি দ্বিতীয় ধাপে ভোটার সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন বলেন, প্রথম ধাপের নির্বাচনে কিছু স্থানে সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। দ্বিতীয় ধাপে যেন এমন না হয় সেজন্য দল থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দলের কেউ যাতে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার ও পরিবেশ নষ্ট করতে না পারে-সে বিষয়ে খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। দলের চাওয়া নির্বাচন সংঘাত-সহিংসতামুক্ত হোক। সংঘাতে জড়ালেই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ হয় ৮ মে। এতে ভোট কারচুপি, কেন্দ্র দখল, ফলাফল ঘোষণাসহ নানা বিষয়ে অভিযোগ তোলেন পরাজিত প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা। নির্বাচনের আগে-পরে অনেক স্থানে সংঘাত-সহিংসতার ঘটনাও ঘটে। স্বজন ও পছন্দের প্রার্থীদের নির্বাচিত করতে আওয়ামী লীগের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ভোটে প্রভাব বিস্তার করেন স্থানীয় সংসদ সদস্যদের অনেকে। প্রথম ধাপের নির্বাচনে প্রায় ৯ জন স্বজনকে জিতিয়ে আনেন তারা। এছাড়া পছন্দের প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতে অবলম্বন করেন কৌশল। অথচ নির্বাচনে তাদের হস্তক্ষেপ না করতে কঠোর বার্তা দিয়েছিল আওয়ামী লীগ।

বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ও হুমকি-ধমকির মধ্যেই আজ মঙ্গলবার ১৫৬ উপজেলায় দ্বিতীয় ধাপে ভোট। এতে চেয়ারম্যান ৬০৩, ভাইস চেয়ারম্যান ৬৯৩ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫২৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নির্বাচন কেন্দ্র করে কোথাও কোথাও সংঘাত-সহিংসতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন শেষ পর্যন্ত প্রভাবমুক্ত হবে কি না তা নিয়ে শঙ্কায় প্রার্থীরা।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বাকি ধাপগুলোর ভোটগ্রহণ কীভাবে গ্রহণযোগ্য করা যায়, দলীয় এমপি-মন্ত্রীদের প্রভাবমুক্ত রাখা যায়, ভোটার উপস্থিতি বৃদ্ধি করা যায় এবং সংঘাত-সহিংসতা রোধ করা যায়-তা নিয়ে দলের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্তরা কাজ করছেন। কেন দলীয় এমপি-মন্ত্রীরা কেন্দ্রের নির্দেশনা না মেনে প্রভাব বিস্তার করছে, তা নিয়ে অনুসন্ধানে নেমেছেন তারা। তৈরি করা হচ্ছে অভিযুক্তদের তালিকা। ইতোমধ্যে দল থেকে বেশ কয়েকজন এমপিকে সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের মাঠে সংঘাত-সহিংসতা এড়িয়ে চলতে দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভোটের দিন সকাল থেকে এ বিষয়গুলোও পর্যবেক্ষণ করবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।

 

সোনালী/ সা