রাজশাহীতে মিডিয়া ফ্রন্টলাইনের ১ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত
স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে ‘স্বাস্থ্যসেবায় তথ্য সংগ্রহ ও গবেষণা কেন জরুরি’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গবেষণা ও অনুসন্ধান প্রতিষ্ঠান ‘মিডিয়া ফ্রন্টলাইন-এমএফএল’ এর এক বছর পূর্তি উপলক্ষে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মিডিয়া ফ্রন্টলাইনের রাজশাহী বিভাগীয় সুপারভাইজার সিনিয়র সাংবাদিক শ ম সাজু’র সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর কুমারপাড়াস্থ মিডিয়া ফ্রন্টলাইনের বিভাগীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ-স্বাচিপের জেলা সভাপতি ড. চিন্ময় কান্তি দাস।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব হারুনুর রশীদ, সহ সভাপতি রফিকুল ইসলাম শামীম, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল কালাম মহম্মদ আজাদ ও কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাবের সদস্য হাবিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ড. চিন্ময় কান্তি দাস বলেন, মিডিয়া ফ্রন্টলাইন প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা, রোগপ্রবণতা, স্বাস্থ্যসেবার বিভিন্ন অসঙ্গতি, সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবার মান ও অব্যবস্থাপনা, চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্রে অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় ঔষধ লেখা সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও গবেষণা করে আসছে। এরকম গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের স্থাস্থ্য ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করে দিতে পারে। তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষই এক একজন ডাক্তার। তারা স্বাস্থ্যগত যে কোনো সমস্যায় প্রথমে নিজেরাই ফার্মেসী থেকে ওষুধ কিনে খায়।
তিনি এই ধারণা থেকে সবাইকে বেরিয়ে এসে স্বাস্থ্যগত যে কোন সমস্যায় ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিয়ে বলেন, তা নাহলে ভবিষ্যতে তারা বড় ধরণের স্বাস্থ্যগত সমস্যায় পড়তে পারেন। ডা. চিন্ময় কান্তি দাস অ্যান্টোবায়োটিকের ব্যবহার ও চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন ছাড়া সেবনের বিষয়ে মিডিয়া ফ্রন্টলাইনের গবেষণার প্রশংসা করে বলেন, এ ধরণের গবেষণালব্ধ তথ্য দেশের স্বাস্থ্য সেবায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।
মিডিয়া ফ্রন্টলাইন দেশের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কী ধরণের গবেষণা করতে পারে, সে সর্ম্পকে ধারণা দিয়ে তিনি বলেন, সরকারের একার পক্ষে দেশের স্বাস্থ্যসেবায় গুণগত পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। মিডিয়া ফ্রন্টলাইনের মতো গবেষণা প্রতিষ্ঠান তাদের গবেষণালব্ধ তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সরকারের পাশে দাঁড়াতে পারে। তিনি দেশের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে মিডিয়া ফ্রন্টলাইনের গবেষণা কাজে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন।
অনুষ্ঠানে কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির জেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ হারুনুর রশীদ পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার তুলনা করে বলেন, কেন প্রতি বছর লাখ লাখ রোগী পাশের দেশে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছে, মিডিয়া ফ্রন্টলাইন গবেষণার মাধ্যমে তার প্রকৃত কারণ তুলে ধরলে দেশের স্বাস্থ্যসেবায় ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সমিতির সহ-সভাপতি মিডিয়া ফ্রন্টলাইনের কার্যক্রমের প্রশংসা করে বলেন, কোন কোন চিকিৎসক নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের ফুড সাপ্লিমেন্ট বিনা প্রয়োজনে রোগীর প্রেসক্রিপশনে লিখে অসহায় রোগীকে সেসব সাপ্লিমেন্ট কিনতে বাধ্য করছে। এর ফলে দেশের প্রতিষ্ঠিত ওষুধ কোম্পানীগুলোর বাজার সম্প্রসারণে নানা ধরণের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। সমিতির নেতারা এই বিষয়টি নিয়ে মিডিয়া ফ্রন্টলাইনকে গবেষণা করে সেসব তথ্য উপাত্ত গণমাধ্যমে তুলে ধরার অনুরোধ জানান। তার প্রত্যাশা বিষয়টি নিয়ে মিডিয়া ফ্রন্টলাইন সারাদেশে কাজ করলে নামসর্বস্ব এসব প্রতিষ্ঠানের দৌরাত্ম্য কমে আসবে এবং দেশের ওষুধ শিল্পের বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির নেতারা দেশের স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ শিল্পের বাজার নিয়ে মিডিয়া ফ্রন্টলাইনের গবেষণায় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা নিয়ে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মিডিয়া ফ্রন্টলাইনের নওগাঁর এমআরও কাজী কামাল হোসেন, রাজশাহীর সাদমান সাকিব খান, সাজ্জাদ হোসেন, শাহরিয়ার কবির, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সামিউল আলম, সিরাজগঞ্জের রোকন উদ্দিন, পাবনার হাসিব আলী, নুরুল হক, নাটোরের সুলতান মাহমুদ, জয়পুরহাটের জনি সরকার, বগুড়ার শামসাদ মুর্শিদা সুমা ও শহিদুল ইসলাম।
সোনালী/জেআর