ঢাকা | জুলাই ২৭, ২০২৪ - ৬:২২ পূর্বাহ্ন

সাবেক প্রতিমন্ত্রী জিনাতুন নেসা তালুকদার আর নেই

  • আপডেট: Sunday, October 29, 2023 - 9:55 pm

স্টাফ রিপোর্টার: সাবেক প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপিকা জিনাতুন নেসা তালুকদার ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহে……রাজেউন)। রোববার সকাল ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। মৃত্যুকালে তিনি দুই পুত্রসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাক্সক্ষী রেখে যান। মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার বড় ছেলে মাহমুদ হাসান ফয়সল। তিনি জানান, বেশ কয়েকদিন থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন। তিনি এই হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। রোববার সকালে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অধ্যাপিকা জিনাতুন নেসা তালুকদারের পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি বিভিন্ন অসুখে ভুগছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। গত মঙ্গলবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রাজশাহী মহানগরীর মিরেরচক এলাকায় ১৯৪৭ সালের ৯ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন জিনাতুন নেসা তালুকদার। তারা বাবা মৌলভী পারভেজ আলী মিয়া ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী। তার স্বামী অ্যাড. আব্দুল্লাহিল বাকীও ছিলেন একজন আইনজীবী। ১৯৬৩ সালে রাজশাহীর পিএন সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন জিনাতুন নেসা। এরপর কলেজে ভর্তি হন।

কলেজজীবন থেকেই সরাসরি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ১৯৬৯ সালের গণ-আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে কাজ করেন জিনাতুন নেসা। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ছাত্রলীগের একজন নেত্রী হিসেবে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন তিনি। এরপর ১৯৭১ সালের অসহযোগ আন্দোলনের উত্তাল দিনগুলোতে তার ভূমিকার জন্য তৎকালীন সরকারের খাতায় রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যান জিনাতুন নেসা তালুকদার।

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে দেশমাতৃকার ডাকে সাড়া দিয়ে সরাসরি মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। ভারতে গিয়ে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর নেতৃত্বে মহেন্দ্র রায় লেনের বিখ্যাত গোবরা ক্যাম্পে অস্ত্র পরিচালনা ও চিকিৎসা সেবাদানের প্রশিক্ষণ নেন জিনাতুন নেসা। প্রশিক্ষণ শেষে তাকে ৭নং সেক্টরের সাব সেক্টর ৪-এর অধীনে দায়িত্ব দেয়া হয়। আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দেয়া ছাড়াও প্রয়োজনে সরাসরি যুদ্ধ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়।

স্বাধীনতা অর্জনের পরও দেশ ও সমাজসেবায় নিয়োজিত ছিলেন জিনাতুন নেসা। ১৯৭৭ সালে তিনি নওহাটা ডিগ্রি কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন। একইসঙ্গে চালিয়ে যান রাজনীতি ও সমাজ গড়ার কাজ। ১৯৯৬ সালের ৫ জুলাই সংরক্ষিত মহিলা আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন তিনি। ১৯৯৭ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগের উপমন্ত্রী হিসেবে। পরে তিনি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সোমবার বাদ জোহর টিকাপাড়া গোরস্থান সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান শেষে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তাকে হেতেম খাঁ গোরস্থানে দাফন করা হবে।

সোনালী/জেআর