ঢাকা | মে ১, ২০২৫ - ১১:২০ অপরাহ্ন

শিরোনাম

রোজার শুরুতেই ফলের বাজারে উত্তাপ

  • আপডেট: Thursday, March 14, 2024 - 4:00 pm

জগদীশ রবিদাস: নিত্যপণ্যের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। কমবেশি সব পণ্যের দামই এখন বল্গাহীন। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। এ মাসে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে আরও বেশি। এর প্রভাব থেকে বাদ যায়নি ইফতারের অন্যতম পদ রসালো ফলের বাজারও। রমজানের শুরুতেই উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে রাজশাহীর দেশি-বিদেশি ফলের বাজারে।

অন্য সময়ের তুলনায় রমজানে বিভিন্ন ফলের চাহিদা বেশি থাকলেও দামের কারণে ক্রেতার নাভিশ্বাস। গতকাল বুধবার বাজার ঘুরে দেখা গেছে- পাঁচ টাকা থেকে শুরু করে কেজিতে ৮০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে কোনো-কোনো ফলের দাম। দাম নাগালের বাইরে হওয়ার কারণে ফল কেনা থেকেই বিরত থাকছেন অনেক ক্রেতা।

ক্রেতারা দাবি করছেন, রমজান মাস শুরু হওয়ায় ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে ফলের দাম বাড়িয়েছেন। বিদেশি ফলের দাম এমনিতেই অনেক বেশি। রমজানে বিদেশে ফলের সাথে দেশি ফলের দামও বেড়েছে। শুধু পত্র-পত্রিকায় বক্তব্য না দিয়ে সরকারের উচিত; সব ধরনের বাজার তদারকি কার্যক্রম পুরোপুরি কার্যকর করা।

এতে নিম্ন-মধ্য আয়ের মানুষ রমজান মাসে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে থাকতে পারবে। খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, ফলের দাম বাড়ার পেছনে আড়তদাররা দায়ী। তাদের সিন্ডিকেটের কারণে পাইকারিসহ খুচরা বিক্রেতাদের বাড়তি দামে ফল কিনতে হচ্ছে। মূলত এ কারণেই উত্তাপ ফলের বাজারে।

সরেজমিনে রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কমলা, আপেল, আঙুর, পেপে, মালটা, বরই, খেজুর, আনারস, পেয়ারা, আতা, তরমুজ, মাল্টা, গাজর, শসা, সপেতা, কলাসহ রমজানে যেসব ফল বেশি বিক্রি হয়; তার প্রায় সবগুলোরই দাম বেড়েছে। এর মধ্যে খেজুরের দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকার নিচে বাজারে কোন খেজুর নেই! খেজুরের মতো বেড়েছে আপেলের দামও। মান ভেদে প্রতি কেজি আপেলের দাম ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, যা কিছুদিন আগেও ছিল ২৫০ টাকার নিচে।

প্রতি কেজি আঙুর বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। কিছুদিন আগেও যা পাওয়া যেত ২২০ থেকে ২৫০ টাকায়। কমলার দাম যেখানে প্রতি কেজি আগে ছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা। অষ্ট্রেলিয়ান কমলা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়। মালটার দামও বেড়েছে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। প্রতি কেজি মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত।

শুধুমাত্র বেদেশি নয়; রমজান মাসে বেড়েছে বিভিন্ন দেশি ফলের দামও। রমজানে আঙুর-আপেলের পরিবর্তে দেশি ফল বরই-পেয়ারা দিয়ে ইফতার করার পরামর্শ দিয়ে সম্প্রতি সমালোচনার মুখে পড়েন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। কিন্তু বাজারে সেই দেশি ফলও জন সাধারণের নাগালের বাইরে। রাজকলম বরই প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে। আপেল বরই ৫০ থেকে ৬০ টাকা। বড় সুন্দরী বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে। কিছুদিন আগে যে পেপের দাম ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, তার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০ টাকা। পাকা বেল প্রতি পিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা।

আনারস প্রতি কেজি ৮০ টাকা। সপেতা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি দরে। আতা ১৫০ টাকা। প্রতি কেজি কেশর বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। গাজর বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। বিট বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। কিছুদিন আগেও এসব দেশি ফলের দাম গড়ে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কম ছিল।

বাজারে ফলের দাম বেশি হওয়ায় বিক্রি তেমন হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা। শহরের সাহেব বাজারের ভ্যানে ফল বিক্রি করেন হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, সব ফলের দাম বেশি। তাই রমজান মাস চললেও একদম প্রয়োজন ছাড়া ফল বেশি করে কেউ কিনছেন না। কেউ হয়তো রোগী দেখতে যাচ্ছেন, বা ইফতারের জন্য যেটুকু না হলেই নয়- সেটুকু কিনছেন। তবে সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, রমজান মাস এলেই দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। ফলে ইচ্ছে থাকলেও প্রয়োজনীয় সব ফল কেনা সম্ভব হয় না।

এ বিষয়ে মাইদুল নামের এক ক্রেতা বলেন, দাম বাড়ছেই। কমার নাম নেই। আমাদের দেশে দাম বাড়ে, কিন্তু কমতে চায় না। আসলে কিছুই করার নেই। রোজার মাস, ফলতো কিছু কেনা লাগবেই। সানোয়ার হোসেন নামের আরেক ক্রেতা বলেন, আঙুরের দাম কয়েকদিন আগেও কম ছিল। এখন দেখছি দাম বেড়ে গেছে। কাল-পরশু আবার হয়তো এর চেয়ে বেশি দামে কিনতে হবে। রেলগেটে নজরুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, দেশি-বিদেশি সব ধরনের ফলের দামই এখন বাড়তে। রোজা এলেই প্রায় সব পণ্যেরই দাম বাড়ে। কিছু করার নেই। ফলের অবস্থাও তাই হয়েছে।

সোনালী/জেআর

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS