চাঁপাই, নওগাঁ ও রংপুরে একদিনে বজ্রপাতে সাত মৃত্যু
অনলাইন ডেস্ক: চাঁপাইনবাবগঞ্জে তিন, নওগাঁয় দুই ও রংপুরে একজনসহ গতকাল বজ্রপাতে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছে চারজন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে জমিতে কৃষিকাজ করার সময় দুই কৃষকসহ বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকালে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে তাদের মৃত্যু হয়।
বজ্রপাতে মৃতরা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বাররশিয়া গ্রামের মৃত আবদুর রহমানের ছেলে জহিরুল ইসলাম, গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর পৌরসভার প্রসাদপুর হঠাৎপাড়া মহল্লার আজিজুল হকের ছেলে শরিফুল ইসলাম এবং ভোলাহাট উপজেলার দলদলি ইউনিয়নের চামা মুশরিভুজা গ্রামের আনোয়ার হোসেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, গতকাল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের তেররশিয়া এলাকায় জমিতে কৃষি কাজ করার সময় বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন জহিরুল।
তাকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করার পর তার অবস্থা গুরুতর হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
অন্যদিকে গোমস্তাপুর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান জানান, প্রায় একই সময় গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর পৌর এলাকার প্রসাদপুর হঠাৎপাড়ায় নিজ বাড়িতে অবস্থানের সময় বজ্রপাত হলে শরিফুল ইসলাম জ্ঞান হারান। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ভোলাহাট থানার ওসি সেলিম রেজা জানান, ভোলাহাট উপজেলার চামা-মুশরিভুজা এলাকায় মহানন্দা নদীর তীরে জমিতে কৃষি কাজ করার সময় আনোয়ার হোসেন নামে এক বৃদ্ধ বজ্রপাতে মারা গেছেন।
এদিকে ধামইরহাটে পাওয়ার টিলারে জমি চাষের সময় মোহাম্মদ মমিনুর রহমান (২২) এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি উপজেলার মইশড় গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে। গতকাল দুপুরে উপজেলার মইশড় গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটে। ধামইরহাট থানার ওসি মোজাম্মেল হক কাজী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি জানান, বৃষ্টির মধ্যে বাড়ির পাশে পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করছিল মমিনুর। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এর আগে সকালে পোরশা উপজেলায় পুনর্ভবা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে আবদুল জব্বার (৩০) এক যুবকের মৃত্যু হয়। তিনি উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নের পশ্চিম দোয়ারপাল গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় দুই যুবক আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন- একই গ্রামের মৃত কছিমদ্দীনের ছেলে আবদুল করিম (৩৫) ও নজরুল ইসলামের ছেলে মেহেদী হাসান (২৪)। স্থানীয়রা জানান, সোমবার ভোরে আবদুল জব্বার ও দুই যুবকসহ আরও অনেকে পুনর্ভবা নদীতে মাছ ধরতে যায়। মাছ ধরে বাড়ি ফেরার পথে গোয়ালদহে পৌঁছালে বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর হঠাৎ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।
এ সময় বজ্রপাতে আবদুল জব্বার ঘটনাস্থলেই মারা যান। আহতদের মধ্যে একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্যজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। পোরশা থানার ওসি বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন।
অপরদিকে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় খেতে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে মাবুদ হক (২৮) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মাবুদ হক উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের গোপালপুর বোয়ালিপাড়া গ্রামের জাহিদুল হকের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে স্থানীয় সুকুমারের জমিতে কাজ করতে যান মাবুদ হক। সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টির সঙ্গে সকালে বজ্রপাত শুরু হয়। এ সময় বজ্রপাতে তিনি ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, দামোদরপুর ইউনিয়নে বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
সোনালী/জেআর