ঢাকা | জুন ২, ২০২৫ - ১:৩২ পূর্বাহ্ন

৭ নম্বর ওয়ার্ড || যে কারণে মতিতেই আস্থা জনগণের

  • আপডেট: Thursday, June 8, 2023 - 12:55 am

জগদীশ রবিদাস: রাজশাহী নগরীর গুরুত্বপূর্ণ কিছু এলাকা নিয়ে গঠিত ৭ নম্বর ওয়ার্ড। স্থানীয় প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তি থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের বসবাস এই ওয়ার্ডে। ফলে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এই ওয়ার্ডকে নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে নানান আলোচনা। স্থানীয় পর্যায়েও চলছে ভোটের বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ।

তবে সরেজমিনে ওই ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, সুনির্দিষ্ট ‘কিছু’ কারণে বর্তমান কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির ওপর এবারও আস্থা রাখছেন এলাকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ।

নেতৃত্ব প্রদানে কার্যকর রাজনৈতিক দক্ষতা, করোনা সংকটে নানামুখী পদক্ষেপ, হয়রানি ও বৈষম্যহীন নাগরিক সেবা প্রদান এবং জন-সাধারণের সঙ্গে জীবন্ত যোগাযোগের মতো কিছু বিষয়ের কারণে কাউন্সিলর হিসেবে তারা মতিকেই এগিয়ে রাখছেন।

২০১৮ সালের জুনে হওয়া রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রথমবারের মতো কাউন্সিলর নির্বাচিত হন মতিউর রহমান মতি। জনপ্রতিনিধি হওয়ার অনেক আগে থেকেই এলাকার মানুষের সঙ্গে সু-সম্পর্ক ও তাদের বিপদ-আপদে পাশে থাকার ফলে মাত্র আট মাসের প্রস্তুতিতে তিনি জয়লাভ করেন।

কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর তৎকালীন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশার ‘বিশেষ সহযোগিতায়’ তিনি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম শুরু করেন। এতে খুব অল্প সময়েই বদলে যেতে শুরু করে এক সময়ের উন্নয়ন বঞ্চিত ৭ নম্বর ওয়ার্ড।

রাজশাহী সিটি নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ সম্পন্ন হয় গত ২ জুন। ওইদিন প্রতীক পাওয়ার পরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় নির্বাচনি প্রচারণা। জমতে শুরু করে ভোটের মাঠ। মতিউর রহমানও প্রতীক পেয়েছেন ওইদিন। গত বারের ন্যয় এবারও তার প্রতীক “টিফিন ক্যারিয়ার”। প্রতীক পাওয়ার পরেই তিনি স্থানীয় প্রায় এক হাজার নারী ও কর্মী সমর্থকদের নিয়ে শো ডাউন দিয়েছেন তার এলাকায়।যে “বিশেষ” কারণে তার প্রতি এবারও আস্থা রাখছেন স্থানীয়রা:

ছাত্ররাজনীতির প্রভাব ভোটের মাঠে

মতি জনপ্রতিনিধি হওয়ার আগে স্থানীয় প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। সাবেক ছাত্রনেতা হিসেবে শহরজুড়ে নিজের পূর্ব ‘পরিচিতিকে’ কাজে লাগিয়ে ওই ওয়ার্ডের জনগণকে তিনি বেশ ভালোভাবেই প্রভাবিত করতে পেরেছেন। গত নির্বাচনে তার জয়ের দৃশ্যপট এর প্রমাণ বহন করে। প্রথমবার কাউন্সিলর হওয়ার পর বিভিন্ন উন্নয়নের ক্ষেত্রেও এই বিশেষণের বহিঃপ্রকাশ দারুণভাবে ঘটেছে।

এতে যে কাজগুলো তিনি করতে পেরেছেন বা আগামীতে পারবেন; তা অন্য যেকোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রায় অসম্ভব! তাই এ ধরনের বিশেষ সুবিধা কোনভাবেই হারাতে চান না স্থানীয় এলাকাবাসী। সুতরাং, এবারও তার রাজনৈতিক সক্রিয়তার বিষয়টি ভোটের মাঠে শক্তভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।

করোনা মহামারীতে উন্মুক্ত পদক্ষেপ

২০২০ থেকে ২২ সাল পর্যন্ত অত্যন্ত দাপুটে অবস্থানে ছিল করোনা ভাইরাস। ওই সময়কালে জনপ্রতিনিধি হিসেবে মতিউর রহমানের বিভিন্ন উন্মুক্ত কর্মকাণ্ড আবেগের দাগ কাটে স্থানীয় এলাকাবাসীর মনে। বিনামূল্যে মাস্কসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ, দল-মত নির্বিশেষে মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, নিম্নবিত্তদের নগদ অর্থ প্রদানের মতো বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ওই ওয়ার্ডে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ফলে করোনাকালের সে সময়ে মতির কার্যক্রমও আগামী নির্বাচনে তার পক্ষে জনমত তৈরিতে শক্ত ভূমিকা রাখতে পারে।

নাগরিক সেবা প্রদানে “বৈষম্যহীন” অবস্থান 

যেকোনো নির্বাচন পরবর্তী সময়ে ওই এলাকায় নাগরিক সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে অধিকাংশ জনপ্রতিনিধিদেরই নিজের কর্মী-সমর্থকদের গুরুত্ব দিতে দেখা যায়। এতে সাধারণ নাগরিক ও ভিন্নমতাবলম্বীদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ফলে এর নেগেটিভ প্রভাব পড়ে পরবর্তী নির্বাচনে।

এক্ষেত্রে অত্যন্ত সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন বর্তমান কাউন্সিলর মতিউর রহমান। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর নাগরিক সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বৈষম্য না করায় আগামী নির্বাচনে এই ইস্যুতে কোনো চাপে পড়তে হচ্ছে না তাকে। অতএব, এই বিষয়টিও তার বিজয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

দায়িত্বের বাইরেও জনগণের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগ

গত পাঁচ বছরে কাউন্সিলরের দাপ্তরিক দায়িত্বের বাইরেও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করেছেন মতিউর রহমান মতি। স্থানীয় সূত্রে যতটুকু জানা যায়, যেকোন সময়, যেকোন মানুষের বিপদে-আপদে ছুটে গিয়ে তিনি পাশে দাঁড়িয়েছেন। কখনো কারো সঙ্গে খারাপ আচরণ, হয়রানি বা প্রভাব বিস্তারের মতো কোনো অভিযোগ ওঠেনি তার বিরুদ্ধে। স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এদিক দিয়েও ভালো অবস্থানে আছেন টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকের মতিউর রহমান মতি।নারী ভোটার

আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩০টি ওয়ার্ডেই নারীদের ভোটকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। পুরুষদের ভোট অনেক ক্ষেত্রে বিভক্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও নারীদের ক্ষেত্রে এমন সুযোগ খুব কম থাকার নজির আছে। সুতরাং, একটি নির্দিষ্ট এলাকায় কোনো প্রার্থীর প্রতি সংখ্যাগরিষ্ঠ নারীদের পূর্ণ সমর্থন থাকলে ভোটের পজেটিভ ফলাফলের ক্ষেত্রে খুব বেগ পেতে হয় না।

এ নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর এ সময় পর্যন্ত প্রচারণার ক্ষেত্রে মতিউর রহমান মতির সঙ্গে স্থানীয় নারী ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি ও একক সমর্থন তাকে এদিক দিয়েও এগিয়ে রাখছে। প্রচারণায় মতির সঙ্গে নারীসহ পুরুষ, তরুণ ও যুব ভোটারদেরও উপস্থিতিও সন্তোষজন। সুতরাং, সবমিলিয়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সংখ্যাগরিষ্ঠ নারী ভোটও মতিউর রহমান মতিই পেতে পারেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মোট ভোটার ৯৮৬৬ জন। আগামী ২১ জুন এই ওয়ার্ডসহ ৩০টি ওয়ার্ডে একযোগে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

সোনালী/জেআর

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS