ঢাকা | নভেম্বর ২৫, ২০২৪ - ৪:৪৩ অপরাহ্ন

প্রথমবার ভারত-চীনের কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞা

  • আপডেট: Thursday, February 22, 2024 - 9:45 pm

অনলাইন ডেস্ক: ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের প্রতিবাদে রাশিয়াকে একঘরে করার চেষ্টার অংশ হিসেবে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং তাদের পশ্চিমা মিত্ররা। রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছিলেন তারা। এর পরও তেমন অসুবিধায় পড়েনি রাশিয়া।

ভারত, চীন, উত্তর কোরিয়া, বেলারুশসহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে তারা বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করে। এরপর রুশ জ্বালানি তেলের অন্যতম ক্রেতায় পরিণত হয় ভারত ও চীন। এবার প্রথমবারের মতো এ দুই দেশের কয়েকটি কোম্পানিকে টার্গেট করেছে ইইউ। তবে দুটি দেশের বড় কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। পাশাপাশি তারা রাশিয়া, বেলারুশ ও উত্তর কোরিয়ার প্রায় ২০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে।

বৃহস্পতিবার ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। এতে বলা হয়, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার নতুন প্যাকেজ ঘোষণা করতে সম্মত হয়েছে ইইউ। সেসঙ্গে মস্কোর যুদ্ধ-প্রচেষ্টায় সহায়তার জন্য ভারত ও চীনের কোম্পানিকে দোষারোপ করা হয়েছে। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর এটা ইইউর দেওয়া ১৩তম নিষেধাজ্ঞা।

এ প্রসঙ্গে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন দের লেয়েন বলেন, তারা অবশ্যই ভ্লাদিমির পুতিনের যুদ্ধযন্ত্রকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করে যাবেন। তারা ক্রেমলিনের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখবেন।

গত সপ্তাহে সাইবেরিয়ার কারাগারে মারা যান রাশিয়ার বিরোধী দলের নেতা আলেক্সি নাভালনি। তিনি প্রেসিডেন্ট পুতিনের কঠোর সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এ মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশটির ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া নিয়ে আলোচনা করেছেন ইইউ কর্মকর্তারা।

যে কারাগারে নাভালনি মারা গেছেন, সেটির ছয় কর্মকর্তার ওপর এরই মধ্যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। চীন ও ভারতের কোম্পানিগুলোকে টার্গেট করা হয়েছে ইইউ ও জি৭ দেশগুলোর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে। এ দেশগুলো চাচ্ছে অন্য দেশগুলোকে কাজে লাগিয়ে রাশিয়ার ওপর আরও চাপ প্রয়োগ করতে।

বুধবার ব্রাসেলসে ইইউর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে চীনা কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে সদস্য দেশগুলোর চাপের মুখে পড়ে ইইউ। তবে চীনের মূল ভূখণ্ডের কোনো কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। এ নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতায় জার্মানিকে অবস্থান নিতে দেখা যায়।

পশ্চিমা দেশগুলোর এসব নিষেধাজ্ঞার পরও রাশিয়াকে দমিয়ে রাখা যাচ্ছে না। দেশটি ক্রমাগত ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র, ট্যাঙ্ক ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জামের উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির হাতে আসা তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করছে– এমন দেশগুলোর মধ্যে চীনের মূল ভূখণ্ডের তিনটি এবং ভারতের একটি কোম্পানিকে টার্গেট করেছে ইইউ।

এ ছাড়া শ্রীলঙ্কা, তুরস্ক, থাইল্যান্ড, সার্বিয়া ও কাজাখস্তানের ব্যবসায়ীদেরও টার্গেট করা হয়েছে। রাশিয়াকে যন্ত্র সরবরাহ– বিশেষ করে বৈদ্যুতিক, মাইক্রোচিপ দিয়ে অস্ত্র তৈরিতে সহায়তার প্রমাণ পাওয়া গেলে টার্গেটে থাকা ব্যবসায়ীরা বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসতে পারেন।

ইউরোপের দেশগুলোর জোট নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন দিলেও এখনও ব্যক্তি এবং কোম্পানির নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেনি। শিগগিরই এগুলোর নামসহ বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে।

নতুন এ পদক্ষেপের মাধ্যমে ইউক্রেনে আগ্রাসনের প্রতিবাদে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা রাশিয়ার প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় দুই হাজারে দাঁড়াল। গত সপ্তাহে হাঙ্গেরি এ নিষেধাজ্ঞার বিরোধী অবস্থান থেকে সরে আসে। এর মাধ্যমে এটি অনুমোদনের পথ প্রশস্ত হয়।

ব্রাসেলসে ইইউর বৈঠকে রুশ টেক জায়ান্ট ইয়ান্ডেক্সের প্রতিষ্ঠাতা আর্কেডি ভলোঝের ওপর নিষেধাজ্ঞা নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভলোঝে সম্প্রতি ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানান এবং এটা ‘বর্বর’ বলে বর্ণনা করেন। তিনিই প্রথম রুশ ব্যক্তি যিনি নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত হতে যাচ্ছেন। গত বছর যুক্তরাজ্য রুশ ব্যবসায়ী ওলেজ টিনকভকে নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি দেয়।

সোনালী/জেআর