ঢাকা | মে ৬, ২০২৪ - ৫:৫৮ অপরাহ্ন

ছেলের সুদের টাকা আদায় করতে বৃদ্ধা মায়ের ঘরে তালা

  • আপডেট: Wednesday, October 18, 2023 - 6:32 pm

অনলাইন ডেস্ক: তাঁত ব্যবসায় সুদের কারবারিদের কাছ থেকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা সুদে ধার নেন ইদ্রিস মল্লিক (৫৫)। সেই টাকা সুদাসলে হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ।

সুদের টাকা দিতে না পেরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন ইদ্রিস আলী। আর সেই টাকা আদায়ে ঘরে থাকা ইদ্রিসের বৃদ্ধা মা রমেছা বেগমকে (৯০) জোরপূর্বক বের করে দিয়ে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেয় সুদের কারবারিরা।

ঘটনাটি ঘটেছে পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের তারাবাড়িয়া কারিগরপাড়া গ্রামে। মঙ্গলবার বিকেলে খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তালা ভেঙে ওই বৃদ্ধাকে তাঁর ঘরে তুলে দেন।

জানতে চাইলে বৃদ্ধা রমেছা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ছেলে ইদ্রিস তিনজনের কাছ থেকে সুদে টেকা নিছিলো। সেই টেকা দেয় না। ছাওয়াল কোনে পলাইছে জানি না। খলিল, রইচ আর দুলাল সোমবার সকালে বাড়ি আইসে টেকা চায়।

আমি কইছি ছাওয়ালেক টেকা দিছেও তার কাছে যাও। টেকা যহন দিছেও তহন তো আমার কাছে শোনো নাই। এহন আমার কাছে টেকা চাইচ্ছেও ক্যা। পরে ওরা কয় ঘরের থেনে বাড়াও, ঘরে তালা দেবো। এই কয়া আমাক জোর করে ঘরের থেনে বাইর কইরে দিয়ে তালা দেয়। পরে আমি চিয়েরমেনেক (চেয়ারম্যান) কইছি।’

স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে চরতারাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান খান তাঁর পরিষদের অন্য দুই সদস্যসহ বৃদ্ধার বাড়িতে যান।

এ সময় স্বজন প্রতিবেশীসহ অন্যান্য মানুষের উপস্থিতিতে তালা ভেঙে রমেছা বেগমকে ঘরে তুলে দেন। এ সময় বৃদ্ধাকে কিছু নগদ আর্থিক সহায়তাও দেন চেয়ারম্যান।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল আলীম বলেন, ‘সুদের টাকার জন্য ছেলেকে না পেয়ে তাঁর বৃদ্ধা মাকে ঘর থেকে বের করে তালা দেওয়ার ঘটনাটি জঘন্যতম অমানবিক ঘটনা। সুদের কারবারিদের কারণে অনেক সংসারে অশান্তি বিরাজ করছে। যারা সুদে টাকা নেয় তাদের সচেতন হওয়া দরকার।’

ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, ‘সুদের টাকার জন্য এমন কাজ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমি দ্রুত তালা ভেঙে ঘরে তুলে দিয়েছি। কোনো সমস্যা হলে জানাতে বলেছি। সুদের ব্যবসা গ্রামগঞ্জে এমনভাবে ঢুকেছে, তাদের প্রতিহত করা এখন সময়ের দাবি।’

এ বিষয়ে কথা হয় সুদের কারবারি তারাবাড়িয়া মাদ্রাসাপাড়ার বাসিন্দা খলিল হোসেন, রইচ উদ্দিন ও দুলাল হোসেনের সঙ্গে। তারা সুদে টাকা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।

তাদের দাবি, তাদের কাছ থেকে জমি বন্ধক রেখে ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা নিয়েছেন ইদ্রিস মল্লিক। টাকাও ফেরত দেয় না, জমিও দেয় না। বাধ্য হয়ে ইদ্রিসের ঘরে তালা দিয়েছেন তারা।

সোনালী/জেআর