বহিষ্কার হয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিলেন রাবি ছাত্রলীগ নেতা
অনলাইন ডেস্ক: অর্থের বিনিময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ভর্তি হতে সহায়তা করায় সাময়িক বহিষ্কার হয়েছেন শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র এবং শের-ই-বাংলা হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
গত ২১ সেপ্টেম্বর তাঁর অনার্স শেষ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কিন্তু তিনি অংশ নিতে না পারায় চরমভাবে ভেঙে পড়েছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে হতাশা প্রকাশ করায় বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। ৩০ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে পোস্ট করা স্ট্যাটাসে তিনি সরাসরি আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন।
রাজু আহমেদ তাঁর পোস্টে লিখেছেন, যেই প্রক্সিকাণ্ডে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে, সেই ঘটনার সঠিক তদন্ত হয়নি। বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে খতিয়ে না দেখেই তাঁর ছাত্রত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি নির্দোষ হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি নিরপেক্ষভাবে তদন্তসহ তাঁকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ না দিলে আত্মহত্যা ছাড়া তাঁর কাছে আরও কোনো পথ খোলা থাকবে না।
জানা গেছে, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে আহসান হাবীব নামে এক ছাত্রকে পরীক্ষা ছাড়াই ভর্তি করিয়ে দেওয়ার জন্য তাঁর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন রাবির তিন শিক্ষার্থী। তারা পরীক্ষার আগেই কিছু টাকা নেন। মেধা তালিকায় নাম আসার পরও বাকি টাকা পরিশোধ না করায় ভর্তির পর হাবীবকে অপহরণ করে তাঁর পরিবারের কাছে তিন লাখ টাকা দাবি করেন ওই তিন শিক্ষার্থী। বিষয়টি হাবীবের মা রাবি কর্তৃপক্ষকে জানালে ওই ভর্তিচ্ছুকে উদ্ধার এবং পরে তাঁর ভর্তি বাতিল করা হয়।
একই সঙ্গে তাঁর জবানবন্দির ভিত্তিতে গত ২২ আগস্ট প্রক্সিকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী, শের-ই-বাংলা হল ছাত্রলীগের কর্মী শাকোয়ান সিদ্দিক প্রাঙ্গণ; শহীদ হবিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ও লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র মাহিবুল মমিন সনেট এবং রাজুকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়। সে সময় তাদের নামে মামলাও করে রাবি প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, কোনো শিক্ষার্থী অপরাধ করলে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ঘটনা খতিয়ে না দেখে হঠকারী সিদ্ধান্ত নিলে প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে যেতে পারে। তা ছাড়া শিক্ষার্থীদের একাডেমিক বিষয় বিবেচনায় অভিযোগের দ্রুত সুরাহা প্রয়োজন।
রাবির শের-ই-বাংলা হলের প্রাধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান বলেন, প্রক্সির মাধ্যমে ভর্তি হতে চাওয়া শিক্ষার্থী হাবীব সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অর্থ লেনদেন নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছে, তার ভিত্তিতেই ওই তিনজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। একই সঙ্গে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এখন রাজুকে পরীক্ষায় অংশ নিতে হলে আদালতের নির্দেশনা আনতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, আমরা কোনো শিক্ষার্থীর ক্ষতি চাই না। বহিষ্কার শিক্ষার্থীদের নামে মামলা চলমান থাকায় বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ায় নিষ্পত্তি করতে হবে। আদালতে নির্দোষ প্রমাণ হলেই তারা আবার ক্যাম্পাসে ফিরতে পারবে। তদন্ত কার্যক্রম জোরদার করার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে।
সোনালী/জেআর