বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ: লিটন
স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, শুধুমাত্র পোশাক শিল্প রপ্তানির উপর নির্ভরশীল না থেকে আরো অনন্ত ১০টি আইটেম রপ্তানি করার ক্ষেত্র তৈরির চেষ্টা করছে সরকার। বর্তমানে বাংলদেশ উন্নত বিশ্বেও ওষুধ রপ্তানি করছে। বাংলাদেশ জাহাজ নির্মাণ করছে, এখন হয়তো এই খাতটি বড় হয়নি তবে আগামীতে আরো অনেক বড় জাহাজ তৈরি করবে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ফ্রিল্যান্সিং খাতকেও গুরুত্ব দিয়েছেন। ইতোমধ্যে অনেক ফ্রিল্যান্সার তৈরি হয়েছে দেশে। রাজশাহীতে অনেকে ফ্রিল্যান্সিং করে ডলার আয় করছেন। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে। এভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছেন তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ অডিটোরিয়ামে জাতীয় শ্রমিক লীগ, রাজশাহী জেলা ও মহানগরের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন-এর প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শুরুতে জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা এবং ব্যানার-ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। সম্মেলনে উদ্বোধক ছিলেন জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন মিয়া। সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন যুব মহিলা লীগের সদস্য ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় শ্রমিক লীগ, রাজশাহী মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব ওয়ালী খান।
খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করানোর জন্য দেশি-বিদেশী নানা চক্রান্ত চলছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা তার মধ্যে তো পিতার একটা দৃঢ়তা আছে, আমরা লক্ষ্য করছি একটা একটা করে বাধা তিনি কাটিয়ে আসছেন, বাধা কেটে যাচ্ছে। আমার মনে হয়, বিএনপি যতই বলুক তারা আর পনের দিন পরে বিরামহীন আন্দোলন করবে, এই বিরামহীন আন্দোলন তারা গত ৭ বছর ধরে করছে, এখনো তারা একথাটি কেন বলছে, তাদের বলতে লজ্জা করছে না কেন? তবে এই আন্দোলনে যে সরকার পতন হয় না, অন্তত আওয়ামী লীগ সরকারকে পতন করা যায় না, এটি তাদের বোঝা উচিত ছিল। সে কারণে কারো মধ্যে দ্বিধা রাখবেন না, সবাই জাগ্রত থাকবেন, শেখ হাসিনার ডাকে যা করণীয় করতে হবে।
লিটন বলেন, আমাদের রপ্তানি আয়ের বড় খাত তৈরি পোশাক শিল্প। গার্মেন্টস মালিকেরা চাইলে তাদের শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে পারেন। কিন্তু তারা তা করেন না। সেই মালিকদের রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। আমরা দেখেছি তাদের কাছে অনেক সরকারও ছিল অসহায়। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে দেখলাম দৃঢ়তা, যিনি তাদেরকে ডেকে এনে বলেন, মাসে প্রত্যেক শ্রমিককে নূন্যতম এই নির্দিষ্ট পরিমান মজুরি দিতে হবে, আমার জানামতে বর্তমানে নূন্যতম মজুরি ৮ হাজার ৫০০ টাকা। এটিও যথেষ্ট নয়, আরো বেশি হওয়া দরকার এবং সেখানে যারা চাকরি করেন সেটির নিশ্চয়তাও দরকার।
রাসিক মেয়র বলেন, জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ একটা একটা করে পূরণ করছেন তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আপনাদের দেখতে হবে বাবার সঙ্গে মেয়ের কর্মের যে ধারাটা, যে ধারাবাহিকতা মাঝে ২১ বছরের জন্য ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। জিয়াউর রহমান এসে রাজনীতিকে গণমুখী করার নাম করে লুটপাট করে, হত্যার রাজনীতি করে বাংলাদেশর অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়ে চলে গেছে। তারপরে এরশাদ সাহেবের কথা নাই বললাম। নেত্রী শেখ হাসিনা এসেছিলেন বলেই আজকে বাংলাদেশ এভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।
জাতীয় শ্রমিক লীগ, রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ খানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোহেল, জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান আকন্দ, সহ-সভাপতি অ্যাড. হুমায়ুন কবির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহাম্মদ, দপ্তর সম্পাদক এটিএম ফজলুল হক, মহিলা বিষয়ক প্রমিলা পোদ্দার, কার্যকরী সদস্য আমজাদ আলী খান।
সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষে দ্বিতীয় অধিবেশন জাতীয় শ্রমিক লীগ, রাজশাহী জেলা ও মহানগরের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়।
জাতীয় শ্রমিক লীগ, রাজশাহী মহানগরের সভাপতি পদে মাহাবুব আলম (জি.পি.ও) এবং সাধারণ সম্পাদক পদে আকতার আলী (রেলওয়ে) নির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়া সম্মেলনে সহ-সভাপতি পদে জহুরুল ইসলাম ও সেলিম রেজা বায়রুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রাশেদুজ্জামান রাশেদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আফজাল হোসেনের নাম ঘোষণা করা হয়।
আর জাতীয় শ্রমিক লীগ, রাজশাহী জেলার সভাপতি পদে আব্দুল্লাহ খান নির্বাচিত হয়েছে। আর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন আবু বক্কর। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের নাম ঘোষণা করেন রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
সোনালী/জেআর