ঢাকা | মে ১৬, ২০২৫ - ১২:২১ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

রাবির ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি: ৩ লাখ টাকায় চুক্তি করতেন ছাত্রলীগ নেতা শান্ত

  • আপডেট: Wednesday, May 31, 2023 - 10:49 pm

অনলাইন ডেস্ক: রাজশাহীবিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিয়ে চান্স পাইয়ে দেওয়ার জন্য পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে ৩ লাখ টাকার চুক্তি করতেন ছাত্রলীগ নেতা হাসিবুল ইসলাম শান্ত।

এরপর তার ভাড়া করা লোক দিয়ে পরীক্ষা দেওয়াতেন। এভাবেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে টাকার মাধ্যমে প্রক্সি দেওয়ার সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন শান্ত। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক এবং নাটোর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

মঙ্গলবার রাবির ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে এসে সাতজন আটক হন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা শান্তর নাম বললে রাতে তাকে নগরীর কাঁটাখালী এলাকা থেকে আটক করে মহানগর পুলিশ। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এদিকে, রাবির ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে এসে শেখ আবু হানিফ নামের এক উপজেলা সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনি বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় কর্মরত এবং ৩৮তম বিসিএসে নন-ক্যাডার কর্মকর্তা। তার বাড়ি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলায়। তিনি দিনাজপুরের রুপম সরকার নামে একজনের হয়ে প্রক্সি দিতে এসেছিলেন।

ছাত্রলীগ নেতা শান্ত বিভিন্ন চাকরি এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জালিয়াত চক্রের সদস্য। তার ভাড়াটিয়া হয়ে অনেকেই প্রক্সি দেন। তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত বলে ক্যাম্পাসে গুঞ্জন ছিল। তবে তিনি এর আগে আটক হননি। এবার প্রশাসনের অতিরিক্ত নজরদারির কারণে ধরা পড়েন তিনি।

রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, ‘হাসিবুল ইসলাম শান্ত প্রতিটি প্রক্সির জন্য ৩ লাখ টাকা নিতেন। এরপর তার লোক দিয়ে পরীক্ষা দিতেন। তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

পুলিশের চার সদস্যের একটি দল জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আদালতে তাকে রিমান্ডে চাওয়া হবে। প্রক্সিকাণ্ডে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূলহোতাকে ধরতে পুলিশ কাজ করছে।

এদিকে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে ১৬ জনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছে রাবি প্রশাসন। তাদের মধ্যে শান্ত ও আবু হানিফসহ রাবি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী রয়েছেন।

নগরীর মতিহার ও চন্দ্রিমা থানায় মামলাগুলো দায়ের করে রাবি প্রশাসন। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিজয় কুমার বসাক।

আসামিদের বেশিরভাগই হয় প্রক্সি ভাড়া করেছেন, নয়তো তাদের পক্ষে অবৈধভাবে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, মামলার আসামি ইসরাফিল হোসাইন ৭০ হাজার টাকা চুক্তিতে মূল পরীক্ষার্থী জাহিদ আল হাসান সিয়ামের হয়ে প্রক্সি দেন। ইসরাফিলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন থেকে আটক করা হয়।

আসামি এনামুল হকের সঙ্গে ৫০ হাজার টাকায় চুক্তি করেন শান্ত। তিনি মূল পরীক্ষার্থী তানভীর আহমেদের হয়ে প্রক্সি দেন। তানভীরকেও আটক করা হয়।

গ্রেপ্তার শেখ আবু হানিফ বরিশালের গৌরনদী উপজেলা সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা। তিনি রূপম সরকারের হয়ে পরীক্ষায় অংশ নেন। গ্রেপ্তার আব্দুর রাকিবকে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রবেশপত্রের ছবি পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রক্সি দেওয়ার জন্য চুক্তি করেন শান্ত।

গ্রেপ্তার কাওসার আলী বিদ্যুৎ ৬০ হাজার টাকা চুক্তিতে মূল পরীক্ষার্থী মাইনুল ইসলামের হয়ে পরীক্ষায় অংশ নেন। মাইনুলকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শান্ত সম্পর্কে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ছাত্রলীগ বৃহৎ সংগঠন। এখানে দু’চারজন অপকর্মে যুক্ত থাকতেই পারে। এদের দায় ছাত্রলীগ নেবে না। শান্তর অপরাধ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোনালী/জেআর

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS