ঢাকা | জুলাই ২৬, ২০২৪ - ৬:০০ অপরাহ্ন

সিরাজগঞ্জে ৬ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

  • আপডেট: Wednesday, October 25, 2023 - 7:00 pm

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জে ঋণ থেকে বাঁচতে মনোতোষ (৩১) নামে এক যুবককে হত্যার অপরাধে ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।

বুধবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির এ রায় দিয়েছেন। দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত যুবকরা হলো, জেলার বেলকুচি উপজেলার খাস সোনামুখী মধ্যপাড়া গ্রামের শ্রী সুজন কুমার সরকার, বিশ্বাস বাড়ি এলাকার রুবেল, বলরামপুর পূর্বপাড়া এলাকার শিপন, একই গ্রামের ইউসুফ আলী, লিটন মণ্ডল ও সড়াতৈল গ্রামের রায়হান সরদার।

দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত রায়হান সরদারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৩৪ ধারায় ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন বিচারক। দণ্ডপ্রাপ্ত ৬ আসামির মধ্যে ৫জন রায় ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন। আসামি শ্রী সুজন কুমার সরকার পলাতক আছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামি রায়হান সরদার ও শিপন মনোতোষের বাবার স-মিলে কাজ করতেন। কাজের সময় আসামি রায়হান সরদার মনোতোষের বাবার কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা ধার নেন। কিছুদিন পর মনোতোষের বাবার স-মিলটি বন্ধ হয়ে গেলে তারা অন্য জায়গায় কাজ করেন। মনোতোষের বাবা পাওনা টাকার জন্য রায়হান সরদারকে চাপ দিলে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য হত্যার পরিকল্পনা করেন।

হত্যার পরিকল্পনার অনুযায়ী আসামি রায়হান সরদার তার সহযোগী শ্রী সুজন কুমার সরকার, রুবেল, শিপন, ইউসুফ আলী ও লিটন মণ্ডলের সাথে পরামর্শ করেন। পরিকল্পনা মোতাবেক ২০১৭ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আসামি শিপনের বাড়িতে পিকনিকের আয়োজন করেন এবং মনোতোষকে দাওয়াত করেন। মনোতোষ আসামি সুজনকে সাথে নিয়ে রাত ৯টার দিকে সুজনের বাড়িতে পিকনিক খেতে আসেন।

খাওয়ার পর সুজন কুমার সরকার, রুবেল, রায়হান সরদার, শিপন, ইউসুফ আলী ও লিটন মণ্ডল মনোতোষকে বেঁধে রেখে তার বাবার নিকট ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। আসামিরা মনোতোষকে বেলকুচি উপজেলার বিশ্বাসবাড়ি হুরা সাগর নদীর উত্তর পাশে নূর নবীর ইউক্যালিপটাস বাগানে নিয়ে যান।

সেখানে তারা মদ ও গাঁজা খান এবং মনোতোষকে পরিকল্পনা করে মদের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বেশি পরিমাণ মদ খাওয়ান। এ সময় ভিকটিম নিস্তেজ হয়ে পড়লে আসামিরা তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পাশের একটি ধুইঞ্চাখেতে কচুরীপানা দিয়ে ঢেকে রাখেন।

পরে তারা মনোতোষের আত্মীয়স্বজনের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। নিহত মনোতোষের চাচাতো ভাই অচিন্ত কুমার সরকার বাদী হয়ে বেলকুচি থানায় মামলা করেন। মামলা চলাকালে ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। সাক্ষ্য শেষে ৬ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন।

সোনালী/জেআর