ঢাকা | জুলাই ২৬, ২০২৪ - ২:৩৩ অপরাহ্ন

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের শক্তিশালী উদাহরণ রাজশাহী-মুর্শিদাবাদ নৌপথ

  • আপডেট: Monday, February 12, 2024 - 10:00 pm

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের যে রূপান্তরমূলক পরিবর্তন ঘটেছে তার আরেকটি শক্তিশালী উদাহরণ হচ্ছে রাজশাহী-মুর্শিদাবাদ নৌপথ।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততার দ্রুত বৃদ্ধি এবং আমাদের কানেক্টিভিটি লিঙ্কে এই রূপান্তরটি সবচেয়ে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান।’’

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সুলতানগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন ভারতের হাইকমিশনার।

বাংলাদেশ-ভারত অভ্যন্তরীণ নৌপথ অতিক্রমণ ও বাণিজ্য প্রটোকলের আওতাভুক্ত সুলতানগঞ্জ পোর্ট অব কলের উদ্বোধন উপলক্ষে এ সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিতা কেটে এবং বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে নৌবন্দরের উদ্বোধন করা হয়।

রাজশাহী-মুর্শিদাবাদ নৌপথ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে  প্রণয় ভার্মা বলেন,  ‘‘আজকের এই নদীপথের সূচনা সেই দিকে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। এটি কেবল সীমান্তের উভয় পাশের স্থানীয় অর্থনীতির জন্যই উপকৃত হবে না, বৃহত্তর উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং একীকরণের জন্য বিল্ডিং ব্লক তৈরি করার সময় আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতেও অবদান রাখবে।’’

সুধী সমাবেশে প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘‘আমাদের অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধি পরস্পরের সাথে জড়িত। উভয় পক্ষের দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছার কারণে আমরা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যোগাযোগের ল্যান্ডস্কেপ দ্রুত পরিবর্তন করছি। আমাদের সংলগ্ন ভূগোল এবং ভাগ করা ইতিহাস ও সংস্কৃতির সাথে, আমরা আসলে আমাদের দুটি দেশকে আবার সংযুক্ত করছি।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমাদের নদীগুলো আমাদেরকে যুগ যুগ ধরে সংযুক্ত করেছে। আমরা এখন আমাদের অর্থনীতি এবং আমাদের জনগণকে সংযুক্ত করার জন্য নদীর শক্তিকে নতুন করে আবিষ্কার করছি। অভ্যন্তরীণ জলপথ বাণিজ্য ও ট্রানজিটের প্রোটোকল (পিআইডব্লিউটিটি) আমাদের ভারত ও বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থাকে পারস্পরিক সুবিধার জন্য ব্যবহার করতে এগিয়ে যেতে সাহায্য করছে।’’

ভারতের হাইকমিশনার বলেন, ‘‘ভারত এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার জন্য ক্রমাগত পদক্ষেপ নিচ্ছে। বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে জ্ঞান অর্থনীতি দ্বারা চালিত একটি উন্নত দেশ “স্মার্ট বাংলাদেশ” হয়ে উঠতে আকাঙ্ক্ষা করছে। ভারত ২০৪৭ সালের মধ্যে বিশ্বের উন্নত অর্থনীতির সারিতে যোগদান করে “বিকশিত ভারত” হতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। উন্নয়নের এই ওভারল্যাপিং দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের সহযোগিতার জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করে আমাদের নতুন ক্ষমতা এবং নতুন আকাঙ্ক্ষার উপর নির্মিত।’’

সোমবার বেলা সোয়া ১১টায় ৫৯ বছরের অপেক্ষা শেষে সুলতানগঞ্জ-মায়া নৌবন্দরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। এর পর সাড়ে ১১ টন গার্মেন্টস জুট নিয়ে একটি নৌযান সুলতানগঞ্জ নৌবন্দর থেকে ভারতের মুর্শিদাবাদের উদ্দেশে রওনা হয়।

এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহীতে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাইকমিশনার মনোজ কুমার, রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ, রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কালাম আজাদ, রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্মসচিব সেলিম ফকির বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আগ পর্যন্ত সুলতানগঞ্জ-মায়া গোদাগাড়ী-ভারতের লালগোলা নৌঘাটের মধ্যে নৌপথে বাণিজ্য চালু ছিল। পরে রুটটি বন্ধ হয়ে যায়। সোমবার বাংলাদেশের রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা সীমান্তের সুলতানগঞ্জ নৌবন্দরটি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সুলতানগঞ্জ ঘাটটি নদীবন্দরের মর্যাদা পেল।

সোনালী/জগদীশ রবিদাস