থানায় শ্রমিককে রাতভর চোখ বেঁধে নির্যাতন
অনলাইন ডেস্ক: কুষ্টিয়ার খোকসা থানায় দুই ভাটা শ্রমিককে আটকে রেখে চোখ বেঁধে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার রাতে থানা হাজতে তাদের নির্যাতন করা হয় এবং বুধবার আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তি পেয়ে ভাটা শ্রমিক সুরুজ শেখের অবস্থার অবনতি হলে তাকে খোকসা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন সুরুজ শেখ রোববার জানান, গত সোমবার বাড়ির পাশে তার স্ত্রীর বড়-বোন মাজেদাদের বাড়িতে হৈ চৈ শুনে তিনি সেখানে যান। তিনি জানতে পারেন চার মাস আগে গাজীপুর থাকার সময় মাজেদাকে তার চাচাতো ভাই নজরুল জামিনদার হয়ে একটি এনজিও থেকে ৯০ হাজার টাকা ঋণ তুলে দিয়েছিলেন। মাজেদা কিস্তির টাকা না দেওয়ায় এনজিও’র লোকজন নজরুলকে টাকার জন্য চাপ দেয়। একপর্যায়ে নজরুল বাসায় জিনিসপত্র ফেলে স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে আসেন। নজরুল এ বিষয়ে একাধিকবার চেষ্টা করেও মাজেদার সঙ্গে কথা বলে সুরাহা করতে না পেরে সোমবার মাজেদার বাড়ি হাজির হয়ে ঢাকায় ফেলে যাওয়া মালামালের টাকা দাবি করেন। আলোচনার এক পর্যায়ে মাজেদাকে দিয়ে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করানো হয়। সেই স্ট্যাম্পে তিনি সাক্ষী হয়েছিলেন।
পরে মঙ্গলবার দুপুরে খোকসা থানার এএসআই দেলোয়ার সুরুজ শেখ ও সাব্বির নামে আরেক ভাটা শ্রমিককে আটক থানায় নিয়ে আসেন। থানায় সুরুজ শেখ জানতে পারেন মাজেদার দেবর শাহিন তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ দিয়েছে। থানায় রাত দেড়টার দিকে তার হাত এবং চোখ বেঁধে অকথ্য নির্যাতন শুরু করে পুলিশ। সুরুজ শেখ নির্যাতন সইতে না পেরে পুলিশকে বলেন, এভাবে মারার থেকে আমাকে একেবারে মেরে ফেলেন। পরেরদিন পুলিশ তাদের কোর্টে চালান করে দেয় এবং বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তি পেয়ে সুরুজ শেখ অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন।
খোকসা থানার এএসআই দেলোয়ার হোসেন জানান, সুরুজ শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগের কারণে তাকে ধরে আনা হয়েছিল। নির্যাতনের বিষয়ে জানান, এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সাইফুল সেই রাতে থানায় ছিলেন না।
এসআই সাইফুল জানান, ফাঁকা স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক সই করিয়ে নেওয়ার ঘটনায় খোকসা থানায় ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সেই মামলায় তাদের চালান দেওয়া হয়। নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সোনালী/ সা