পায়ুপথ দিয়ে কুঁচিয়া ঢুকে যাওয়া জেলে যেমন আছেন
অনলাইন ডেস্ক: পায়ুপথ দিয়ে পেটে ‘কুঁচিয়া’ (ইলফিস) ঢুকে যাওয়া সেই জেলের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রায় ২৫ ইঞ্চি লম্বা জীবন্ত ‘কুঁচিয়া’ বের করার পর চিকিৎসকরা সমরা মুন্ডা (৫৫) নামের ওই জেলেকে শঙ্কামুক্ত ঘোষণা করেছেন। আরও কয়েকদিন পর্যবেক্ষণে রেখে তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। তবে দুই মাস পর সমরা মুন্ডার পেটে আরও একটি অস্ত্রোপচার লাগবে বলে জানিয়েছেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কাজী জানে আলম। সমরা মুন্ডা মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর মির্তিঙ্গা চাবাগান এলাকার ধন মুন্ডার ছেলে। তিনি সরকারি কার্ডধারী একজন জেলে। গত রবিবার রাতে ওসমানী হাসপাতালে প্রায় তিন ঘণ্টা অস্ত্রোপচার করে সমরা মুন্ডার পেট থেকে জীবন্ত কুঁচিয়াটি বের করেন চিকিৎসকরা।
জানা গেছে, গত শনিবার হাওরে কুঁচিয়া ধরতে যান সমরা। দুই হাতে দুটি কুঁচিয়া ধরাবস্থায় তিনি কাদায় আটকে যান। এ সময় একটি কুঁচিয়া তার প্যান্টের ভিতর ঢুকে যায়। তখন তিনি অনুভব করেন পায়ুপথ দিয়ে কিছু ঢুকছে। কিন্তু বিষয়টি তিনি আমলে নেননি। রাতে প্রচণ্ড পেট ব্যাথা শুরু হলে তাকে প্রথমে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে মৌলভীবাজার জেলা সদরে নেওয়া হয়। সেখান থেকে পাঠানো হয় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সমরার তলপেটে অস্বাভাবিক কিছু একটার অস্তিত্ব খুঁজে পান চিকিৎসকরা। এরপর রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালের সার্জারি ইউনিট-২ এর প্রধান ডা. জানে আলমের নেতৃত্বে চারজন চিকিৎসক অস্ত্রোপচার করে তার পেট থেকে জীবন্ত কুঁচিয়া বের করে আনেন। চিকিৎসক দলের সদস্য রাশেদুল ইসলাম জানান, ওই রোগী হাসপাতালে ভর্তির পর তার প্যান্টের ভিতর কুঁচিয়া ঢোকার কথা জানালেও পায়ুপথ দিয়ে তা পেটে যাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলেন না। পরে অস্ত্রোপচার করে প্রায় ২৫ ইঞ্চি লম্বা জীবন্ত কুঁচিয়া বের করা হয়।
চিকিৎসকরা জানান, জীবন্ত কুঁচিয়া সমরা মুন্ডার পেটের ভিতরে ছিদ্র করে ফেলেছিল। যার কারণে মারাত্মক ঝুঁকিতে ছিলেন তিনি। অবশ্য চিকিৎসকরা সফলভাবে অস্ত্রোপাচার করে এটি বের করে নিয়ে আসতে পেরেছেন। এ ধরনের ঘটনা বিরল ও অবিশ্বাস্য বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সমরার শারীরিক অবস্থা এখন অনেক ভালো জানিয়ে চিকিৎসকরা বলেন, এখন তার কোনো অক্সিজেন সার্পোট লাগছে না।
সমরা মুন্ডার অবস্থা প্রসঙ্গে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কাজী জানে আলম বলেন, তার শারীরিক অবস্থা অনেকটা স্বাভাবিকের পথে। তবে আরও কিছুদিন পর্যবেক্ষণে রেখে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হবে। তবে দুই মাস পর তার আরও একটি অস্ত্রোপচার লাগবে।
সোনালী/ সা