ঢাকা | ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪ - ১২:১৪ পূর্বাহ্ন

পা দিয়ে এসএসসি জয় সিয়ামের, শ্রদ্ধাভরে শিক্ষককে স্মরণ

  • আপডেট: Monday, May 13, 2024 - 11:31 am

অনলাইন ডেস্ক: পরীক্ষার খাতায় পা দিয়ে লিখে এসএসসি পাশ করেছে জামালপুরের সরিষাবাড়ীর সিয়াম মিয়া। সে চাপারকোনা মহেশ চন্দ্র স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল।

জন্ম থেকেই দুটি হাত নেই তার। তবে এই প্রতিবন্ধকতা তাকে দমাতে পারেনি। জিপিএ ৩ দশমিক ৮৩ (এ মাইনাস) পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের উদনাপাড়া গ্রামের দিনমজুর জিন্নাহ মিয়ার ছেলে সিয়াম পড়ালেখা শেষ করে সরকারি চাকরিজীবী হতে চায়।

এলাকাবাসী জানান, ২০১৮ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ডোয়াইল ইউনিয়নের উদনাপাড়া ব্র্যাক শিশু নিকেতন স্কুল থেকে অংশগ্রহণ করে পঞ্চম শ্রেণি পাশ করে সিয়াম। এরপর ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয় চাপারকোনা মহেশ চন্দ্র স্কুল অ্যান্ড কলেজে। সেখান থেকেই জেএসসি পরীক্ষাতেও ভালো ফল করে। এবার মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করল সে।

সিয়ামের মা জ্যোৎস্না বেগম বলেন, সিয়ামের ছোট থেকেই স্কুলে যাওয়া, পড়ালেখা করার ইচ্ছে ছিল। ছোটবেলায় ওর বয়সিরা স্কুলে গেলে ওদের সঙ্গে আমাদের না বলেই স্কুলে চলে যেত।

তিনি বলেন, তারপর ওর স্কুলে যাওয়ার আগ্রহ দেখে তাকে স্কুলে নিয়ে যেতাম। ওর জীবনের স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা করা। ও সেটা করছে। এখন সিয়াম এসএসসি পাশ করেছে, খুব খুশি। তবে আমাদের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ার কারণে আমরা ওকে লেখাপড়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছু করতে পারি না। এখন কোথাও ভর্তি করাতে পারব কিনা জানি না।

সিয়াম শেখ বলে, আমার এই পর্যন্ত আসার পেছনে সব থেকে বড় অবদান জাকিয়া সুলতানা ম্যাডামের। তিনি আমাকে পড়ালেখা করার সাহস জুগিয়ে পা দিয়ে আমাকে লেখা শিখিয়েছেন। আমার স্কুলের বন্ধুরা যারা সব সময় আমাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছে। কখনো বুঝতে দেয়নি যে, আমি প্রতিবন্ধী, তাদের জন্যই আমি আজ সফল। আমার ইচ্ছে পড়ালেখা শেষ করে সরকারি চাকরি করব। মা-বাবার মুখে হাসি ফোটাব, দেশের মানুষের সেবা করব।

সিয়ামের শিক্ষক ও চাপারকোনা মহেশ চন্দ্র স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বলেন, সিয়াম আমাদের এখানে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ দেখে বিনা বেতনে তাকে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়িয়েছি। সে যদি আমাদের এখানে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয় তাহলে তাকে বিনা বেতনে পড়ানো হবে।

 

সোনালী/ সা