ঢাকা | জুন ৮, ২০২৫ - ৮:৪৬ অপরাহ্ন

তীব্র খরায় ঝরছে আম চাষিদের স্বপ্ন

  • আপডেট: Saturday, April 27, 2024 - 1:04 pm

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহ, প্রচণ্ড খরা ও পোকার উপদ্রবে ঝরছে আম চাষিদের স্বপ্ন। কীটনাশক ও পানি দিয়ে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ফলাফল। এমন অবস্থায় ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। দাবদাহ যতোই বাড়ছে আম চাষিদের কপালে চিন্তার ভাজ ততই স্থায়ী হচ্ছে। একমাত্র বৃষ্টি ছাড়া আমের গুটি ঝরা বন্ধের সম্ভাবনা নেই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

গবেষণা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বছর আমের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে ২০ ও ২১ মার্চের বৃষ্টিপাত। এই বৃষ্টিপাতের কারণে আমের মুকুল অবস্থায় ক্ষতি হয়েছে। এরপরে আবার নতুন সংকট তৈরি করেছে দাবদাহ। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে বোটার আঠা শুকিয়ে ঝরছে আমের গুটি। গুটি ঝরা রোধে সেচের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে সকাল ও সন্ধ্যায় পানি স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

রাজশাহী কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে ১৯ হাজার ৬০২ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ২৪ হেক্টর বেশি। চলতি বছর ২ লাখ ৬০ হাজার ১৬৫ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

নগরীর বুধপাড়া, মোহনপুর, পবা, মেহেরচন্ডীর বেশ কিছু এলাকা ঘুরে আমের গুটি ঝরা লক্ষ্য করা গেছে। তবে কিছু কিছু গাছে গুটি শুকিয়ে পাশের আমের সঙ্গে ঝুলে থাকতে দেখা গেছে। এ ছাড়া বেশির ভাগ গাছের আমের গুটি মাটিতে ঝরে পড়ছে। চাষিদের দাবি, ১৫ থেকে ২০ শতাংশ আমের গুটি ঝরেছে।

আম চাষি রাকিবুল বলেন, গেল বছর বাগানের ২২টি গাছের মধ্যে ১৫টি গাছে আম এসেছিল। বাকি গাছগুলোতে নতুন পাতা ছিল। এজন্য এ বছর আম ভালো পাওয়ার প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু এবছরও বাগানে আশানুরূপ ফল আসেনি। যে-সব গাছে ধরেছে সেখানেও টানা গরমের কারণে গুটি ঝরে পড়ছে।

তিনি আরও বলেন বৃষ্টি না থাকায় আমের কিছু রোগ দেখা দিচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে আম গাছের এক ধরনের সাদা পোকা। এই পোকাগুলো থাকলে আমের ক্ষতি হচ্ছে। তবে তাপপ্রবাহের কারণে কয়েকদিন থেকে গাছের গোড়ায় পানি দিচ্ছি। কিছু কিছু আমের গুটি গাছেই শুকিয়ে গেছে। তবে বেশির ভাগ শুকিয়ে ঝরে পড়েছে। এই মুহূর্তে গাছে কীটনাশক স্প্রে করলে আমের গুটির ক্ষতি হবে। ফলে আরও বেশি গুটি ঝরতে পারে। গুটি ঝরা রোধে বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত সেচের বিকল্প নেই। সেচ দিলে আমের গুটি ঝরা অনেকটাই কমে যাবে।

ব্যবসায়ী ইনছান আলী বলেন, বছরে এক মৌসুম আমের ব্যবসা করে আমার সংসার চলে। কিন্তু এবার আমার মাথায় হাত। জানি না সবশেষে কী হবে। তবে এ বছর আমের পরিস্থিতি ভালো না। বৈশাখের অর্ধেক চলে গেল। কিন্তু এখনও বৃষ্টির দেখা নেই।

এ বিষয়ে রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, এ বছর আমের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না। কারণ গাছে আম নেই বললেই চলে। মুকুল অবস্থায় ২০ মার্চের বৃষ্টিপাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমের। এখন তাপদাহে আমের গুটি ঝরছে।  বৃষ্টিপাত না হলে আমের গুটি ঝরা কমবে না। গুটি ঝরা গাছের গোড়ায় সেচ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র পর্যবেক্ষক এসএম গাউসুজ্জামান বলেন, রাজশাহীতে মৌসুমির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে। বাতাসের আর্দ্রতা ১০ শতাংশ। এ ছাড়া সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে এ মাসে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজশাহীতে হালকা বৃষ্টিপাত হতে পারে।

 

সোনালী/ সা

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS