বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য মোকাবেলায় ওয়ার্কার্স পার্টি প্রস্তুত
আগুন সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে ২০১৩-১৪ সালের মত কর্মসূচির নামে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের মিত্ররা যদি আবারও নৈরাজ্য ও আগুন সন্ত্রাস করার অপচেষ্টা চালায় তবে তা রাজপথে প্রতিহত করার জন্য সাংগঠনিকভাবে ওয়ার্কার্স পার্টি প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন দলটির মহানগরের নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার বিকালে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ থেকে তারা এ কথা জানান। সম্প্রতি ঢাকায় বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডব, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র, প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুর ও পুলিশ হাসপাতালে দেয়া আগুন সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবিতে এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে ওয়ার্কার্স পার্টি।
বিকাল সাড়ে চারটায় শহরের সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়। শহরের গুরুত্বপূর্ণ প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শেষে মিছিলটি আবারও দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সমাবেশ করেন ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা।
সমাবেশে দেয়া বক্তৃতায় ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা বলেন, বিএনপি-জামায়াত তাদের বিদেশি প্রভুদের কাছে ধরনা ধরে কোন কুল-কিনারা করতে পারেনি। তথাপি তারা এখন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের আশ্রয় নিয়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র। এখানে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশ ও কর্মসূচি পালনের অধিকার আছে। কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের দেয়া কর্মসূচির মধ্যে আমরা কোন গণতন্ত্র ও মানবিকতা খুঁজে পাইনি। তারা পুলিশকে পিটিয়ে মারছে। গরিব মানুষের জানমালের ক্ষতি করছে। এমনকি ওরা রাষ্ট্রের অন্যতম সর্বোচ্চ ব্যক্তি প্রধান বিচারপতির বাড়িও ভাঙচুর করেছে। আমরা জানি না, তারা এত বড় ধৃষ্টতা কোথায় থেকে পেল! ওয়ার্কার্স পার্টি তাদের এমন নোংরা ও জঘন্য কর্মসূচিকে ঘৃণা করে। শান্তিপ্রিয় রাজশাহীতে যদি তারা এ ধরনের কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর অপচেষ্টা চালায়; তবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের দাঁতভাঙা জবাব দেয়ার জন্য ওয়ার্কার্স পার্টি সবসময় প্রস্তুত রয়েছে।
বিএনপির অবরোধ কর্মসূচিতে রাজশাহীর প্রেক্ষাপট তুলে ধরে মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা আরও বলেন, রাজশাহীতে ওয়ার্কার্স পার্টিসহ ১৪ দল ঐক্যবদ্ধ ও সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী। জনস্বার্থে আমরা রাজশাহীর রাজপথ দখলে রেখেছি বলেই এখানে বিএনপি-জামায়াত এখনো কোন তাণ্ডব চালানোর সুযোগ পায়নি। রাজশাহীতে তারা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে না পারার কারণ হচ্ছে; রাজশাহীবাসী তাদের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। জনগণ তাদের সঙ্গে নেই। বিএনপি-জামায়াত তাদের রাজনীতিকে “সন্ত্রাসের রাজনীতিতে” পরিণত করার কারণেই তারা জনসমর্থন হারিয়েছে। তবে আমাদের আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না। বিএনপি হচ্ছে সাপ। আর জামায়াত হচ্ছে তাদের বিষ। তারা একত্রিত হয়ে যেকোনো মুহূর্তেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিসহ জনগণকে ছোবল দিতে পারে। তাই সার্বক্ষণিক আমাদের সাংগঠনিক প্রস্তুতি সমুন্নত রাখতে হবে।
রাজশাহীতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশার নেতৃত্বে রাজশাহী শান্তির নগরীতে পরিণত হয়েছে। আমরা এই শান্তির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে চাই। আগামীতে নির্বাচন আসছে। এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি, রাজশাহীর মানুষ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সঙ্গেই রয়েছে। তবুও যেহেতু মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে, সেহেতু আমরা আহ্বান জানাবো; রাজশাহীতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তি আরও জোরালোভাবে ঐক্যবদ্ধ হন। আমরা সকলে যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি, তবে কখনোই বিএনপি এবং জামায়াত রাজশাহীকে রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল করতে পারবে না।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম পিয়ারুল। বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ প্রামাণিক দেবু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আশরাফুল হক তোতা, মহানগর সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাদরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল মতিন, নাজমুল করিম অপু, মহানগর কমিটির সদস্য সীতানাথ বনিক, আব্দুল খালেক বকুল, মাসুম আক্তার অনিক, মোশারফ হোসেন, জেলা কমিটির সদস্য রমজান আলী সাধু, মহানগর ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি ওহিদুর রহমান প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন মহানগর সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মনির উদ্দিন পান্না।