ঢাকা | মে ৮, ২০২৫ - ৫:৫২ পূর্বাহ্ন

টানা বর্ষণ || তছনছ বান্দরবান

  • আপডেট: Wednesday, August 9, 2023 - 7:00 am

অনলাইন ডেস্ক: মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ। গত রোববার থেকে নেই বিদ্যুৎ। সড়ক যোগাযোগেও লাগাম। শহরে থইথই পানি, মানুষ ঘরবন্দি।

পাহাড়ের ঢালে যাদের বাস, তাদের মনে ভীতি। অনিন্দ্যসুন্দর বান্দরবান নেই চেনা রূপে। অবিরাম বৃষ্টিতে যেন তছনছ এক জনপদ। টানা চার দিনের প্রবল বৃষ্টিতে থমকে গেছে জীবন।

বান্দরবান শহরের ৬০ শতাংশ প্লাবিত হয়েছে বলে খোদ জেলা প্রশাসনের প্রতিবেদনেই বলা হচ্ছে। ভয়াবহ এ দুর্যোগ মোকাবিলায় মঙ্গলবার দুপুরে বান্দরবান জেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনী জরুরি সভা করেছে।

বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের পানিবন্দি মানুষও আছে দুর্বিষহ যাতনায়। আরও দুই পাহাড়ি জেলা রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িও বিরামহীন বারিধারায় বিপর্যস্ত। পর্যটননগরী কক্সবাজারে একই রকম নাজুক পরিস্থিতি। সেখানকার চার লাখ মানুষ জলের সঙ্গে লড়ছে। বৃহত্তর চট্টগ্রামের পাঁচ জেলায় ডুবে আছে অসংখ্য বাসাবাড়ি, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও কারখানা।

ব্যবসা-বাণিজ্যেও স্থবিরতা। আগামীকাল পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ব্যাহত হচ্ছে বন্দরের কার্যক্রম। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে কোমরপানি।

এর ফলে সেই পথে চলছে না যান। আটকে গেছে শত শত গাড়ি। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার নতুন রেলপথের কিছু অংশও পানিতে ডুবে গেছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় রাঙামাটির সাজেকে আটকা পড়েছেন কয়েকশ পর্যটক।

অন্য উপকূলীয় এলাকায় নদীপাড়ের ঘরবাড়ি ও নিচু সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। কোনো কোনো এলাকায় টানা দু’দিন নেই বিদ্যুৎ। পাহাড়ের পাদদেশের বাসিন্দাদের মাঝে ভর করেছে মৃত্যুভয়।

পাহাড় ধসে পড়তে পারে– এমন আতঙ্কে যে যেভাবে পারছেন ছুটছেন নিরাপদ আশ্রয়ে। মাইকে সতর্কবার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে প্রশাসন। সব মিলিয়ে পাহাড়জুড়ে এখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। হাল এতটাই খারাপ, গতকাল সেনাবাহিনীকে চট্টগ্রাম ও বান্দরবানে বিপর্যয় মোকাবিলায় নামতে হয়েছে।

দিনভর তারা পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার, স্বাস্থ্যসেবা ও ত্রাণের প্যাকেট সরবরাহ করেন। মাঠে কাজ করছে নৌবাহিনী ও বিজিবি। গত দু’দিনে পাহাড়ধস ও পানিতে ডুবে মারা গেছেন ১৪ জন।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, শক্তিশালী মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সাগরে এক সপ্তাহ ধরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখানো হচ্ছে। এবার ভারী বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় বিপদের আভাস পেয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে সব নদীবন্দরকে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ তরিকুল নেওয়াজ কবির বলেন, আকাশের মেঘ ও ভারী বৃষ্টি এবার বৃহত্তর চট্টগ্রাম থেকে সরে উত্তরাঞ্চলের দিকে এগোচ্ছে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে বগুড়ায় ২০৩ মিলিমিটার। আর বান্দরবানে ১২২ মিলিমিটার ও চট্টগ্রামে ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

সোনালী/জেআর

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS