যুবলীগ নেতার কবজি কেটে জেলে গেলেন আ’লীগ নেতা

অনলাইন ডেস্ক: নাটোরে ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠুন আলীর ডান হাতের কবজি কাটার মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোর্তজা আলী বাবলুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
একই মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান ও পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুল, যুবলীগ নেতা সেন্টু আলী ও নাসির উদ্দিনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে তারা পাঁচজন নাটোর অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সদর আমলি) আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। এসময় বিচারক মো. রওশন আলম শুনানি শেষে চারজনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন এবং বাবলুর আবেদন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
নাটোর জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম জানান, দুপুরে নাটোর অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রওশন আলমের আদালতে রমজান, সৈয়দ মোর্তজা আলী বাবলু, সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুল, সেন্টু ও নাসির উদ্দিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন।
এসময় জামিন শুনানি শেষে আদালত রমজান, সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুল এবং যুবলীগ নেতা সেন্টু ও নাসির উদ্দিনের জামিন মঞ্জুর করেন।
অপরদিকে একই মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোর্তজা আলী বাবলুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। অন্য আসামিদের পুলিশ প্রতিবেদন পর্যন্ত অস্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
এ মামলায় আসামিদের পক্ষে জামিনের আবেদন করে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী শাহজাহান কবির।
এসময় বিপুল সংখ্যক আওয়ামীপন্থি আইনজীবী তার পক্ষে দাঁড়ান। আর রাষ্ট্রপক্ষে আদালতে জামিনের বিরোধিতা করেন পুলিশের পরিদর্শক নাসরিন আক্তার।
গত সোমবার (২৪ জুলাই) রাত ১২টার দিকে আহত মিঠুন আলীর ছোট ভাই স্বপ্ন বাদশা বাদী হয়ে নাটোর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শরিফুল ইসলাম রমজানকে প্রধান আসামি, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোর্তজা আলী বাবলু, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুলসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ১০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলা দায়েরের পরপরই পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন শহরের বলারিপাড়ার মো. আশরাফ (৫০) ও মহসিন আলী (৩১), কান্দিভিটা এলাকার ওবায়দুল সরদার (৪০) এবং কানাইখালীর মো. রুমন (২৬) ও মিরপাড়ার নাসির উদ্দিন (২৭)।
এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা নান্নু শেখ এবং স্থানীয় ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিঠুন আলীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এ বিরোধে গত ১৬ এপ্রিল যুবলীগ নেতা মিঠুনসহ তার সমর্থকরা সাবেক কাউন্সিলর নান্নু শেখকে কুপিয়ে জখম করেন। এরপর থেকেই এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।
রোববার (২৩ জুলাই) দিনগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে মিঠুনসহ তার সমর্থকরা বলারীপাড়া এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় রাজার পুকুরপাড়ে মুখোশ পড়া ২০/২৫ জন যুবক মিঠুনের ওপর হামলা করেন।
একই সঙ্গে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তার হাতের কবজি কেটে দেন তারা। এসময় ঠেকাতে গিয়ে আহত হন মিঠুনের সমর্থক আরমান আলী, আব্দুলাহ আল রাব্বি ও বকুল মিয়াসহ চারজন।
পরে মিঠুন আলীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার লালমাটিয়ায় সিটি হাসপাতালের নেওয়া হয় তাকে।
সোনালী/জেআর