বগুড়ার গ্রামে গ্রামে সেমাইয়ের সুঘ্রাণ, কারিগরের ব্যস্ততা
অনলাইন ডেস্ক: বগুড়ার চিকন সেমাইয়ের সুনাম দীর্ঘদিনের। স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি অন্য জেলায় এর চাহিদা রয়েছে। বগুড়া শহরতলির বেজোড়া, কালশিমাটি, শ্যামবাড়িয়া, নিশ্চিতপুর গ্রামে প্রতিবছর রমজান মাসের শুরু থেকে ধুম পড়ে যায় এই সাদা চিকন সেমাই তৈরির।
কালশিমাটি গ্রামের বাবলু মিয়া ২০ বছর ধরে বাড়িতেই পবিত্র শবে বরাতের পর থেকে চিকন সেমাই তৈরির কাজ শুরু করেন। তিনি জানান, ময়দার সঙ্গে পানি মিশিয়ে মেশিনের সাহায্যে তৈরি করা হয় চিকন সেমাই। এরপর রোদে শুকিয়ে বাঁশের তৈরি খাঁচিতে প্যাকেট করে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়। এ বছর ময়দার দাম প্রতি বস্তায় (৩৭ কেজি) ২০০ টাকা কমেছে। তাই খরচও কিছুটা কম হচ্ছে।
বাবলু মিয়া বলেন, দুই বস্তা ময়দা দিয়ে সেমাই তৈরি হয় ৭০ কেজি। পরে ২৫ কেজি করে সেমাই বাঁশের তৈরি খাঁচিতে প্যাকেট করে বিক্রি করা হয়। প্রতি খাঁচি সেমাই পাইকারি বিক্রি হয় ১ হাজার ৩০০ টাকা দরে। কয়েক বছর আগেও রংপুর, দিনাজপুর, সৈয়দপুর, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, রাজশাহীসহ বিভিন্ন এলাকার পাইকারেরা এই গ্রামে আসতেন চিকন সেমাই কিনতে। কিন্তু এখন বিভিন্ন কোম্পানি নিজেরাই কারিগর দিয়ে মেশিন বসিয়ে চিকন সেমাই তৈরি করে নিজেদের নামে বিক্রি করেন। তারপরও বগুড়া শহরের কিছু ব্যবসায়ী এখান থেকে সেমাই কিনে আশপাশের জেলাগুলোতে সরবরাহ করেন।
গ্রামগুলো ঘুরে দেখা গেছে, কমপক্ষে ২০টি বাড়িতে সেমাই তৈরির কাজ চলছে। পানি আর ময়দার মিশ্রণ, রোদে শুকানো, খাঁচিতে প্যাকেটজাত করাসহ বিভিন্ন কাজ করছেন নারীরা। তাঁরা জানান, রমজান মাসে সেমাই তৈরির কাজ করে যে বাড়তি আয় হয়, সেই টাকা দিয়ে ঈদের কেনাকাটা করেন।
কালশিমাটি গ্রামের লাভলী খাতুন ১৯৮৮ সাল থেকে চিকন সেমাই তৈরির কাজ করেন নিজ বাড়িতে। তিনি একসময় বেজোড়া গ্রামে সেমাই তৈরির কাজ করতেন। সেখান থেকে কাজ শিখে নিজেই বাড়িতে মেশিন বসিয়ে প্রতিবছর রমজান মাসে সেমাই তৈরি করেন। তাঁর ছেলে খাঁচিতে ভরে বগুড়া শহরের রাজাবাজারে পাইকারি দোকানে বিক্রি করে আসেন। রমজান মাসে সেমাই তৈরি করে তিনি বাড়তি ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় করেন।
সোনালী/ সা