ঢাকা | ডিসেম্বর ২২, ২০২৪ - ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন

কোরবানির মাংস: কার স্বাস্থ্যঝুঁকি কত

  • আপডেট: Monday, June 26, 2023 - 1:00 pm

অনলাইন ডেস্ক: বছরের যে কোনো সময়ের তুলনায় স্বাভাবিক কারণে কোরবানি ঈদে অত্যধিক পরিমাণে মাংস খাওয়া হয়; যা ক্ষেত্রবিশেষে কারও কারও জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়।

মাংস উন্নত মানের খাদ্য: গরু ও খাসির মাংসে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালরি। প্রোটিন, চর্বি, কোলেস্টেরল ছাড়াও এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, রিবোফ্লাভিন, পটাশিয়াম, জিংক, আয়রন, ভিটামিন বি-৬, বি-১২।

শরীরের জন্য অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো এসিডগুলো এখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিদ্যমান। শারীরিক সুস্থতার জন্য এসব খাদ্য উপাদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

গরু নাকি খাসির মাংস : গরুর মাংসে রয়েছে বেশি পরিমাণ সম্পৃক্ত চর্বি। খাসির মাংসে তুলনামূলক কম। খাসির মাংসে গরুর মাংসের তুলনায় প্রোটিনের পরিমাণ বেশি; তবে চর্বি এবং কোলেস্টেরল তুলনামূলকভাবে কম।

খাসির মাংসে গরুর মাংসের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণে আয়রন রয়েছে। এ কারণে গরুর মাংসের তুলনায় খাসির মাংস কোনো কোনো রোগীর জন্য নিরাপদ।

লাল মাংসের স্বাস্থ্যঝুঁকি: লাল মাংস গ্রহণের সঙ্গে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং ক্যান্সারের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এসব মাংস গ্রহণের ফলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, রক্তে ইউরিক এসিড বেড়ে যায়। এসব খাদ্যে উচ্চমাত্রার প্রোটিন থাকার কারণে যাঁদের লিভার এবং কিডনি সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জন্যও সমূহ ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।

রান্না করার প্রক্রিয়া ও স্বাস্থ্যঝুঁকি: মাংস রান্না করার প্রক্রিয়া অনেক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে। ঝলসানো গরুর মাংস যেমন কাবাব, বারবিকিউ এগুলো সরাসরি বাতাসের সংস্পর্শে এসে হেটারোসাইক্লিক অ্যামাইনস নামক ভয়ানক যৌগ তৈরি করে।

এটি বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার এবং ডায়াবেটিস তৈরির পেছনে ভূমিকা রাখে। সুতরাং বারবিকিউ, ঝলসানো যে কোনো মাংস, মাছ গ্রহণ করা অনুচিত। লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত মাংস, সসেস স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

মাংস কাদের জন্য ক্ষতিকর: যাঁরা উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, হাই-কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস, কিডনি ফেইলিউর, উচ্চ ইউরিক এসিড, ফ্যাটি লিভার ইত্যাদি রোগে ভুগছেন তাঁদের অবশ্যই লাল মাংস গ্রহণ থেকে যতটা সম্ভব সংযত থাকতে হবে।

হৃদরোগে আক্রান্তদের মাংস গ্রহণের পরিমাণ হতে পারে দিনে সর্বোচ্চ ৫০ গ্রাম। যাঁরা কিডনি ফেইলিউরে আক্রান্ত তাঁদের দিনে সর্বোচ্চ প্রোটিন গ্রহণের সীমা প্রতি কিলোগ্রাম ওজনের জন্য ক্ষেত্রবিশেষে আধা গ্রাম বা তারও কম। সুতরাং অন্যান্য খাদ্যের প্রোটিনের হিসাব বিবেচনায় নিলে তাঁদের ক্ষেত্রে আরও কম মাংস গ্রহণ করা দরকার।

লেখক: মেডিসিন স্পেশালিস্ট ও এন্ডোক্রাইনলোজিস্ট, সিএমএইচ, ঢাকা

সোনালী/জেআর