ঢাকা | জুলাই ১০, ২০২৫ - ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

দুর্গাপুরে মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সনদে ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ

  • আপডেট: Saturday, September 9, 2023 - 7:59 pm

দুর্গাপুর প্রতিনিধি: দুর্গাপুরে বয়েন উদ্দিন খামারু নামের একজন মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়েও টাকার বিনিময়ে মুক্তিযুদ্ধের জাল সনদ দাখিল করে নিয়মিত ভাতা উত্তোলন ও কোটায় দুই সন্তানের চাকরি নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বয়েন উদ্দিন খামারু উপজেলার যুগিশো তোতারপাড়া গ্রামে মৃত মহসিন খামারুর ছেলে।

এ ঘটনায় রাজশাহী জেলা প্রশাসক, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন একই গ্রামের উপজেলা যুবলীগের ক্রীড়া সম্পাদক আলামিন।

লিখিত অভিযোগে জানা যায়, বয়েন উদ্দিন খামারু ৭১সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়নি। তিনি হঠাৎ করে এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন। টাকার বিনিময়ে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ সংগ্রহ করে মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও তিনি এখন নিয়মিত ভাতা উত্তোলন করেন। এমন কী মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তার দুই সন্তানকে চাকরিও দিয়েছেন।

অভিযোগে বলা হয়, বয়েন উদ্দিন খামারুর এক ভাই তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার ছিলেন। তার পিতা মহসিন খামারু পিচ কমিটির সদস্য ছিলেন।

বয়েন উদ্দিন খামারু মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন কোন মুক্তিযোদ্ধা তা দেখেনি ও গ্রামের লোকজনও জানেন না। এমন কী উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকাতেও তার নাম নেই। বরং তাঁর এক ভাই রাজাকার ও বাবা পিচ কমিটিতে ছিলেন।

এ অভিযোগ অস্বীকার করে বয়েন উদ্দিন খামারু বলেন, আমি ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। আমার কমান্ডার ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ইয়াছিন আলী। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে আমার মুক্তিযোদ্ধার গেজেট পাস হয়। তখন থেকে আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সুবিধা নিচ্ছে। এর আগে আমি সরকারি চাকরি করতাম।

বয়েন খামারু বলেন, আমার মুক্তিযোদ্ধার গেজেট হওয়ার আগেই আমার দুই সন্তানের চাকরি হয়। মেয়েটার ২০১০ সালে ও ছেলের ২০২১ সালে চাকরি হয়েছে। তাদের কোন কোটা লাগেনি। ২৩ সালের মার্চে আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেট পাস হওয়ায় এলাকার কিছু লোক শুক্রতা পূর্বক আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। যা সত্য নয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। হয়তোবা অফিসিয়ালি ভাবে অভিযোগ আসছে। আমি এখনো হাতে পাইনি। অভিযোগ হাতে পেলে বিষয়টা খতিয়ে দেখা হবে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সত্যিই এ রকম খবরে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বুক কেঁপে উঠে। বয়েন খামারু কোন দিনও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। তার এক ভাই ও বাবা রাজাকার ছিলেন।

তিনি অনেকবার মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। আমি কখনো সম্মতি দেইনি। হঠাৎ কীভাবে যেন নয়ছয় করে এবার তার মুক্তিযোদ্ধা গেজেটে নাম এসেছে। এটা খুবই দু:খজনক। এতে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা অপমানিত হয়েছেন।

জানতে চাইলে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, দিনে আমার অফিসে চার থেকে পাঁচশ চিঠি আসে। কোনটা কী মনে রাখাই মুশকিল। শনিবার ছুটির দিন। এই মুর্হূতে বিষয়টি মনে পড়ছে না। অফিস খুললে অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সোনালী/জেআর