নির্বাচন নস্যাৎ করতে চাইলে সমুচিত জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি ১৪ দলের
ভোট পর্যন্ত রাজপথে থাকার ঘোষণা
সোনালী ডেস্ক: বিএনপি-জামায়াত আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নস্যাৎ করার অপচেষ্টা চালালে সমুচিত জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় নেতারা। সোমবার বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে কেন্দ্রীয় ১৪ দল আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে জোটের নেতারা এই হুঁশিয়ারি দেন।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত ২০১৪ সালে স্কুল পুড়িয়েছিল, এবার হাসপাতালে হামলা করেছে। তারা নির্বাচন নস্যাৎ করতে চাইলে সমুচিত জবাব দেয়া হবে। তারা (বিএনপি-জামায়াত) সংবিধানের ওপর আঘাত করছে, গণতান্ত্রিক ধারার ওপরে আঘাত করছে। আমাদের সজাগ থাকতে হবে। ১৪ দলের নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাব। আমরা নির্বাচন ঐক্যবদ্ধভাবে করব, সেই সরকার আগামী দিনে দেশ পরিচালনা করবে।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, আমেরিকা বাংলাদেশের মানুষের ওপর তাণ্ডব চালাতে চায়। ঠিক যেমন ফিলিস্তিনে চালাচ্ছে। গত ২৮ অক্টোবরের ঘটনা মনে করিয়ে দেয়, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর। তারা বদলা নিতে এসব করেছে। তাই বিএনপি রাজপথে নয়, লেজ গুটিয়ে পালিয়ে যাবে।
১৪ দলীয় জোটের আরেক নেতা ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সমর্থক জো বাইডেনের প্রতিনিধি, বিএনপির নব্য উপদেষ্টা পিটার হাস বিএনপির ওকালতি করছে। পিটার হাস আর রাষ্ট্রদূত হওয়ার মর্যাদা রাখে না। কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন ও দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে যোগ্যতা হারিয়েছে। অবাঞ্ছিত ঘোষণা করুন। বন্ধু রাষ্ট্র আমেরিকার কাছে নতুন রাষ্ট্রদূত চাই।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের ঢাকা মহানগরের সমন্বয়ক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, আপনারা রাজপথে থাকবেন তো? বিএনপি-জামায়াতকে পরাজিত করতে পারবেন? তারা আবার তিন দিনের কর্মসূচি দিয়েছে। তারা যদি আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীদের গায়ে হাত দেয় তাহলে বাংলাদেশ থেকে তাদের বিতাড়িত হতে হবে।
জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য-বেশি বিদেশি চক্রান্ত চলছে। বিএনপির টেইক ব্যাক বাংলাদেশ মানে হলো, বাংলাদেশকে আবারও দুর্ভিক্ষে ও অন্ধকারে ফিরে যেতে হবে। সুতরাং আগামী নির্বাচনে তাই সবাইকে উন্নয়ন ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিতে আহ্বান জানাব।
সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, আমেরিকা ও জামায়াত বাংলাদেশের একটি অপশক্তি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলছে বিএনপি। কিন্তু তারা জানে না কেমন হবে সেই সরকার। এবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে চার পাঁচ বছরের জন্য। আমাদের দেশকে বানানো হবে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের চাটুকার। তাই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের অপশক্তিকে প্রতিহত করে আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, গত ২৮ তারিখ তারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়েছে। তারা প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা করেছে। ঠিক যেন ইসরায়েলি বাহিনী রূপে আবির্ভূত হয়েছে। বিএনপিকে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি অ্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের শান্তি ফিরিয়ে আনতে বিএনপি-জামায়াত অপশক্তিকে চিরদিনের জন্য পরাজিত করতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), গণআজাদী লীগ, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, কমিউনিস্ট কেন্দ্র, বাংলাদেশ গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলসহ ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।