আরো দুটি সরকারি স্কুল পাচ্ছে শিক্ষানগরী
♦ প্রকল্প পরিদর্শন এমপি বাদশার
♦ সারা দেশে ৯টির মধ্যে রাজশাহীতেই দুটি
স্টাফ রিপোর্টার: বর্তমানে রাজশাহী শহরে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে মোট ৬টি। ৬টির মধ্যে সবগুলোই প্রতিষ্ঠিত ১৯৭১ সালের আগে। এরপর শহরে আর কোন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপিত না হলেও বছর দুয়েক আগে দুটি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজকে সরকারি ঘোষণা করা হয়।
তবে বর্তমানে সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করতে দেশের ছয় জেলায় ৯টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। যার মধ্যে শিক্ষানগরী রাজশাহীতেই হবে ১০ তলাবিশিষ্ট নতুন দুটি স্কুল।
ইতিমধ্যেই কাজের সামগ্রিক পরিস্থিতি জানতে আজ সোমবার সকালে সরেজমিন প্রকল্পস্থান দুটি পরিদর্শন করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। এসময় তার সঙ্গে প্রকল্প পরিচালক, জেলা ও থানা প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, রাজশাহী শহরে দুটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য বোয়ালিয়ার অন্তর্গত ছোট বনগ্রাম এবং বড় বনগ্রাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে শুধুমাত্র ছোট বনগ্রাম স্কুলের। চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীতে আয়োজিত জনসভা থেকে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অপরদিকে বড় বনগ্রাম এলাকার স্কুলটির কাজ এখনো শুরু না হলেও পুনঃদরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
রাজশাহীর দুটি ছাড়াও এই প্রকল্পের আওতায় রংপুর, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহর এবং জয়পুরহাট ও শ্রীমঙ্গলেও স্থাপন করা হবে এসব মাধ্যমিক বিদ্যালয়। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে ২০১৮ সালে একনেকে অনুমোদন পায় নয়টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প।
এসব বিদ্যালয়ে থাকবে আধুনিক ভৌত অবকাঠামো সুবিধা ও যুগোপযোগী শিক্ষা সামগ্রী। পর্যাপ্ত সংখ্যক শ্রেণিকক্ষের পাশাপাশি আইসিটি ল্যাব, বিজ্ঞানাগার, লাইব্রেরি, মাল্টিপারপাস হল রুম, প্রধান শিক্ষকের কক্ষ, সহকারি প্রধান শিক্ষকের কক্ষ, অফিস কক্ষ, শিক্ষক কমনরুম, নামাজের কক্ষ, দর্শনার্থী কক্ষ, বিএনসিসি, গার্লস গাইড কক্ষ, প্রাথমিক চিকিৎসা কক্ষ, মিড ডে মিল কক্ষ ও সেমিনার কক্ষ থাকবে বিদ্যালয়গুলোতে। এছাড়া ইন্টারনেট সুবিধাসহ ল্যাপটপ, কম্পিউটার ও কম্পিউটার সামগ্রী, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, বই-পুস্তক, খেলাধুলার সরঞ্জাম, বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র সুবিধার কথাও রয়েছে।
এনিয়ে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, রাজশাহীতে সরকারি মাধ্যমিক স্কুল আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। আমরা আনন্দিত; এখানে দুটি স্কুল হতে চলেছে। গত ১৪ বছরে পরিকল্পিত উন্নয়নে রাজশাহী শহরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চিত্র পাল্টে গেছে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই পেয়েছে উন্নত ও আধুনিক নতুন ভবন। এর মধ্যে এই এলাকায় সরকারি দুটি মাধ্যমিক স্কুল হয়ে গেলে শিক্ষার দিক দিয়ে আরো অনেকাংশে এগিয়ে যাবে আমাদের শিক্ষানগরী রাজশাহী। কাজগুলো যেন দ্রুত শেষ করা যায়, তার জন্য আমি কাজ দুটো তদারকি করবো। আশা করি, সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় অতি দ্রুত স্কুলগুলো নির্মাণের কাজ শেষ হবে।
প্রকল্প পরিচালক রায়হানা তসলিম বলেন, বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহণ করতে হয়েছে। এই প্রক্রিয়াটি অনেক কঠিন। এসব কারণে কাজ শুরুতে কিছুটা দেরি হয়েছে। তবুও আমরা দ্রুততম সময়ে কাজগুলো শুরু করার চেষ্টা করেছি। ২০২৩ সালের জুনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হয়তো কাজগুলো শেষ হবে না। আরো এক বছর বেশি সময় লাগতে পারে।
প্রকল্প পরিদর্শনকালে সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশার সঙ্গে প্রকল্প পরিচালক রায়হানা তসলিম, রাজশাহী জেলা শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাসিম রেজা, উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম, মিজানুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সোনালী/জগদীশ রবিদাস