ঢাকা | ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪ - ২:০৬ পূর্বাহ্ন

অর্ধেক টাকা সাশ্রয়ে নির্মিত হতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার

  • আপডেট: Saturday, May 18, 2024 - 9:00 pm

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী শহরে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার নির্মাণের দাবি ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ আলোচনা চলছিল। অবশেষে সে আলোচনার সমাপ্তি ঘটেছে।

ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের আদলে এবার রাজশাহীতেও নির্মিত হতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার। আজ শনিবার সকালে এই নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছেন রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল।

এই উদ্বোধন উপলক্ষে সকাল দশটায় রাজশাহী শহরের প্রাণকেন্দ্র সোনাদীঘি এলাকায় ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সার্ভে ইনস্টিটিউটের জায়গায় একটি সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

এতে বীর মুক্তিযোদ্ধা, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তাদের সবাইকে নিয়েই শহিদ মিনার নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন চেয়ারম্যান মীর ইকবাল।

এর আগে ২০২০ সালের ১৬ ডিসেম্বর সেখানে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রয়াত প্রধান প্রসিকিউটর ভাষাসৈনিক অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু। তার সেই ভিত্তিস্থাপনের ধারাবাহিকতায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, একই স্থানে রাজশাহী সিটি করপোরেশন কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার কমপ্লেক্স নির্মাণ করতে চেয়েছিল। এ জন্য প্রায় ১৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্পও হাতে নেয়া হয়েছিল। ২০২২ সালের ২৫ নভেম্বর রাজশাহী সিটি করপোরেশন শহিদ মিনারের দরপত্র আহ্বান করে। ২০২৩ সালের ২০ জানুয়ারি কার্যাদেশও হয়। তবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় জেলা পরিষদকে শহিদ মিনার নির্মাণের জন্য সিদ্ধান্ত দেয়। শেষ পর্যন্ত ওই জায়গায় শহিদ মিনার নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সিটি করপোরেশন।

রাজশাহী জেলা পরিষদ জানিয়েছে, এখন জেলা পরিষদ অর্ধেক টাকায় (৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা) সেই কাজ বাস্তবায়ন করছে। ইতিমধ্যে জেলা পরিষদ এই কাজের দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করেছে।

এদিকে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল বলেন, ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপু ভাই আমাকে খুব স্নেহ করতেন। তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আমরা এ কাজটি এগিয়ে নিতে চাই। এর আগে জেলা পরিষদের জায়গায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল করেছে সিটি করপোরেশন। এবার আমরা নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম সভাতেই জেলা পরিষদের এ জায়গায় জেলা পরিষদের উদ্যোগেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার করার সিদ্ধান্ত নেই। শিগগিরই কাজটা শেষ করব।

নাগরিক সমাজের বক্তারা বলেন, রাজশাহীবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশার পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক বছর আগে ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপু যেখানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন, সেখানেই এর নির্মাণকাজ শুরু হলো। ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপু আমাদের কাছ থেকে চির বিদায় নিয়েছেন। কিন্তু তাঁর সংগ্রামী জীবনের অংশ হিসেবে এই কাজটিও আমাদের মাঝে চির অমর হয়ে থাকবে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণকাজের শুভ সূচনার মধ্য দিয়ে রাজশাহীবাসী ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে এদেশের মুক্তিসংগ্রামের সঙ্গে জড়িত প্রতিটি মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা জানালো।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট মজিবুল হক বকু, বীর মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুবুর রহমান, অ্যাডভোকেট সুশান্ত সরকার, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বদিউজ্জামান খায়ের, ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ প্রামাণিক দেবু, রাজশাহী প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক সাইদুর রহমান প্রমুখ।

সোনালী/জগদীশ রবিদাস