ঢাকা | মে ১০, ২০২৫ - ১০:৫৮ পূর্বাহ্ন

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে খাদ্য সংকট, বাড়তে পারে সামাজিক বিশৃঙ্খলা

  • আপডেট: Thursday, September 7, 2023 - 10:00 am

অনলাইন ডেস্ক: কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোয় খাদ্য সংকট থেকে সামাজিক বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে শিবিরগুলোয় অভ্যন্তরীণ অসন্তোষও ছড়িয়ে পড়তে পারে। কেননা রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় জাতিসংঘের খাদ্য সহায়তার ফ্লো কমে গেছে।

এ ছাড়া অনুদানের অর্থ কমে যাওয়ায় কক্সবাজারে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের খাদ্য বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। এতে অনেক রোহিঙ্গা পরিবার দুর্ভোগেও পড়তে পারে।

যার কারণে তারা আরও বেশি অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এজন্য রোহিঙ্গাদের মধ্যে পুষ্টিহীনতাও বাড়তে পারে। এমনকি তাদের জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে মনে করছে সরকার।

সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এরকম আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। সভার কার্যপত্র ঘেঁটে এসব তথ্য জানা গেছে। সভার পর খাদ্য সহায়তা বাড়াতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে।

একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা ও তাদের পেছনে মাসিক ও বাৎসরিক ব্যয় সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনও পাঠানো হয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরে। এদিকে ক্যাম্পগুলোর ভিতরে ও বাইরে রোহিঙ্গারা নানারকম অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।

তাদের মধ্যে বেড়েছে মাদকের ব্যবহারও। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে নিরাপত্তার শঙ্কা বাড়ছে। এমতাবস্থায় রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন জরুরি বলে মনে করছে সরকার। যদিও জাতিসংঘ ও আমেরিকা বলছে, এ মুহূর্তে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো নিরাপদ হবে না।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের যে আন্তর্জাতিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, তা চলতি বছর দুই ধাপে কমানো হয়েছে; যা এখন প্রতি মাসে মাথাপিছু আট ডলারে নেমে এসেছে। সহায়তার এ হার আরও কমার আশঙ্কা করা হচ্ছে। খাদ্য বরাদ্দ কমানোর ফলে রোহিঙ্গাদের সার্বিক দুর্গতি ও অপরাধ-প্রবণতা বাড়বে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

যার একটা বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে পুষ্টি-স্বাস্থ্যসহ সার্বিক জীবনযাত্রায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, খাদ্য সংকট মানুষকে সামাজিক সংকটের দিকে ঠেলে দেয়। রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে হয়তো সেটাই হতে যাচ্ছে। কেননা তারা সহায়তা পাওয়া সত্ত্বেও বাইরে কাজ করতে চায়।

এতে করে তারা ক্যাম্পের বাইরে চলে আসে। ফলে ক্যাম্পের ভিতরে ও বাইরে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটছে। আবার অনেকে ক্যাম্প থেকে পালিয়েও যা”েচ্ছ। এতে করে ওই অঞ্চলে সামাজিক বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। সূত্র জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর পাশাপাশি খাদ্যসহায়তা কমিয়ে দিয়েছে জাতিসংঘও। এ কারণে অর্থ সংকটে পড়েছে রোহিঙ্গারা। তিন মাসের ব্যবধানে ডব্লিউএফপি দুই দফা কমিয়েছে অর্থ বরাদ্দ। চলতি বছরের মার্চে রোহিঙ্গাদের জনপ্রতি মাসিক বরাদ্দ ১২ ডলার থেকে কমিয়ে ১০ ডলার করা হয়।

সর্বশেষ ১ জুন থেকে ওই বরাদ্দ আরও কমিয়ে ৮ ডলার (৮৭০ টাকা) করা হয়েছে। এসব কারণে ক্যাম্পে পুষ্টি-স্বাস্থ্যসহ জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে; যা ওইসব অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদি বিশৃঙ্খলা ডেকে আনতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩ আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। এর মধ্যে ৮ লাখ এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরের কয়েক মাসে। এ পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।

সোনালী/জেআর

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS