চারঘাটের পাখা পল্লীতে বেড়েছে কর্মব্যস্ততা
চারঘাট প্রতিনিধি: তীব্র তাপদাহে চারঘাট উপজেলার পাখা পল্লীতে বেড়েছে কর্মব্যস্ততা। হাত পাখা গ্রামীণ জনজীবনের বাংলার ঐতিহ্যের অংশ। সারাদেশে তীব্র তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। এর মধ্যে হচ্ছে বার বার লোডশেডিং এমন সময়ে সাধারণ মানুষ স্বস্তি পেতে হাত বাড়ায় হাতপাখার দিকে।
হাতপাখার শীতল বাতাস ক্লান্ত শরীরে এনে দেয় প্রশান্তি। একদিন-দুদিন নয়, বাঙালির জীবনের সঙ্গে হাতপাখার তৈরি ও ব্যবহার হাজার বছরের। এখনও গ্রাম থেকে শুরু করে শহরের প্রতিটি বাড়িতেই দেখা মেলে নানা কারুকাজ আর রঙ-বেরঙের হাতপাখার ব্যবহার। তালপাতা কেটে রোদে শুকিয়ে আল্পনার সাজে সহজেই এই হাতপাখাটি বানানো হয়। অন্যদিকে তাল পাতা কেটে রোদে শুকিয়ে বাঁশের শলা ও সুতা দিয়ে তৈরি করা হয় এই হাতপাখা।
বৃহস্পতিবার সকালে চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের ফকিরপাড়া গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, প্রতিদিন হাজার হাজার হাত পাখা তৈরি হয় এ জন্যই নাম হয়েছে ‘পাখা পল্লী’। গ্রামের নারী-পুরুষ মিলিয়ে হাতপাখা তৈরি করেই এখন চালাচ্ছে সংসার। গরম আবহাওয়ার কারণে এখন ব্যস্ত সময়পার করছে পাখার কারিগররা।
পাখা বানানো কারিগর ইসমত আরা বলেন, আমার বিয়ের পর শাশুড়ির কাছ থেকে গল্প শুনেছি আমার দাদা শ্বশুরের আমল থেকে এই হাত পাখার কাজ করে আসছে। এই হাত পাখা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি আমরা। আশুরা বেগম বলেন, এই হাত পাখা তৈরি করে আমাদের সংসার চলে। এখন গরমের কারণে অনেক বেশি কাজের চাপ পড়ে গেছে পাখা বানানোর।
পাখা তৈরির কারিগর মুজিবুর রহমান (৫০) জানান, ছোট বেলা থেকেই দেখেছি এলাকার অধিকাংশ মানুষ এই হাত পাখা তৈরির কাছে নিয়োজিত। এমন কি এলাকার শিক্ষার্থীরা হাতপাখা তৈরি করে পড়াশোনা খরচ চালাই। হাত পাখা পাইকারি দরে বিক্রি হয় ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত।
এই পাখা শুধু এলাকায় নয় দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। পাখা পল্লীর কারিগররা জানান, সরকারি সহযোগিতা বা স্বল্প সুদে ঋণ দেয়া হলে এই পেশাকে আরও অনেক বড় আকারে করতে পারবে এই পাখা পল্লীর মানুষরা। সবমিলিয়ে ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে সময় পার করছেন পাখা পল্লীর কারিগররা।
সোনালী/জেআর