ঢাকা | নভেম্বর ২৭, ২০২৪ - ৪:৩১ পূর্বাহ্ন

সিরাজগঞ্জে পিপিআর রোগে সপ্তাহে ২৫টি ছাগলের মৃত্যু

  • আপডেট: Saturday, October 28, 2023 - 6:00 pm

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জে তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এক সপ্তাহে ঠান্ডাজনিত পিপিআর রোগে প্রায় ২৫টি ছাগলের মৃত্যু হয়েছে। সেই সাথে বিভিন্ন গ্রামে কৃষক এবং গৃহিণীদের পালন করা আরো বিপুল সংখ্যক ছাগল এ রোগে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতেই চিকিসাধীন রয়েছে।

এদিকে জনবল সঙ্কট থাকলেও দশ দিনে এলাকায় প্রায় ৬০ হাজার ছাগলকে পিপিআর রোগের প্রতিষেধক (টিকা) দেবার দাবি করেছেন, তাড়াশ উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা অলিউল ইসলাম। তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের বেত্রাশিন এলাকার বাসিন্দা সাজেদা খাতুন জানান, তাড়াশ প্রাণী সম্পদ দপ্তর ও ভেটনারী হাসপাতাল থেকে তাঁর বাড়ির দুরত্ব মাত্র সাড়ে তিন কিলোমিটার।

তারপরও তার পালন করা ছয়টি ছাগল রোববার পর্যন্ত পিপিআর রোগের কোন প্রতিষেধক (টিকা) পায়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন।

জানা গেছে, হঠাৎ করেই সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে তাড়াশ উপজেলার আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকার কৃষক ও গৃহিনীদের পালন করা কিছু কিছু ছাগল ঠান্ডাজনিত সর্দি এবং ঘন ঘন পাতলা পায়খানায় আক্রান্ত হতে শুরু করে।

যাকে প্রাণী সম্পদ সংশ্লিষ্টরা পিপিআর রোগ বলছেন। আর এ রোগে আক্রান্ত ছাগল গুলো খাবার খেতেও চায়না ফলে আক্রান্তের তিন থেকে চার দিনের মধ্যেই ওই ছাগলগুলো ক্রমান্বয়ে নিস্তেজ হয়ে এক সপ্তাহের মধ্যেই মারা যাচ্ছে।

এ ভাবে এক সপ্তাহে উপজেলার তাড়াশ পৌর এলাকার খোলাবাড়িয়া মহল্লার গৃহিনী মোছা. লাভলী খাতুনের ২ টি, কৃষক ছায়াত আলীর ১ টি, তালম ইউনিয়নের সিলট গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ২ টি, তাড়াশ সদর ইউনিয়নের বৃ-পাঁচান গ্রামের কৃষক বাবুল হোসেনের ২ টি, নুরুল ইসলামের ১ টি, বুলবুল হোসেনের ১ টি, লিটন আলীর ১ টি, আব্দুস সালামের ২ টিসহ বিভিন্ন গ্রামে ২০ টি ছাগল মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মারা যাওয়া বেশির ভাগ ছাগলই উঠতি বয়সি। আর ছাগল গুলো মারা যাওয়ায় তাঁরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ছেন বলে জানিয়েছেন, গৃহিনী লাভলী খাতুন।

অপরদিকে পিপিআর রোগে আক্রান্ত ছাগলের মালিক উলিপুর গ্রামের আব্দুল খালেক, মাঝিড়া গ্রামের রিনি খাতুন জানান, এ রোগে আক্রান্ত তাঁদের ৫ টি ছাগল তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভ্যাটনারি হাসপাতালে নিয়ে গেলেও তেমন কোন উল্লেখযোগ্য চিকিৎসা না দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

যে কারণে তাঁরা আক্রান্ত ছাগল বাঁচাতে স্থানীয় পল্লী প্রাণী চিকিৎকদের স্মরণাপন্ন হয়ে ভিজিট দিয়ে ছাগলের চিকিৎসা করাতে বাধ্য হয়েছেন। আর আক্রান্ত ছাগলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে তিন দিনের ডোজের জন্য বাজার থেকে ছাগল প্রতি প্রায় ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকার ওষুধ কিনতে হয়েছে। তারপরও আশানুরুপ ফল পাননি।

তাড়াশ উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা অলিউল ইসলাম বলেন, আমরা গত মাসের ৩০ তারিখ থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত উপজেলা এলাকায় বিনামূল্যে প্রায় ৬০ হাজার ছাগলকে পিপিআর রোগের প্রতিষেধক (টিকা) দিয়েছি। আমাদের ১১ জন জনবল কাঠামোর এ প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র তিন জন। সে ক্ষেত্রে কিছু বাদ পড়তে পারে। আমাদের জানালে প্রতিষেধকের ব্যবস্থা করা হবে।

তাড়াশ উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর ও ভ্যাটনারী হাসপাতালে প্রাণীর চিকিৎসা ব্যবস্থা অপ্রতুল প্রসঙ্গে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমি বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সোনালী/জেআর