ঢাকা | জুন ৯, ২০২৫ - ৪:০৫ অপরাহ্ন

সালিশে ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা

  • আপডেট: Monday, April 15, 2024 - 9:53 pm

অনলাইন ডেস্ক: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার সোনাতনী ইউনিয়নের বড় চানতারা গ্রামে সালিশে দুপক্ষের কথা কাটাকাটির জের ধরে ইউপি সদস্য জিন্নাহ ফকিরের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের লোকজন চান মোল্লাকে (৭৫) পিটিয়ে হত্যা করেছে। এ হামলা ও মারপিটে চান মোল্লা গ্রুপের আরও ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। রোববার দুপুরে সোনাতনী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড সদস্য জিন্নাহ ফকিরের বাড়িতে সালিশ বৈঠক চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৬০), মেয়ে সালমা খাতুন (৪৫), আয়শা খাতুন (২০), সুলতানা খাতুন (৩০) ও শ্যালক ইউসুফ মোল্লা অভিযোগে জানান, বড় চানতারা গ্রামের লিয়াকত ফকিরের ছেলে সোলায়মান ফকিরের (৩৫) সঙ্গে ৯ বছর আগে সুলতানা খাতুনের বিয়ে হয়। তাদের আব্দুল্লাহ (৬) ও আব্দুল কাদের (৩) নামের দুটি ছেলে আছে। তাদের রেখে আরও দুইটি বিয়ে করে ছোট বউকে নিয়ে ঢাকায় থাকেন সোলায়মান। বড় স্ত্রী সুলতানা ও সন্তানদের কোনো ভরণপোষণ দেয় না। এ বিষয়ে কথা বললে সুলতানাকে মারধর ও নির্যাতন করে। উল্টো বাবার বাড়ি থেকে টাকা পয়সা এনে দিতে মারপিট করে।

দিন দিন তার অত্যাচার নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যাওয়ায় সুলতানা ৭ মাস আগে বাবার বাড়ি এসে আশ্রয় নেয়। ঈদের ১০-১২ দিন আগে সোলায়মান শ্বশুরবাড়ি এসে স্ত্রী সন্তানকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সুলতানা আপস-মীমাংসা ছাড়া এভাবে যেতে রাজি না হওয়ায় সোলায়মান তার বড় ছেলে আব্দুল্লাহকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। অনেক দৌড়ঝাঁপ করেও ছেলেকে ফেরত পায় না।

এর মধ্যে সুলতানার ভাই আব্দুল মজিদ, ভাতিজা মিলন ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসায় সন্তান ফেরত ও বিষয়টি মীমাংসার জন্য দুপক্ষের সম্মতিতে সুলতানার স্বামী সোলায়মানের চাচা সোনাতনী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড সদস্য জিন্নাহ ফকিরের বাড়িতে ওই দিন সকাল ১০টার দিকে সালিশ বৈঠক বসে।

এ সালিশের শেষের দিকে সুলতানার ভাতিজা মিলন মোল্লা বৈঠকের সিদ্ধান্তের রায়ের লিখিত চাইলে ইউপি সদস্য জিন্নাহ ক্ষুব্ধ হয়ে মিলনের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এর জের ধরে জিন্নাহর ছেলে, ভাই, ভাতিজা ও লোকজন অপরপক্ষের ১০-১৫ জনকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন। এ সময় বৃদ্ধ চান মোল্লা হামলাকারীদের ঠেকাতে গেলে তারা তাকেও লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে।

এতে বৃদ্ধ চান মোল্লা ঘটনাস্থলে ঢলে পড়ে মারা যান। এরপর ঘটনা ধামাচাপা দিতে ইউপি সদস্য জিন্নাহ ৫ লাখ টাকায় মীমাংসার চেষ্টা করেন। এতে নিহতের স্বজনরা রাজি না হওয়ায় তারা পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ রাত ১০টায় ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য জিন্নাহ ফকির মোবাইল ফোনে জানান, সালিশ বৈঠকে বিষয়টি মীমাংসিত হওয়ার পরেও সামান্য ভুল বোঝাবুঝিতে এ অপ্রীতিকর ঘটনাটি ঘটেছে। এ বিষয়ে সাক্ষাতে আপনাকে বিস্তারিত জানাব। মোবাইল ফোনে এত কথা বলা যাবে না বলে ফোন কেটে দেন।

শাহজাদপুর থানার ওসি খায়রুল বাসার বলেন, এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে নিহতের বড় ছেলে লালন মোল্লা বাদী হয়ে ইউপি সদস্য জিন্নাহ ফকিরকে প্রধান আসামি করে শাহজাদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। লাশ উদ্ধার করে এদিন সকালে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। আসামিরা সব বাড়িঘর ছেড়ে পলাতক থাকায় এখনো তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

 

সোনালী/ সা

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS