ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে ভিসা নিষেধাজ্ঞার ভুয়া তালিকা
অনলাইন ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্যক্তিদের বিভ্রান্তিকর বিভিন্ন তালিকা ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
সাবেক ও বর্তমান আমলা, নির্বাচন কমিশনার, বিচারপতি, সরকার, বিরোধী দল, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের নাম থাকা এসব তালিকা নিয়ে কিছু দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা এবং শত শত শেয়ারও হচ্ছে।
তবে এসব তালিকার নির্ভরযোগ্য কোনো উৎসের খোঁজ মিলছে না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তথ্যের সত্যতা যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এসব তালিকাকে ভুয়া চিহ্নিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রও বলছে, নীতিমালা অনুসারে ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ব্যক্তিদের তালিকা তারা প্রকাশ করে না।
তবে এ বিভ্রান্তিকর তালিকার বিষয়ে এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কোনো আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নেয়নি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান বুম বিডি মঙ্গলবার তাদের সাইটে প্রকাশিত এক রিপোর্টে জানায়, গত ২৩ সেপ্টেম্বর ‘ভয়েস বাংলা’ নামে একটি পেজ থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১০ জন বিরোধীদলীয় নেতার নাম উল্লেখ করে দাবি করা হয়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন।
একই দিন ‘লন্ডন বাংলা চ্যানেল’ নামে একটি পেজ থেকে পুলিশের সাবেক ও বর্তমান প্রায় ৯০ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নাম দিয়ে বলা হয়, তাদের নাম ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে।
এ ছাড়া সাবেক ও বর্তমান সরকারি কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশনার, বিচারপতি, সেনা কর্মকর্তা, পুলিশ, রাজনীতিকসহ ৩৫ জনের নামের একটি তালিকাও ফেসবুকে ঘুরতে দেখা গেছে। এ ছাড়া অর্ধশতাধিক সাংবাদিকের নাম দিয়েও একটি তালিকা শেয়ার করতে দেখা গেছে বিভিন্ন ব্যক্তি ও পেজকে।
এসব তালিকার বিষয়ে বুম বিড, ফ্যাক্ট ওয়াচসহ ভুয়া তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, বাংলাদেশে যাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা শুরু হয়েছে তারা নিজে থেকে যদি নিশ্চিত না করেন, তাহলে বাইরের কারও পক্ষে এ সম্পর্কে জানা সম্ভব নয়।
কিন্তু ভাইরাল পোস্টগুলোতে যাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তাদের সবার পক্ষ থেকে এখনও এ-সংক্রান্ত কোনো বিবৃতি পাওয়া যায়নি। সংগত কারণে ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলো মিথ্যা।
গণ্যমাধ্যমে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু এক সাক্ষাৎকারে বলেন, বাংলাদেশের ওপর আরোপ করা যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতির অধীনে যারা নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন, তাদের নাম প্রকাশ করা হবে না। ব্যক্তিগত ভিসা বাতিলসহ ভিসার রেকর্ড মার্কিন আইনের অধীনে গোপন রাখা হয়।
এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার সমকালকে বলেন, ‘যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিটিআরসিকে কোনো বিষয়ে অভিযোগ করে তাহলেই সেই লিংক, পেজ বা কনটেন্ট সরিয়ে ফেলতে সংশ্লিষ্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে অনুরোধ করা হয়।’
পুলিশের সিটিটিসি সাইবার ইউনিটের এডিসি নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি অভিযোগ না করলে এমন বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিজে থেকে কোনো তদন্ত করে না। অভিযোগ পেলে তা যাচাই করে বিটিআরসিকে জানানোসহ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সোনালী/জেআর