ঢাকা | নভেম্বর ২৮, ২০২৪ - ১০:৫১ পূর্বাহ্ন

কথা নেই-বার্তা নেই, হঠাৎ ভিসা নিষেধাজ্ঞা কী কারণে

  • আপডেট: Saturday, September 30, 2023 - 9:00 pm

অনলাইন ডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশে ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আরও স্যাংশন দিতে পারে, এটা তাদের ইচ্ছা। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে তারা কি কারণে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

আজ ভয়েস অব আমেরিকার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ভিডিও সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনাকে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার এটাই প্রশ্ন— কথা নেই, বার্তা নেই; হঠাৎ ভিসা স্যাংশন দিতে চাচ্ছে কী কারণে? আর মানবাধিকারের কথা যদি বলে বা ভোটের অধিকারের কথা যদি বলে… আমরা, আওয়ামী লীগ; আমরাইতো এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে সংগ্রাম করেছি। আমাদের কত মানুষ রক্ত দিয়েছে, এই ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য।

অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন যেন হয়, তার জন্য যতরকম সংস্কার দরকার, সেটা আওয়ামী লীগ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, মানুষকে ভোটের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা…।

‘আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দিবো’— এই স্লোগানও আমার দেয়া। আমি এভাবে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছি। কারণ আমাদের দেশে বেশিরভাগ সময় স্বৈরশাসকরা দেশ শাসন করেছে। তাদের সময় সাধারণ মানুষের ভোট দিতে হয়নি। তারা ভোটের বাক্স ভরে নিয়ে ফলাফল ঘোষণা করে দিয়েছেন। এরই প্রতিবাদে আমরা আন্দোলন, সংগ্রাম করে আজ আমরা নির্বাচন সুষ্ঠু পরিবেশে নিয়ে আসতে পেরেছি। এখন মানুষ তার ভোটের অধিকার সম্পর্কে অনেক সচেতন। সেটা আমরা করেছি।’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক সময় কোনও কাজ ‘অতিরিক্ত’ করতে পারে স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কোন সংস্থা, সেটা র‌্যাব হোক, পুলিশ হোক বা অন্য যে কোনও সংস্থা হোক; তারা অন্যায় করলে আমাদের দেশে সেটার বিচার হয়। কেউ যদি কোনও অন্যায় করে, আমাদের দেশে তার বিচার হয়। এই বিচারে কেউ রেহাই পায় না। অনেক সময় তারা কোনও কাজ অতিরিক্ত করে, করতে পারে। কিন্তু করলে সেটা আমাদের দেশের আইনেই সেটার বিচার হচ্ছে। যেখানে এমন বিচার হচ্ছে, এমন ব্যবস্থা আছে; সেখানে এই স্যাংশনে কী কারণে?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ এ আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, জাতীয় কিংবা স্থানীয় সরকার নির্বাচন; প্রত্যেকটা সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। এসব নির্বাচনে মানুষ তার ভোট দিয়েছে স্বতস্ফূর্তভাবে। এই নির্বাচনগুলো নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেছে, কিন্তু বাস্তবতাটা কী, বাংলাদেশের মানুষ তার ভোটের অধিকার নিয়ে সবসময় সচেতন। কেউ ভোট চুরি করলে তাদের ক্ষমতায় থাকতে দেয় না।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া ভোট চুরি করেছিলেন। সে কিন্তু দেড় মাসও টিকতে পারেনি। ওই বছরের ৩০ মার্চ তাকে জনগণের রুদ্র রোষে পড়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। আবার ২০০৬ সালে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটার তালিকা করেছিল। সেই ভোটার তালিকা দিয়ে নির্বাচন করে সে যখন সরকার গঠনের ঘোষণা দিলো… এরপর জরুরি অবস্থা জারি করা হলো। সেই নির্বাচন বাতিল হয়ে গেলো। কাজেই আমাদের দেশের মানুষ কিন্তু এখন ভোট সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। কাজেই একটা নির্বাচন অবস্থা, সুষ্ঠু হবে— এটা তো আমাদেরই দাবি ছিল। এবং আন্দোলন করে আমরাই সেটা প্রতিষ্ঠিত করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আজ তারা স্যাংশন দিচ্ছে, আরও দেবে; দিতে পারে। এটা তাদের ইচ্ছা। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষের যে অধিকার; তাদের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, তাদের বেঁচে থাকার অধিকার, তাদের শিক্ষা-দীক্ষার অধিকারসহ সব মৌলিক অধিকার আমরা নিশ্চিত করেছি।

২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল, বাংলাদেশ কিন্তু বদলে যাওয়া বাংলাদেশ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আর বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ নেই, এখন মানুষের সেরকম হাহাকার নেই, এমনকি আমাদের যে বেকারত্ব সেটাও কিন্তু কমিয়ে এখন মাত্র তিন শতাংশ। সেটাও তারা কাজ করে খেতে পারেন।’

প্রধানমন্ত্রী আরও দাবি করেন, বাংলাদেশেই এখন অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে, তাই ভিসা স্যাংশন এর ফলে যদি (বাংলাদেশিরা) আমেরিকায় আসতে না পারে, আসবে না। তাতে কিছু যায় আসে না।

সোনালী/জেআর