কোরবানি ঈদ || নাড়ির টানে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ
অনলাইন ডেস্ক: আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। ট্রেন ও বাসে করে বাড়ি ফিরছে অধিকাংশ যাত্রী।
ঈদের সরকারি ছুটি শুরু হতে কয়েকদিন বাকি। বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানে ছুটি শুরু হয়ে গেছে। ফলে ‘কংক্রিটের’ ঢাকা ছেড়ে নাড়ির টানে ছুটতে শুরু করেছে মানুষ।
যাত্রীরা যাতে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছতে পারে, তাই ঈদ যাত্রার ১০ দিন আগ থেকেই আন্তঃনগর ট্রেনের আসন বিক্রি করে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
সড়ক-রেলের পাশাপাশি এই ছুটে চলার চাপ পড়েছে নৌপথেও। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের ঘরমুখীদের চাপ বেশি নৌপথে। পদ্মা সেতু নির্মাণের পর নৌপথে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের হার নেমে আসে অনেকটা শুন্যের কোটায়।
ঢাকার সদরঘাটে গেলেই দেখা যেত, যাত্রীর আশায় সময় গুনছেন লঞ্চের মালিক-শ্রমিকরা। সেই চিত্র পুরো পাল্টে গেছে ঈদকে সামনে রেখে।
শুক্রবার (২৩ জুন) সদরঘাটে দেখা গেছে যাত্রীদের সরব উপস্থিতি। ছুটির দিনে উপচে পড়া ভিড়ে স্বস্তির ছাপ ছিল ঘরমুখীদের চোখেমুখে।
কারণ ভোগান্তি বলতে একেবারেই কিছু ছিল না। লঞ্চগুলোও ছেড়েছে নির্দিষ্ট সময়ে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ) সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার ঢাকা-বরিশাল রুটে তিনটি, ঢাকা-হাতিয়া রুটে দুটি, ঢাকা-ভোলা রুটে দুটিসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে ৬৫টি লঞ্চ সদরঘাট ছেড়ে যায়।
এদিকে, সংশ্লিষ্টরা জানান, স্কুল-কলেজ ছুটি হওয়ায় বৃহস্পতিবার (২২ জুন) থেকে সদরঘাটে যাত্রীর চাপ বেড়েছে। গার্মেন্ট ছুটি হলে চাপ আরও বাড়বে।
যাত্রী টানতে ভাড়াও কম নেয়া হচ্ছে। ফলে অগ্রিম টিকিট বিক্রি প্রায় শেষের দিকে। কিছু কিছু রুটের লঞ্চে ২৯ জুন পর্যন্ত কেবিনের টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।
লঞ্চ মালিক সমিতির মহাসচিব শহিদুল হক ভূঁইয়া বলেন, এবার সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে টিকিটের দাম কম নিচ্ছি। কিছু রুটের অগ্রিম টিকিট প্রায় বিক্রি হয়ে গেছে।
ঢাকা-বরিশাল রুটে চলাচলকারী এমভি মানামী লঞ্চের টিকিট বিক্রেতা জামাল উদ্দিন বলেন, ভাড়া আগের চেয়ে কিছুটা কম রাখা হচ্ছে। যাত্রী বেড়েছে। এই রুটে যাত্রীর সংখ্যা অন্যান্য রুটের চেয়ে কম। আমাদের অগ্রিম টিকিটও কিছু বিক্রি হয়ে গেছে।
ঢাকা-চরফ্যাশন (ভোলা) রুটে চলাচলকারী এমভি টিপু-১৩-এর সুপারভাইজার সোহাগ মাহবুব বলেন, ডেক-কেবিনের টিকিট প্রায় বিক্রি হয়ে গেছে।
আগামী সোমবার বা মঙ্গলবার থেকে যাত্রীর চাপ আরও বাড়বে। আমাদের কেবিনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি প্রায় অনেকটাই শেষ। কিছুটা বাকি আছে।
টিকিট কেনা থেকে শুরু করে যাতায়াত শেষ হওয়া পর্যন্ত ভোগান্তি অনেক কমেছে। এতে বেশ স্বস্তি প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা।
বরিশালগামী রবিউল বলেন, আগে বাড়ি যেতে বেশ ঝামেলা হতো। টিকিট পাওয়া যেত না। এখন সে অবস্থা নেই। ঘাটে এসেই টিকিট পেলাম।
যাত্রীরা জানান, আগের চেয়ে লঞ্চঘাটে ভিড় কমেছে। এখন সেই অবস্থা নেই। স্বস্তি নিয়েই পরিবারের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটাতে বাড়ি যাচ্ছেন। টিকিটের দাম আগের চেয়ে বেশি রাখা হয়নি।
বিআইডব্লিওটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সদরঘাট দপ্তরের যুগ্ম পরিচালক কবির হোসেন বলেন, শুক্রবার ৬৫টি লঞ্চ বিভিন্ন রুটে ছেড়ে গেছে। যাত্রীর চাপ বাড়লে প্রয়োজনে লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানো হবে। আমাদের সব প্রস্তুতি নেয়া আছে।
সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুর রহমান খান বলেন, ঈদে যাত্রীর চাপ বাড়বে। এজন্য নিরাপত্তার সব প্রস্তুতি নিয়েছি। পুলিশ ও নৌপুলিশের পাশাপাশি ঘাট এলাকায় র্যাবের একটি টিম নিয়োজিত রয়েছে।
সোনালী/জেআর