‘আ’লীগ সরকারের সময়ের কোনো নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়নি’
অনলাইন ডেস্ক: আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি উচ্চ মানদণ্ড স্থাপন করতে পেরেছে বলে সংসদে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, তাঁদের সরকারের সময়ের কোনো নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়নি। নির্বাচনে জনগণ যাকে ভোট দিয়েছে সেই নির্বাচিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির আমলে অনুষ্ঠিত ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির মতো বিতর্কিত নির্বাচন কখনও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হয়নি এবং হবেও না।
টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বর্তমানে রাষ্ট্রীয় সফরে সুইজারল্যান্ডে অবস্থান করছেন।
বুধবার সংসদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হলে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
আওয়ামী লীগ দলীয় সদস্য কাজিম উদ্দিন আহম্মেদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনও ক্ষমতা দখল করতে আসেনি বরং জনগণকে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এসেছে, যাতে জনগণ তাদের সরকার বেছে নিতে পারে।
আওয়ামী লীগ জনগণের ম্যান্ডেটের উপর বিশ্বাসী। জনগণ ঠিক করবে কে দেশ চালাবে। এটা জনগণের ক্ষমতা। বর্তমান সরকার জনগণের ক্ষমতা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আওয়ামী লীগ সবসময়ই দেশে ওয়েস্ট মিনিস্টার স্টাইলের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই-সংগ্রাম করছে।’
জাতীয় নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর–এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষককে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘যারাই পর্যবেক্ষক পাঠাতে চায় তারা পাঠাতে পারবে। আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে তখনই সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন কমিশন যাতে স্বাধীনভাবে দায়িত্বপালন করতে পারে সে জন্য সব ধরণের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
আগামী সংসদ নির্বাচন স্বচ্ছ, অবাধ, ভীতিহীন, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য করতে বর্তমান সরকার নির্বাচন কমিশনকে পূর্ণ সহায়তা দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিয়েছে। দেশের জনগণ যাতে তাদের মূল্যবান ভোটাধিকার প্রয়োগ করে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারে সে লক্ষ্যে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের স্বাধীন কর্মকাণ্ডকে এগিয়ে নিতে সরকার সদা প্রস্তুত রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন তাঁর সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী স্বাধীনভাবে কাজ করে যাবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনে যা যা করার তার সবকিছু করবে।’
সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের সংসদ সদস্য মেরিনা জাহানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত তিন যুগ ধরে সংসদে তিনি গণতন্ত্র, আইনের শাসন, জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য নিরলস কাজ করছেন। বাংলাদেশের জনগণই তাঁর শক্তি ও প্রেরণা।
বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে তিনি প্রস্তুত। সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, ধারবাহিকভাবে সরকার পরিচালনার ফলে বাংলাদেশ আজ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে।
রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপের আওতায় ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৫ হাজার ৭০১ গবেষককে ফেলোশিপ প্রদান করা হয়। এতে তাদের ১১৫ কোটি ৫০ লাখ ৫৯ হাজার ৫৫০ টাকা দেওয়া হয়।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র সফরের কথা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মর্যাদা হানিকর কোনো হীন উদ্দেশ্যকে তিনি কখনোই প্রশ্রয় দেবেন না। বক্তব্যের পর তিনি বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টকে পদ্মা সেতুর বাঁধাই করা একটি চিত্রকর্ম উপহার দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছিল তাঁরা তা বুঝতে পেরেছেন। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলো বাংলাদেশের প্রতি তাদের অব্যাহত আস্থা ও সহায়তার পরিচায়ক।
সোনালী/জেআর