ঢাকা | নভেম্বর ২৮, ২০২৪ - ৭:৩৯ অপরাহ্ন

হিমালয়ে দেশের পতাকা উড়ালেন রাজশাহী বিভাগের ছেলে

  • আপডেট: Monday, October 30, 2023 - 5:15 pm

অনলাইন  ডেস্ক: হিমালয়ের নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে বরফ রাজ্য। উঁচু উঁচু সব পর্বত। এভারেস্ট, কাঞ্চনজঙ্ঘা, লোৎসে, অন্নপূর্ণাসহ আরও কত জানা-অজানা চূড়া। এমনকি এই হিমালয়েই রয়েছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ স্থান।

প্রতি বছর সৌন্দর্যের টানে হিমালয় দেখতে ছুটে যান হাজারো ভ্রমণ পিপাসু। এর মধ্যে কিছু মানুষ পর্বতচূড়ার নেশায় পড়েন। এ এক প্রবল নেশা, যা মৃত্যুকেও হার মানায়।

হিমালয়ের বুকে দাঁড়িয়ে থাকা ওই চূড়াগুলো স্পর্শ করার নেশাই মানুষকে পর্বতারোহী করে তুলে। তেমনই এক পর্বতারোহী চলনবিলের সন্তান তরুণ আহসানুজ্জামান তৌকির (২৭)। পাবনার চাটমোহর পৌর সদরে বেড়ে উঠা এই তরুণ পেশায় একজন প্রকৌশলী হলেও পর্বত আরোহণে তার রয়েছে বেশ কিছু সফলতা।

হিমালয়ের চার, পাঁচ ও ছয় হাজার মিটার উচ্চতায় শুধু লাল-সবুজের মানচিত্রকে নয়। বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। তৌকির গত বছর হিমালয়ের এভারেস্ট, খুম্বু রিজিওনের ছয় হাজার ১৬৫ মিটার আইল্যান্ড পিকের অভিযান সফলভাবে সমাপ্ত করেন। এর মাধ্যমে তিনি ছয় হাজার মিটার পর্বতারোহী ক্লাবের সদস্য হন। এই অভিযানে সহযোগিতায় ছিল রোপ ফোর, মিশন হিমালয়া ও আরপিএসএফ।

স্বপবাজ এই তরুণ পর্বতারোহীর এবারের অর্জন আরও বড়। গত ১৯ এবং ২১ অক্টোবর তিনি দু’টি পর্বতচূড়া আরোহণ করেন। ১৯ অক্টোবর বিকেল ৫টা ১৬ মিনিটে খুম্বু রিজিওনের পাঁচ হাজার ৭৬ মিটার উচ্চতার নাগা অর্জুন। ২১ অক্টোবর সকাল ৮টা ২১ মিনিটে ছয় হাজার ১১৯ মিটার উচ্চতার লবুচে পিক পর্বতের চূড়ায় আরোহণ করে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছেন তৌকির।

লবুচে হাই ক্যাম্প থেকে সামিট শেষ করে আবার হাই ক্যাম্পে ফিরতে তিনি মাত্র ১০ ঘণ্টা ৫০ মিনিট সময় নেন। এ বছর তার ঝুলিতে আরও একটি অর্জন যুক্ত হয়েছে। তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে কমার্শিয়াল এক্সপেডিশনের দলনেতা হয়ে একটি সফল ছয় হাজার মিটার অভিযান সম্পন্ন করেছেন।

অনুভূতি জানতে চাইলে তৌকির জানান, ‘হিমালয়ের সবগুলো পর্বতের সব অভিযানই কষ্টকর। প্রচণ্ড ঠান্ডা এবং ঝুকিপূর্ণ ক্লাইম্বিং শেষে যখন নিজ দেশের পতাকা উড়িয়েছি। তখন সব কষ্ট নিমিষেই আনন্দে পরিণত হয়েছে।’

তরুণ এই পর্বতারোহীর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে তিনি জানান, আগামী বছর হিমালয়ের অন্যতম কঠিন পর্বত মাউন্ট আমা দাবালাম অভিযানে যাবেন। এর জন্য প্রয়োজন পৃষ্ঠপোষকতা। সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই অভিযান আরও সহজ হবে বলে মনে করেন তিনি। তৌকির আরও জানান, ২০২৫ সালে তার মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানের পরিকল্পনা রয়েছে।

সপ্নবাজ এই তরুণ বর্তমানে নেপালে অবস্থান করছেন আরও একটি অভিযানের জন্য। অভিযান শেষে আগামী ৯ নভেম্বর তিনি দেশে ফিরবেন।

আহসানুজ্জামান তৌকির পাবনার চাটমোহর পৌর সদরের বালুচর মহল্লার আকরাম হোসেন সাবু-সুলতানা সামিয়া পারভীন দম্পতির ছেলে। দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট তৌকির। তিনি চাটমোহর রাজা চন্দ্রনাথ ও বাবু শম্ভুনাথ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি।

রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা ও অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি সম্পন্ন করেন।

সোনালী/জেআর