ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় রাবি কর্তৃপক্ষের উদ্বেগ
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনাকে অপ্রীতিকর উল্লেখ করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ ধরনের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিবাদমান শিক্ষার্থীদের সংযত থাকতে ও পরস্পরের মধ্যে সদ্ভাব প্রতিষ্ঠার প্রতি আহ্বান জানান তারা। তবে এ ঘটনা তদন্তে এখন পর্যন্ত কমিটি গঠন করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিংবা হল প্রশাসন।
সোমবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রণব কুমার পান্ডে সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে সোমবার দুপুরে হল প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকবৃন্দের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আলোচনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর, কোষাধ্যক্ষ অবায়দুর রহমান প্রামানিক, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক তারিকুল হাসান, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক, ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে শনিবার রাতে দুই পক্ষ শিক্ষার্থীর মধ্যে সংঘটিত অপ্রীতিকর ঘটনার ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অনাকাংক্ষিত এই ঘটনার ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনে হল প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকবৃন্দের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আলোচনা হয়। সেখানে পরিস্থিতি নিরসনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিবাদমান শিক্ষার্থীদের সংযত থাকা ও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে পরস্পরের মধ্যে সদ্ভাব প্রতিষ্ঠার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়। একইসঙ্গে হল প্রশাসনের তৎপরতা বৃদ্ধি করতে বলা হয়। এছাড়া যেকোনো পরিস্থিতিতে হল প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করা হয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে বিবাদমান শিক্ষার্থীদের সাথে বৈঠক হয়। তাদেরকে আবাসিক হলসহ ক্যাম্পাসে শান্তি-শৃঙ্খলা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। শিক্ষার্থীবৃন্দ সে বিষয়ে সচেতন থাকাসহ সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
গঠন হয়নি তদন্ত কমিটি
বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ছাত্রলীগের দুইপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনার ইতোমধ্যে ৪০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। তবে ঘটনা তদন্তে এখন পর্যন্ত কোনো কমিটি গঠন করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিংবা হল প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শুধু গভীর উদ্বেগ জানানো হয়েছে। আর হল প্রশাসন বলছে, তারা এ ব্যাপারে আলোচনায় বসবেন। সেখানে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ওই ঘটনায় হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। ইতোমধ্যে বেশকিছু ঘটনা ঘটেছে। সেসব বিষয়ে তারা আজ মঙ্গলবার সভা করবেন। সেখানে সার্বিক বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
গত শনিবার দিবাগত রাত ১১টা থেকে রাত আড়াইটা পর্যন্ত ছাত্রলীগের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় দফায় দফায় রামদা ও লাঠিসোঁটা হাতে একে অপরকে ধাওয়া দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল গেট ও মাদার বখ্শ হলের মধ্যবর্তী স্থানে দুই পক্ষ অবস্থান নিয়ে এ হামলা চালায়।
সংঘর্ষে জড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এবং শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদের পক্ষ।
তবে সংঘর্ষ চলাকালে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারীদের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের হয়ে হামলা চালাতে দেখা গেছে। আবাসিক হল ও ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, অতিথি কক্ষে বসাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।